‘ক্রীড়াই তারুণ্য, ক্রীড়াই শক্তি’- জাতীয় জীবনে খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে মাঠের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) রাতে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি সরকারি কলেজ মাঠে জুলাই স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের মেগা ফাইনাল উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন। টুর্নামেন্টের আয়োজন করে জুলাই ঐক্য পরিষদ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রামে জুলাই আন্দোলনের প্রথম শহীদ ওয়াসিমের বাবা মো: শফিউল আলম। প্রধান বক্তা ছিলেন ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) নজরুল ইসলাম, বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, সারোয়ার আলম, জামায়াত নেতা মুহাম্মদ আবদুল জব্বার, এনসিপি নেতা একরামুল হক, ছাত্র অধিকার পরিষদের রবিউল হাসান তানজিম, যুবদল নেতা ও ক্রীড়া সংগঠক এম মোর্শেদ হাজারী, মনসুর চৌধুরী, আজম খান, ওসমান তাহের সম্রাট, বেলাল উদ্দিন মুন্না, রিফাত চৌধুরী, মো: মুজিবুর রহমানসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, শিক্ষার পাশাপাশি শিশুদের সুস্থ, সুন্দর ও আনন্দময় জীবনের জন্য খেলাধুলার বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, ‘একটা সময় ছিল যখন স্কুল-কলেজের মাঠে খেলাধুলার চর্চা ছিল, এখন তা চোখে পড়ে না। বিশেষ করে শহরাঞ্চলে নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাঠের অভাব প্রকট।’ তিনি এ অবস্থাকে শিক্ষার্থীদের বিকাশে বাধাস্বরূপ উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘স্কুল থাকবে, মাঠ থাকবে না- এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। মাঠের অভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাংস্কৃতিক পরিবেশও হারিয়ে যাচ্ছে।’
তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার সমালোচনা করে বলেন, ‘শুধু পাঠদান নয়, শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে প্রয়োজনীয় চর্চা নিশ্চিত করতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গড়ে ওঠা অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খেলার মাঠ নেই। শিক্ষাসংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা।’ শিক্ষার্থীদের জন্য ভালো পাঠদানের পরিবেশের পাশাপাশি একটি ভালো মাঠের নিশ্চয়তা দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে খেলাধুলা ও শারীরিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বছরে দুই-চারটি টুর্নামেন্ট আয়োজন রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় ছাড়া কিছু নয়।’ কলেজ পর্যায়ে শারীরিক শিক্ষা ও শিক্ষকদের অবহেলিত অবস্থার কথাও তুলে ধরেন তিনি। এ বিষয়ে শিক্ষকদের প্রভাষক পদমর্যাদায় উন্নীত করার দাবি জানান।
বর্তমান প্রজন্মের মোবাইল ফোনে অতিরিক্ত আসক্তির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা এখন মাঠে নয়, স্ক্রিনেই সময় কাটায় বেশি, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।’
তিনি বলেন, ‘একদিকে খেলাধুলা কমছে, অন্যদিকে ডায়াবেটিস, হৃদরোগসহ নানা শারীরিক ও মানসিক রোগ বাড়ছে।’
তিনি স্মার্টফোনের গেমের আসক্তি থেকে বেরিয়ে এসে বাস্তব খেলাধুলায় মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানান। খেলাধুলা শুধু শিশুদের নয়, বড়দের জন্যও প্রয়োজনীয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।



