সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে সব বাহিনী প্রস্তুত : সিইসি

সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন জানিয়েছেন, সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রশিক্ষণ ও মোতায়েন প্রস্তুত; ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রেও কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নিজস্ব প্রতিবেদক
পিলখানায় আয়োজিত নির্বাচন কেন্দ্রিক মক এক্সারসাইজ পরিদর্শনে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন
পিলখানায় আয়োজিত নির্বাচন কেন্দ্রিক মক এক্সারসাইজ পরিদর্শনে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন |নয়া দিগন্ত

সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে সব বাহিনী প্রস্তুত বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন।

তিনি বলেছেন, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নামছে।

বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) পিলখানায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ৫ ব্যাটালিয়ন মাঠে আয়োজিত নির্বাচন কেন্দ্রিক মক এক্সারসাইজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

সিইসি বলেন, আজকে এখানে খুব সুন্দর একটি মহড়া দেখলাম। এটি পুরোপুরি আমাদের নির্বাচন সংস্কৃতি বিবেচনায় করে করা হয়েছে। সাধারণত নির্বাচনে যেসব ধরনের ঘটনা ঘটে বা যেভাবে নির্বাচন পরিচালিত হয়। সব কনসিভেবল ডাইমেনশন মাথায় রেখে বিজিবি প্রশিক্ষণ দিয়েছে। এতে আমি অত্যন্ত আনন্দিত।

তিনি জানান, নির্বাচনী ডিউটি নিয়মিত আসে না। চার থেকে পাঁচ বছর পরপর আসে বলে বাহিনীগুলোকে বিশেষ ট্রেনিং নিতে হয়। বিজিবি নিয়মিত কাজ সীমান্ত এলাকায়। আমরা বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। পুলিশ ১৩০টি সেন্টারে নির্বাচনভিত্তিক প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। আনসার-বিডিবির মহড়া দেখেছি। তারাও প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। বিজিবির এ অনুশীলন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে, যাতে তারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে। সে জন্য সদস্যদের তৈরি করছে।

সিইসি বলেন, প্রতিটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের সদস্যদের নিয়ে দায়িত্বশীলতার সাথে প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমরা আশা করি, এই প্রশিক্ষণ নির্বাচনের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বিশেষ প্রভাব ফেলবে। আমি আশা করি, সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সাংবাদিক এবং ১৩ কোটি ভোটার মিলে আমারা একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অর্জন করব।

দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘আমি বলব না যে পরিস্থিতি পারফেক্ট লেভেলে চলে গেছে। তবে ৫ আগস্ট ২০২৪-এর পরিস্থিতির সাথে তুলনা করলে এখন অনেক উন্নতি হয়েছে। আপনারা নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারছেন, রাস্তায় চলাচল করতে পারছেন। ভোটের তারিখ আসতে আসতে এটা আরো উন্নতি হবে। আমরা ৩০ তারিখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে আবারো বৈঠক হবে এবং সেদিনই ডেপ্লয়মেন্ট স্ট্র্যাটেজি চূড়ান্ত করা হবে। পুলিশ চাইলে একজন দু’জন মোতায়েন করা যায়। কিন্তু এভাবে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা যায় না। সেনাবাহিনী কন্টিনজেন্ট আকারে কাজ করে। তাই তাদের মোতায়েনের সিদ্ধান্ত যথাযথ বিবেচনার পর নেয়া হবে।

একটি দলের পক্ষ থেকে নির্বাচন প্রতিহতের ঘোষণার প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, ‘যারা প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে, তাদের ব্যাপারে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে। সাংবাদিক, ভোটার, দেশবাসী- সবাই মিলে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি প্রতিহত করতে হবে।’

সাম্প্রতিকভাবে সরকারি উপদেষ্টাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ নিয়ে তিনি বলেন, এটা সরকারের নীতি-নির্ধারণী বিষয়। নির্বাচন কমিশন আইন অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করবে।

ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্র প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা ঝুঁকি অ্যাসেসমেন্ট করেছি। রেড, ইয়েলো ও গ্রিন- এই তিন জোনে ভাগ করে অনুযায়ী বাহিনী মোতায়ন করা হবে।

এ দিকে বিজিবি জানিয়েছে, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সারাদেশে বিজিবির ১২১০ প্লাটুন সদস্য নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করবে। আরো উল্লেখ্য, সন্দীপ, হাতিয়া ও কুতুবদিয়া ব্যতীত সকল উপজেলায় বিজিবি নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করবে। সীমান্তবর্তী ১১৫টি উপজেলার মধ্যে ৬০টি উপজেলায় বিজিবি সদস্য এককভাবে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করবে।

মক এক্সারসাইজ অনুষ্ঠানে বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকীসহ বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।