ইউজিসি চেয়ারম্যানের সাথে ইউটিএল নেতাদের সাক্ষাৎ, ৮ প্রস্তাবনা উপস্থাপন

‘বিশেষ করে আমরা শিক্ষকদের স্বতন্ত্র বেতন স্কেল নিয়ে মন্ত্রণালয়ে কথা বলব। একইসাথে অতি স্বল্প সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে জুলাই কর্নার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জুলাইয়ের স্মৃতিগুলো অক্ষুন্ন রাখার চেষ্টা করব।’

নয়া দিগন্ত অনলাইন
ইউজিসি চেয়ারম্যানের সাথে ইউটিএল নেতাদের সাক্ষাৎ পরবর্তী মতবিনিময় সভা
ইউজিসি চেয়ারম্যানের সাথে ইউটিএল নেতাদের সাক্ষাৎ পরবর্তী মতবিনিময় সভা |নয়া দিগন্ত

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন দেশের পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স লিংকের (ইউটিএল) নেতারা। এ সাক্ষাৎকালে ইউজিসি চেয়ারম্যানের কাছে দেশের উচ্চশিক্ষা, শিক্ষক সমাজের পেশাগত মর্যাদা রক্ষা এবং ক্যাম্পাসের শিক্ষার পরিবেশ ও সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে মোট আটটি দাবি ও প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিত সাক্ষাৎ পরবর্তী মতবিনিময় সভায় ইউটিএল-এর আহ্বায়ক অধ্যাপক মো: আতাউর রহমান বিশ্বাস ও সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইনের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। এ সময় ইউটিএল-এর মিশন ও ভিশন ইউজিসি চেয়ারম্যানের কাছে উপস্থাপন করেন ইউটিএল-এর সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন।

সাক্ষাৎকালে ইউজিসি চেয়ারম্যানের কাছে তুলে ধরা মোট আটটি দাবি ও প্রস্তাবনার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো :

১. জুলাই অভ্যুত্থানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অবদানের অ্যাকাডেমিক ডকুমেন্টেশন ও সকল বিশ্ববিদ্যালয় ‘জুলাই কর্নার’ প্রতিষ্ঠা।

২. বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তন।

৩. পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য সমান গবেষণা সুযোগ এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরির নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ। একইসাথে পিছিয়ে পড়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণা ফান্ড বৃদ্ধি ও বরাদ্দে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।

৪. শিক্ষক নিয়োগে আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখা ও শিক্ষক সঙ্কটে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্রুত শিক্ষক নিয়োগের অনুমোদন। বিগত ফ্যাসিবাদী আমলে শিক্ষক নিয়োগে যে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে তা তদন্তপূর্বক শনাক্ত করা এবং এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

৫. শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসন ও পর্যাপ্ত বৃত্তির ব্যবস্থা।

৬. বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য বিশেষায়িত বাহিনী (ক্যাম্পাস পুলিশ) নিয়োগ ও জরুরি হটলাইন চালু।

ওই সভায় ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ বলেন, ‘জুলাই কেন্দ্রীক এ ধরনের একটি শিক্ষক সংগঠনের প্রয়োজনীয়তা ছিল। আপনাদেরকে ধন্যবাদ এ ধরনের একটি প্লাটফর্ম প্রতিষ্ঠা করার জন্য। আপনাদের প্রস্তাবে সমসাময়িক সমস্যাগুলো উঠে এসেছে। বিশেষ করে আমরা শিক্ষকদের স্বতন্ত্র বেতন স্কেল নিয়ে মন্ত্রণালয়ে কথা বলব। আশা করি, শিক্ষকদের এ বিষয়টি সরকার গুরুত্ব সহকারে দেখবেন। একইসাথে অতি স্বল্প সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে জুলাই কর্নার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জুলাইয়ের স্মৃতিগুলো অক্ষুন্ন রাখার চেষ্টা করব। এছাড়া আপনাদের অন্য দাবি ও প্রস্তাবনাগুলো বাস্তবায়নে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

প্রতিনিধিদলের পক্ষ থেকে বলা হয়, আপনার সদয় উদ্যোগ ও সহায়তায় এই প্রস্তাবনা ও দাবিগুলো বাস্তবায়িত হলে দেশের উচ্চশিক্ষা আরো এগিয়ে যাবে এবং শিক্ষক সমাজ মর্যাদা নিয়ে দায়িত্ব পালনে উৎসাহিত হবেন। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন সরকার এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করে। উপরোল্লিখিত দাবিগুলো সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বাস্তবায়নে আপনার আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করছি। আর যেসব বিষয় ইউজিসির পক্ষ থেকেই বাস্তবায়ন করা সম্ভব, সেগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়ার জন্য অনুরোধ করছি।

প্রতিনিধিদলে উপস্থিত ছিলেন ইউটিএল-এর যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এস মনিরা আহসান (ঢাবি), যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহবুব রাজ্জাক (বুয়েট), ইউটিএল-এর কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এইচ এম মোশারফ হোসাইন (ঢাবি), যুগ্ম সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. ফারজানা ইয়াসমিন চৌধুরী (চবি), যুগ্ম সদস্য সচিব জনাব আরিফুল ইসলাম (ঢাবি), কার্যনির্বাহী সদস্য অধ্যাপক ড. রুহুল আমিন (ঢাবি), অধ্যাপক ড. আবু লায়েক (জবি), অধ্যাপক ড. জহিরুল ইসলাম (ঢাবি)। বিজ্ঞপ্তি