ড. আব্দুল মান্নান

জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা দ্রুত বিচার আইনে নিষ্পত্তি

‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল থাকলেও মামলা দীর্ঘ সূত্রিতার কারণে ভুক্তভোগী ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিচারের নামে কালক্ষেপণ বন্ধ করা হবে।’

নয়া দিগন্ত অনলাইন

Location :

Dhaka City
ড. আব্দুল মান্নান
ড. আব্দুল মান্নান |নয়া দিগন্ত

‘জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা দ্রুত বিচার আইনে নিষ্পত্তি করবে’ উল্লেখ করে ঢাকা-৬ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ড. আব্দুল মান্নান বলেছেন, ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল থাকলেও মামলা দীর্ঘ সূত্রিতার কারণে ভুক্তভোগী ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিচারের নামে কালক্ষেপণ বন্ধ করা হবে।’

মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর সদরঘাটে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কোতায়ালী থানার উদ্যোগে ঢাকা-৬ আসনে নারীদের সাথে নির্বাচনী উঠান বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. আব্দুল মান্নান এসময় বলেন, ‘ধর্ষণের ঘটনায় যেসব মামলা যথাযথ তথ্য-প্রমাণ রয়েছে এসব মামলা ৩০ দিনের মধ্যে শেষ করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধে সামাজিকভাবে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘মোটিভেশনাল প্রশিক্ষণ’ প্রদান করা হবে। যেখানে নারী ও শিশু নির্যাতন আইন সম্পর্কে প্রতিটি মানুষ জানতে পারবে। আইন জানা থাকলে কেউ অপরাধ করতে সাহস পাবে না। ফলে অপরাধের প্রবণতা কমতে থাকবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশ গড়তে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে নারী-পুরুষ সকলে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে।’

ড. মান্নান বলেন, ‘জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীদের ঘরে বন্দি করে রাখা ইসলামের নীতিতেও নাই, জামায়াতে ইসলামীর নীতিতেও নাই। স্বাধীনতা সংগ্রাম মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে বাংলাদেশের ইতিহাসের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে এদেশের নারী সমাজের রক্ত-ঘাম লেগে আছে। নারীদের অবদান অনস্বীকার্য। তাই নারী সমাজকে বাদ দিয়ে উন্নয়ন-অগ্রযাত্রা সম্ভব নয়। নারীদের ঘরে বন্দি নয় বরং জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে নারীদের যোগ্যতা অনুযায়ী তাদেরকে মূল্যায়ন করা হবে; তাদের জন্য নিরাপদ কর্মক্ষেত্র গড়ে তুলবে।’

ঢাকা -৬ আসনকে একটি নিরাপদ নগরী হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করে ড. মান্নান বলেন, ‘আগামীতে জনগণ তাকে নির্বাচিত করলে তিনি ঢাকা-৬ সংসদীয় এলাকাকে সন্ত্রাস-চাঁদাবাজ-দুর্নীতিমুক্ত করে জনগণকে একটি নিরাপদ ও বাসযোগ্য মানবিক এলাকা উপহার দেবেন। জনভোগান্তি দূরীকরণে নিরবিচ্ছিন্ন গ্যাস-বিদুৎ ও পানি সরবরাহের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবা জনগণের দৌড়গৌড়ে পৌঁছাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার পাশাপাশি শিশুদের মেধা বিকাশে খেলাধুলা ও সুস্থ বিনোদনের আয়োজন করা হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘মাদকমুক্ত করতে যুব সমাজের জন্য খেলাধুলা ও শরীর চর্চার জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে ব্যবস্থা করা হবে।’

বুড়িগঙ্গাকে দখল ও দূষণ মুক্ত করে ঢাকাবাসীর জন্য একটি বাসযোগ্য নিরাপদ নগরী গড়ে তুলবেন। ঢাকা-৬ সংসদীয় এলাকাকে নতুন বাংলাদেশের মডেল হিসেবে গড়ে তুলতে স্থানীয়দের জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে এগিয়ে আসতে তিনি আহ্বান জানিয়ে বলেন, জনগণকে একটি নিরাপদ ও বাসযোগ্য মানবিক শহর উপহার দেওয়াই জামায়াতে ইসলামীর অঙ্গীকার।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শূরা সদস্য ও কোতায়ালী থানা আমির মো: মতিউর রহমানের সভাপতিত্বে এবং থানা কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আব্দুর রাজ্জাকের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৩৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী সামছুল হক খোকন।

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- থানা কর্মপরিষদ সদস্য যথাক্রমে আবুবকর সিদ্দিক, আব্দুল জব্বার, আশরাফুজ্জামান প্রমুখ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আ ফ ম আইউব, মো: মাহবুবুর রহমান, শামীমুল ইসলামসহ স্থানীয় বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতারা।

এদিকে ঢাকা-৫ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মোহাম্মদ কামাল হোসেন মঙ্গলবার নিজের নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন শেষে শিক্ষকদের সাথে মতবিনিময় করেন। এদিন সকালে সায়দাবাদ এলাকার হলি সোল কিন্ডারগার্টেন স্কুল পরিদর্শন পরবর্তী শিক্ষকদের সাথে মতবিনিময় করেন। এসময় স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা উপস্থিত ছিলেন।

পরে স্থানীয় রিজাউল করিম চৌধুরী (আরকে চৌধুরী) কলেজ পরিদর্শন শেষে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় করেন।

মোহাম্মদ কামাল হোসেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠা হচ্ছে এমন এক ইন্ডাস্ট্রি যেখান থেকে শিক্ষিত জাতি তৈরি হয়। যেই জাতি যতবেশি শিক্ষিত সেই জাতি ততবেশি উন্নত। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে উন্নত করার পরবর্তীতে বিগত সময়ে যারা যখন ক্ষমতায় বসেছে তারাই শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। শিক্ষাথীদের হাতে কলম তুলে না দিয়ে অস্ত্র আর মাদক তুলে দেয়া হয়েছে। শিক্ষা নীতিকে দলীয় নীতিতে পরিণত করা হয়েছে। জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে নৈতিক ও আদর্শিক মানুষ গড়ার লক্ষ্যে ইসলামী শিক্ষা নীতির আলোকে একটি যুগপযোগী আধুনিক বিজ্ঞান সম্মত শিক্ষা নীতি প্রণয়ন করা হবে। শিক্ষকদের জীবনমান উন্নয়নে শিক্ষক সমাজের সকল যৌক্তিক দাবি পূরণে কাজ করবে জামায়াতে ইসলামী।

তিনি উপস্থিত শিক্ষকদের আসন্ন নির্বাচনে ভোটগ্রহণের দায়িত্বে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার আহ্বান জানান।

এর আগে, ঢাকা-৪ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন, নির্বাচনী কেন্দ্র পরিচালকদের সাথে এক মতবিনিময় সভা করেন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিনের মজলিসে শূরা সদস্য ও যাত্রাবাড়ী দক্ষিণ থানা আমির নওশেদ আলম ফারুকের সভাপতিত্বে এবং থানা সেক্রেটারি মুহাম্মদ মতিউর রহমান খানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় নির্বাচনী কেন্দ্র পরিচালক এবং থানার বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতারা উপস্থিত ছিলেন।