‘দেশের শিক্ষা-সংস্কৃতি, সমাজনীতি, অর্থনীতি, জনপ্রশাসন, বিচারবিভাগ ও সংসদসহ রাষ্ট্রের সকল অবকাঠামোকে আল্লাহর দেয়া বিধান অনুযায়ী ঢেলে সাজাতে পারলেই ন্যায়-ইনসাফের ভিত্তিতে সমৃদ্ধ নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা, গণমানুষের কল্যাণ ও মুক্তি অর্জন সম্ভব।’ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
আজ সোমবার রাজধানীর কুর্মিটোলা আবাসন ক্যাম্পে শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সমাবেশে তিনি একথা বলেন।
বিশিষ্ট চিকিৎসক অধ্যাপক ডা: খয়বর আলীর সভাপতিত্বে ও জোবায়ের হোসাইন রাজনের পরিচালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ঢাকা-১৬ সংসদীয় আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী কর্নেল (অব) আব্দুল বাতেন ও ইসলামী ইন্টারন্যাশন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো: নাসির উদ্দীন।
সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘অপার সম্ভাবনার দেশ আমাদের এ প্রিয় জন্মভূমি। নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সবুজের সমারোহে পরিবেষ্টিত আমাদের এ বাংলাদেশ। তাই এদেশকে পর্যটনের দেশে পরিণত করা খুবই সম্ভব। মূলত, আমাদের দেশের মানুষ অতি সহজ-সরল। তারা আত্মসম্মান নিয়ে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের মাধ্যমে মিলেমিশে বাঁচতে চান। কিন্তু কিছু অসৎ ব্যক্তি ও একশ্রেণির রাজনৈতিক উচ্চাভিলাসীদের কারণে দেশের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। তারা লাগামহীন দুর্নীতি, লুটপাট, চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজীর মাধ্যমে অগাধ বিত্ত-বৈভব কুক্ষিগত করেছে। দেশের সিংহভাগ মানুষ দারিদ্রসীমার মধ্যে বাস করলে এদের জীবন খুবই জৌলুসপূর্ণ। তাই এ অশুভ বৃত্ত থেকে দেশ ও জাতিকে মুক্ত করতে হলে দেশে একটা ইতিবাচক পরিবর্তন দরকার।’ এসময় তিনি দেশকে অশাসন-দুঃশাসন, দুর্নীতি ও ঘুষমুক্ত করতে সকলকে ময়দানে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, প্রচলিত আইন ও সংবিধান অনুযায়ী দেশের সকল নাগরিক সমান মর্যাদার। তাই কেউ বস্তিতে, কেউ খোলা আকাশের নিচে, আবার কেউ বিলাস বহুল প্রাসাদে ভোগ-ফূর্তিতে মুক্ত থাকবে এমন বাংলাদেশ আমরা চাই না। মূলত, স্বার্থন্বেষী মহল নিজেরাই বস্তিতে আগুন দেয়, আবার নিজেরাই ত্রাণ দেয়ার জন্য এগিয়ে আসে। আগুন দিয়ে তারা বস্তিবাসীকে বাস্তুচ্যুত করে। আবার টাকা নিয়ে আবার বস্তিতেই পুনর্বাসন করা হয়। তাদের এমন দ্বিচারিতার কারণেই দেশে সুশাসন ও শান্তি ফিরে আসছে না।’
সেলিম উদ্দিন জামায়াতে ইসলামীর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমরা এমন এক ইনসাফপূর্ণ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে চাই যেখানে সকল মানুষের সমান অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত হবে। দেশে কোনো মানুষ বস্তিতে থাকবে না বরং তাদেরকে সম্মানজনকভাবে পুনর্বাসন করার জন্য রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় বড় বড় ইমারত নির্মাণ করে তাদের জন্য উম্মুক্ত করে দেয়া হবে।’ তিনি সে কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য আগামী নির্বাচনে সারাদেশে জামায়াত প্রার্থীদের নির্বাচিত করার আহ্বান জানান।
মহানগর আমির বলেন, ‘এদেশের মানুষ আর অপশাসন-দুঃশাসন ও স্বৈরাচারি-ফ্যাসিবাদী শাসনে ফিরে যেতে চায় না। কারণ, তারা স্বাধীনতার পর সুশাসন ও জনগণের ভাগের পরিবর্তের নামে লুটেরাদের লুটপাট ও লাগামহীন জুলুমবাজী দেখছে। তাই তারা এখন পরিবর্তন চায়। দেশের মানুষ এখন আর পুরাতন প্রতীকে ভোট দিয়ে নতুন করে প্রতারিত হতে চান না। কারণ, তারা উপলব্ধি করতে পেরেছে যে, অতীতের শাসকরা জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তনের কথা বলে নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তন করে নিয়েছে। তাই তারা এখন দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের অনুকূলে গণজোয়ার সৃষ্টি নতুন বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকারে শরীক হতে চায়।’
তিনি দেশকে ক্ষুধা, দারিদ্র, দুর্নীতি ও ঘুষ করে করে বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য সকলকে দাঁড়িপাল্লার বিজয় নিশ্চিত করতে ময়দানে আপোষহীন থাকার আহ্বান জানান।



