নিখোঁজের ১৮ ঘণ্টা পর স্কুলছাত্রীর লাশ উদ্ধার, ১০ সংগঠনের তীব্র প্রতিবাদ

জড়িত সকল আসামির দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি

‘আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রশাসনের দ্রুত ও কঠোর পদক্ষেপ শুধু ভুক্তভোগীর ন্যায়বিচারই নিশ্চিত করবে না; বরং সমাজে একটি স্পষ্ট বার্তা পৌঁছে দেবে—নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা, নির্যাতন ওকে হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।’

নয়া দিগন্ত অনলাইন

নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানাধীন দড়ি সোনাকান্দা এলাকায় নিখোঁজের ১৮ ঘণ্টা পর ১৩ বছর বয়সী স্কুলছাত্রী আকলিমার লাশ উদ্ধারের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নারী উন্নয়ন শক্তি।

সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংস্থাটি এই উদ্বেগ জানায়। ওই বিবৃতিতে নারী উন্নয়ন শক্তির নির্বাহী পরিচালক ড. আফরোজা পারভীন বলেন, ‘এ ঘটনায় আমরা গভীরভাবে মর্মাহত, ক্ষুব্ধ ও উদ্বিগ্ন। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড শুধু একটি পরিবারের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি নয়; বরং সারাদেশে শিশুদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা ব্যবস্থার ওপর গুরুতর প্রশ্ন তুলে ধরেছে।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, নিহত আকলিমা দড়ি সোনাকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। রোববার দুপুরের পর থেকে সে নিখোঁজ থাকলেও দীর্ঘ সময় অনুসন্ধানের পর তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। সোমবার ভোরে তার লাশ উদ্ধার করা হয় এবং লাশে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে, যা একটি জঘন্য ও পরিকল্পিত অপরাধের সুস্পষ্ট ইঙ্গিত বহন করে।

আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, শিশু নির্যাতন ও হত্যার ঘটনায় দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত না হলে অপরাধীরা আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে এবং সমাজে বিচারহীনতার সংস্কৃতি দৃঢ় হয়। এ ধরনের ঘটনা শিশুদের নিরাপত্তা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং ন্যায়বিচারের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থাকে মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন করে।

এই প্রেক্ষাপটে, নিম্নস্বাক্ষরকারী ১০টি মানবাধিকার ও সামাজিক সংগঠন একযোগে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নিকট নিম্নোক্ত জোর দাবি জানাচ্ছে—

১. এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত সকল প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ আসামিকে দ্রুত শনাক্ত করে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে।

২. তদন্ত প্রক্রিয়া দ্রুত, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন করতে হবে।

৩. অপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

৪. ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এলাকাভিত্তিক কার্যকর ও স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রশাসনের দ্রুত ও কঠোর পদক্ষেপ শুধু ভুক্তভোগীর ন্যায়বিচারই নিশ্চিত করবে না; বরং সমাজে একটি স্পষ্ট বার্তা পৌঁছে দেবে—নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা, নির্যাতন ওকে হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।

১০টি সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতিবাদকারীগণ

১. ড. আফরোজা পারভীন- নির্বাহী পরিচালক, নারী উন্নয়ন শক্তি

২. শাহেদা ওয়াহাব- সভাপতি, ফোরাম ফর কালচার অ্যান্ড হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট

৩. নুসরাত সুলতানা আফরোজ- এক্সিকিউটিভ চেয়ারপারসন, ইয়াং উইমেন ফর ডেভেলপমেন্ট রাইটস অ্যান্ড ক্লাইমেট

৪. নাসিমা হক- সেক্রেটারি, ডোমেস্টিক ওয়ার্কার এমপ্লোয়ারস’ এসোসিয়েশন বাংলাদেশ

৫. খন্দকার রিয়াজ হোসেন- পরিচালক, বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম

৬. বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসাইন- সভাপতি, টেক্সটাইল গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন

৭. সুলতানা বেগম- সভাপতি, গ্রীনবাংলা গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন

৮. লাভলী ইয়াসমিন- সাধারণ সম্পাদক, জাগো নারী ফাউন্ডেশন

৯. মুরশিদা আখতার- সাধারণ সম্পাদক, জাতীয় গার্হস্থ নারী শ্রমিক ইউনিয়ন

১০. শামীমা সুলতানা- সভাপতি, বাংলাদেশ গার্মেন্টস লেবার কংগ্রেস’