জাতিকে ধ্বংস করে দিতে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেয়ার নীতিমালা নিয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। এ আলোচনা সভার আয়োজন করে নাগরিক ঐক্য। সভাপতিত্ব করেন দলটির সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।
ড. মঈন খান বলেন, ‘আমার মনে হয়, বিগত ১৫ বছর ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার একটি নীতিমালা নিয়েছিল। সেটি হচ্ছে, তারা ভেবেছিল, এই দেশ থেকে যদি শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেয়া যায়, তাহলে এই জাতিকে ধ্বংস করে দেয়া যাবে। মানুষ যুক্তিতর্ক দিয়ে কথা বলতে পারবে না। মানুষ ন্যায়-অন্যায়ের বিভেদ করতে পারবে না। মানুষ প্রতিবাদ করতে পারবে না। এবং বাংলাদেশের মানুষের টুটি চেপে ধরে রাখা যাবে।’
তিনি বলেন, ‘মানুষ বলে আমেরিকা বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী শক্তিধর দেশ, বিশ্বের মোড়ল। এটা সাধারণভাবে বোঝায় তাদের সামরিক ও অর্থনৈতিক শক্তি আছে। কিন্তু আমি কিন্তু সেভাবে বুঝি না, আমি যখন দেখি যখন আলোচনা করি বা মানুষের সাথে কথা বলি, এই যুক্তি দেই— আমেরিকা বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর দেশ এই কারণে, আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বের সবচেয়ে ভালো বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, সবচেয়ে ভালো শিক্ষকেরা রয়েছেন এবং সবচেয়ে ভালো ছাত্র রয়েছে।’
‘গত ১৫ বছরে যেভাবে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। আমি জানি না, সেখান থেকে বের হয়ে আসতে আমাদের কত সময় লাগবে,’ বলেন তিনি।
বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, ‘যে সরকার যে যাই করুক না কেন? শিক্ষকরা যদি ঐক্যবদ্ধভাবে একটি প্রত্যয় নেয় যে, আমরা এদেশের মানুষকে শিক্ষিত করে তুলব, আমার বিশ্বাস, তারা সফল হবেন।’
জার্মানির শিক্ষাব্যবস্থার প্রসঙ্গ তুলে ধরে মঈন খান বলেন, ‘শিক্ষিত হয়ে ডিগ্রি নেয়ার পরে জার্মানির ছাত্রদেরকে যদি জিজ্ঞাসা করা হতো তোমরা কি করবে? তারা একটা উত্তর দিতো— আমি শিক্ষক হব। অন্য কথায় তাদের জাতীয় পলিসি ছিল, যারা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হবে তারা মূলত দেশের ভবিষ্যৎ শিক্ষিত প্রজন্ম তৈরি করবে। সেটা কিন্তু দেশের তারা গ্রহণ করেছে।’
‘দেশের শিক্ষকদের লাঠিচার্জ করে অথবা টিয়ার গ্যাস মেরে তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে হবে এর চেয়ে কলঙ্কজনক ঘটনা আর নেই’ উল্লেখ করে ড. মঈন খান বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছে। এবং শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করার জন্য যে চাবিকাঠিটি ব্যবহার করা হয়েছে, সেটা হচ্ছে শিক্ষকদের যে শ্রদ্ধা, সম্মান, অবস্থা সেটাকে শেষ করে দাও। ছাত্রদের লেখাপড়ার পাঠ্যপুস্তক শেষ করে দাও। কোর্সগুলোকে ধ্বংস করে দাও। এবং তার ফলেই কিন্তু আজকে আমরা এ অবস্থায় এসেছি।’



