হকের পথে চললে বাধা আসবেই : জামায়াত আমির

‘ইসলামী আন্দোলনকে বিজয়ী করার জন্য আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী আর্থিক কোরবানি করতে হবে। যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতিতে ধৈর্য ধারণ করতে হবে এবং বুদ্ধিমত্তা ও সাহসের সাথে সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে হবে।’

নয়া দিগন্ত অনলাইন
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার অধিবেশনে ডা: শফিকুর রহমান
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার অধিবেশনে ডা: শফিকুর রহমান |নয়া দিগন্ত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা: শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘জামায়াতে ইসলামী ১৯৪১ সালে কার্যক্রম শুরুর পর থেকে অনেক বাধার মুখোমুখি হয়েছে, এখনো হচ্ছে। হকের পথে চললে বাধা আসবেই।’

তিনি বলেন, ‘রাসূল সা:-এর প্রতি সাহাবায়ে কেরামের শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও আনুগত্য প্রশ্নাতীত ছিল। তারা আল্লাহর ওয়াস্তে রাসূল সা:-এর প্রতি সর্বোচ্চ কোরবানির নজরানা পেশ করেছেন।’

শনিবার (২৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকার মগবাজারে আল-ফালাহ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সমাপনী অধিবেশনে এসব কথা বলেন তিনি।

জামায়াত আমির বলেন, ‘আল্লাহ তায়ালা জামায়াতে ইসলামীকে বর্তমান অবস্থায় পৌঁছাতে বিশেষভাবে সাহায্য করেছেন। এ জন্য মহান আল্লাহর প্রতি অশেষ শুকরিয়া আদায় ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’

তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন ফেতনা-ফ্যাসাদের বিষয়ে আল্লাহর বিধান ও রাসূল সা:-এর সুন্নাতের আলোকে সাহাবায়ে কেরাম যে ভূমিকা পালন করেছেন আমাদেরকে সে নীতি, পদ্ধতি ও ঐতিহ্য অনুসরণ করে চলতে হবে। আল কোরআন তেলাওয়াত বিশুদ্ধভাবে শেখার ব্যাপারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। কোরআন মেনে চলার ব্যাপারে এটাই প্রথম পদক্ষেপ।’

জামায়াত আমির বলেন, ‘পারস্পরিক সম্প্রতি ও দায়িত্ববোধের ব্যাপারে সর্বোচ্চ সচেতন থাকতে হবে। আমাদের সবক্ষেত্রেই দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের জন্য সুদ, ঘুষসহ যা হারাম করেছেন তা বর্জন করতে হবে। বিভিন্ন বিষয়ে বক্তব্য দেয়ার ব্যাপারে কোনো কোনো সময় কেউ কেউ সংগঠন ও আন্দোলনের প্রতিষ্ঠিত নীতি ও পদ্ধতির পরিপন্থি ভূমিকা পালন করেন। তাদেরকে সতর্ক ও সাবধান হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। খলিফাতুল মুসলিমীন হযরত ওমর রা:, হযরত খালিদ ইবনে ওয়ালিদের রা: ব্যাপারে যে সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন, তা থেকে আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করে চলতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘দুনিয়ার সব ইসলামী আন্দোলন ও সংগঠন বাংলাদেশের ইসলামী আন্দোলনের দিকে গভীর আবেগ ও আস্থার সাথে তাকিয়ে আছে। আমাদের এ বিষয়ে সতর্ক থেকেই সামনে এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তি হলো ইসলামী নীতি ও আদর্শ। আমাদের নৈতিকতার বন্ধন যেন কখনো শিথিল না হয় সেদিকে নজর দিতে হবে। ভালো ও নেক কাজের ব্যাপারে আমরা প্রতিযোগিতা করব। খারাপ কাজ থেকে সবসময়ই দূরে থাকব।’

জামায়াত আমির বলেন, ‘ইসলামী আন্দোলনকে বিজয়ী করার জন্য আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী আর্থিক কোরবানি করতে হবে। যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতিতে ধৈর্য ধারণ করতে হবে এবং বুদ্ধিমত্তা ও সাহসের সাথে সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে হবে।’

সমাপনী বক্তব্য শেষে জামায়াত আমির সবাইকে নিয়ে দেশ ও জাতির সার্বিক মুক্তি ও কল্যাণের জন্য আল্লাহর কাছে কান্নাজড়িত কণ্ঠে দোয়া করেন।

মজলিসে শূরার অধিবেশনে জামায়াত আমিরের পরিচালনায় প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার নির্বাচিত সদস্যরা শপথগ্রহণ করেন। এছাড়া এ টি এম আজহারুল ইসলাম কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির হিসেবে শপথগ্রহণ করেন।

জামায়াত আমির মজলিসে শূরার সাথে পরামর্শ করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত বিগত সেশনে যিনি যে দায়িত্বে ছিলেন সেই দায়িত্ব পালনের জন্য নির্দেশনা দেন।