জাতীয় দলের বাইরে সাকিব, ক্রীড়া উপদেষ্টার সাথে পাল্টাপাল্টি পোস্টে নতুন বিতর্ক

একজনকে পুনর্বাসন না করায় সহস্র গালি দিয়েছেন আপনারা আমাকে। বাট আই ওয়াজ রাইট। এন্ড অব দ্য ডিসকাশন।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
সাকিব আল হাসান ও উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ
সাকিব আল হাসান ও উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ |সংগৃহীত

নিজের বক্তব্য ও অবস্থানের কারণে আবারো বিতর্কে জড়ালেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেয়া এক পোস্টকে কেন্দ্র করে জাতীয় দল থেকে আরো দূরে সরে গেলেন তিনি। অনেকেই মনে করছেন, হয়তো দেশের জার্সিতে আর কখনোই দেখা যাবে না এই অলরাউন্ডারকে।

গত বছর আগস্টে ভারতের বিপক্ষে সর্বশেষ জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নামেন সাকিব। এরপর থেকে তিনি দলের বাইরে রয়েছেন। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত সাকিব নিজের ফেসবুক পেইজে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানান। পোস্টে তিনি লেখেন, ‘শুভ জন্মদিন আপা’ এবং সাথে যুক্ত করেন হাসিনার সাথে তোলা একটি ছবি।

সাকিবের এই পোস্ট ভালোভাবে নেননি বর্তমান ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ, যিনি শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক হিসেবে পরিচিত। সরাসরি সাকিবের নাম উল্লেখ না করলেও, আসিফ মাহমুদের ফেসবুক পোস্টে ইঙ্গিত স্পষ্ট। তিনি লেখেন, ‘একজনকে পুনর্বাসন না করায় সহস্র গালি দিয়েছেন আপনারা আমাকে। বাট আই ওয়াজ রাইট। এন্ড অব দ্য ডিসকাশন।’

এই পোস্টের জবাবে সাকিবও পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানান। আরেকটি পোস্টে তিনি লেখেন, ‘যাক, শেষমেষ কেউ একজন স্বীকার করে নিলেন যে তার জন্য আমার আর বাংলাদেশের জার্সি গায়ে দেয়া হলো না, বাংলাদেশের জন্য খেলতে পারলাম না! ফিরবো হয়তো কোনো দিন আপন মাতৃভূমিতে, ভালোবাসি বাংলাদেশ।’

সাকিবের এই মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই তাকে ‘স্বৈরাচারের দোসর’ ও ‘দালাল’ বলে আখ্যায়িত করছেন। তার পোস্টে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অসংখ্য ব্যবহারকারী।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত সাকিবকে সম্প্রতি বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে দেখা গেছে। তার রাজনৈতিক অবস্থান ও কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।

অভিযোগ রয়েছে, নিজের কৃতকর্মের জন্য কোনো অনুশোচনা নেই সাকিবের। দেশের মানুষের ক্ষোভকেও তিনি উপেক্ষা করছেন।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে বিতর্কিত জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিটে মাগুরা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সাকিব। তবে মাত্র সাত মাসের মাথায় তার সংসদ সদস্য পদ শেষ হয়ে যায়। গত বছর ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের পর থেকে তিনি দেশে ফেরেননি।

এছাড়া জুলাই অভ্যুত্থানে এক গার্মেন্টসকর্মী হত্যা মামলায় সাকিবকে আসামি করা হয়েছে। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে আর্থিক কেলেঙ্কারির একাধিক অভিযোগে তদন্ত চলছে। রয়েছে গ্রেফতারি পরোয়ানাও।