গত বছরের ১৫ মার্চ ফেসবুকে দেয়া একটি পোস্টের কারণে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা আত্মহত্যা করেন। তার আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন।
তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে অবন্তিকার সহপাঠী রায়হান সিদ্দিকী (আম্মান) অভিযুক্ত হয়েছেন।
রোববার (১০ আগস্ট) কুমিল্লার আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) মিজানুর রহমান অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
মামলার প্রায় দেড় বছর পর রোববার আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয়েছে।
ওসি তদন্ত মিজানুর রহমান জানান, অবন্তিকার মা সহপাঠী আম্মান ও সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। মামলাটির তদন্তে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাসহ মোট ২৩ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে।
এছাড়া অবন্তিকার মোবাইল ফোন থেকে বেশ কিছু ছবি, স্ক্রিনশট, মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপের কিছু সংক্ষিপ্ত বার্তা জব্দ করা হয়েছে। তার ফেসবুকে দেয়া ‘সুইসাইড নোট’ও পর্যালোচনা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘মোবাইলটি ফরেনসিক ল্যাবে পাঠিয়ে প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে। আম্মান বিভিন্নভাবে অবন্তিকাকে মানসিকভাবে হয়রানি করতেন। মোবাইলে এমন কিছু ক্ষুদে বার্তাও পাওয়া গেছে। এসব হয়রানির কারণে অবন্তিকা আত্মহত্যা করতে বাধ্য হন। এসব বিষয় উল্লেখ করেই অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে।’
গত বছরের ১৫ মার্চ রাতে কুমিল্লা নগরের একটি ভাড়া বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন অবন্তিকা। এর আগে, ফেসবুক পোস্টে শিক্ষক দ্বীন ইসলাম ও সহপাঠী আম্মানসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ করেন তিনি। পরদিন ১৬ মার্চ তার মা তাহমিনা শবনম দু’জনকে আসামি করে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা দায়ের করেন।
অবন্তিকার মা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘মেয়ের মৃত্যুর নেপথ্যে যারা জড়িত, তারা শাস্তি পাবে কিনা শুরু থেকেই সন্দেহ ছিল। যে জবি প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েও মেয়েকে বাঁচাতে পারিনি, সেই প্রশাসন কীভাবে দায় এড়াতে পারে?’
তিনি আরো বলেন, ‘অবন্তিকার মতো অসংখ্য মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে হয়রানির শিকার হয়। কেউ নীরবে সহ্য করে, কেউ প্রতিবাদ করে মৃত্যুর মুখে পড়ে।’ ইউএনবি