খন্দকার মোশাররফ

ডিসেম্বরে নির্বাচন দিলে সরকার সসম্মানে বিদায় নিতে পারবে

‘অন্তর্বর্তী সরকারকে তো একটা সময় বিদায় নিতে হবেই। আমরা মনে করি, ডিসেম্বরের মধ্যে বিদায় নিলে সসম্মানেই বিদায় নেয়া সম্ভব।’

অনলাইন প্রতিবেদক
বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদ আয়োজিত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা
বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদ আয়োজিত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা |নয়া দিগন্ত

ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিলে অন্তর্বর্তী সরকার সম্মানের সাথে বিদায় নিতে পারবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ।

রোববার (১ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদ আয়োজিত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন

খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘৭২ থেকে ৭৫-এর ক্ষমতায় যারা ছিলেন, বাকশাল কায়েম করে তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিল। রক্ষীবাহিনী তৈরি করে মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও স্বাধীনতাকামী মানুষদের হত্যা করা হয়েছিল। এমন একটা অবস্থার পর প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত করেছিলেন। বিশৃঙ্খল সেনাবাহিনীকে এক করেছিলেন। তিনি বাকশাল বাতিল করে গণতন্ত্র কায়েম করেছিলেন। এভাবেই তিনি সফল রাষ্ট্রনায়ক হয়ে উঠেছিলেন।’

বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ‘জিয়াউর রহমানকে হত্যা করার পর অনেকে বলেছিল, তিনি ছাড়া বিএনপি ইজ জিরো। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া সাহসিকতার সাথে বিএনপি হাল ধরেছিলেন। জিয়াউর রহমানের আদর্শিকতায় তিনি দেশ পরিচালনা করেছিলেন। এই বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার জন্য ১৬ বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকার খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মীর ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়েছিল। কিন্তু এত নির্যাতন সত্বেও বিএনপিকে দমানো সম্ভব হয়নি।’

তিনি আরো বলেন, ‘সরকারের দায়িত্বে যারা আছেন তারা কেউ কেউ গোপনে বলেছেন, ডিসেম্বরে নির্বাচন হলে তো বিএনপি টু-থার্ড মেজরিটি নিয়ে সরকার গঠন করবে। কিছুদিন আগে প্রধান উপদেষ্টার কাছে আমরা গিয়েছিলাম। আমরা কেন ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চাই, তার ব্যাখ্যা আমরা দিয়েছি। আমরা বলেছি, ডিসেম্বর নির্বাচনের জন্য একটি উপযুক্ত সময়। আমরা মনে করি, নির্বাচন দিতে যত বিলম্ব হবে, পতিত সরকার নানা ষড়যন্ত্র করতে থাকবে। কিছু যড়যন্ত্রের নমুনাও আমরা দেখেছি। সুতরাং ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দেয়া উত্তম। অন্তর্বর্তী সরকারকে তো একটা সময় বিদায় নিতে হবেই। আমরা মনে করি, ডিসেম্বরের মধ্যে বিদায় নিলে সসম্মানেই বিদায় নেয়া সম্ভব।’

তিনি বলেন, আমরা সংস্কারের পক্ষে। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার আগেই তারেক রহমান ৩১ দফা সংস্কারের ঘোষণা দিয়েছেন। আমরা ক্ষমতায় এলে সেসব সংস্কার বাস্তবায়নও করব। জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করতে আগামীকাল থেকে আলোচনা শুরু হবে, আমরা তাতে যাব। তবে আমরা চাই, সংস্কার প্রক্রিয়ায় সব রাজনৈতিক দল একমত হয়ে নির্বাচনের দিয়ে এগিয়ে যাওয়া হোক। দেশে বর্তমানে যে সঙ্কট সৃষ্টি হচ্ছে, তা কিন্তু নির্বাচনের কারণেই হচ্ছে। আমরা কিন্তু অনেক বিশ্বাস করে ড. ইউনূসকে ক্ষমতায় বসিয়েছি। কিন্তু তিনি জাপানে গিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন, আমরা তাতে হতাশ। তিনি বলেছেন, একমাত্র বিএনপিই নাকি নির্বাচন চায়। অথচ আমরা বোঝাতে চেয়েছি, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিলে সবদিক দিয়েই তা ভালো হবে। আমি আশা করব, প্রধান উপদেষ্টা দেশের মধ্যে আর কোনো বিভ্রান্তি সৃষ্টি করবেন না।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন পরিষদের সদস্য সচিব বিএফইউজের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।