ভোটার নিবন্ধনে ৫ দিন সময় পাবে ১৪৩ দেশে থাকা বাংলাদেশীরা

‘এতদিন প্রবাসীরা নিজেদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত ছিলেন। এখন সেটা দূর হলো। আমরা সংশ্লিষ্ট সকলকে সাথে এটি বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।’

বিশেষ সংবাদদাতা
নির্বাচন কমিশন
নির্বাচন কমিশন |সংগৃহীত

প্রবাসীদের দীর্ঘদিনের চাহিদা অবশেষে পূরণ হলো। বিশ্বের ১৪৩টি দেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীরা ভোটের আওতায় এলো। পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপসের উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশীদের আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দেবার সুযোগ করে দেয়া হলো। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিবন্ধন করে তারা এই ভোটদানের সুযোগ পাবেন। ভোটের দু’ থেকে আড়াই সপ্তাহ আগেই তারা এই ভোট প্রদান করবেন। তারা নিবন্ধনের সময় পাবে পাঁচ দিন বলে জানান ইসি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) আবুল ফজল মো: সানাউল্লাহ। আর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন নিজে আনুষ্ঠানিকভাবে এ পোস্টাল ভোট বিডি নামের অ্যাপস উদ্বোধন করেন। তিনি বলেন, এই কাজ হলো দুঃসাহসিক একটি কর্মযজ্ঞ।

মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনের অডিটোরিয়ামে সন্ধ্যায় অ্যাপসটি উদ্বোধন করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। এ সময় অন্য চার নির্বাচন কমিশনার, ইসির উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এক্ষেত্রে মিশর, জাপান ও কেনিয়া থেকে কয়েকজন প্রবাসী ভোটদানের জন্য নিবন্ধন সম্পন্ন করেন।

উদ্বোধন করে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, এতদিন প্রবাসীরা নিজেদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত ছিলেন। এখন সেটা দূর হলো। আমরা সংশ্লিষ্ট সকলকে সাথে এটি বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, তিন মাসের কিছু বেশি সময় নিয়ে মোবাইল অ্যাপস তৈরির মতো একটি কাজ আমরা সম্পন্ন করেছি। এটিকে আমরা দুঃসাহসের সাথে বিবেচনা করছি। এটি একটি আইটি সাপোর্টেড সিস্টেম। যেটি ভোট প্রদানের জন্য নিবন্ধন প্রক্রিয়া অনলাইন আর প্রদানের কার্যক্রম ম্যানুয়েল।

ইসির পরিকল্পনা অনুযায়ী, আজ মঙ্গলবার দিনরাত ১২টা থেকে পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ আমেরিকা এবং আফ্রিকায় বসবাসরত বাংলাদেশীরা আগামী ২৩ নভেম্বরের মধ্যে ভোটের জন্য নিবন্ধন করতে পারবে। উত্তর আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে বসবাসরত বাংলাদেশীরা ২৪ নভেম্বর থেকে ২৮ নভেম্বর, ইউরোপে বসবাসরত প্রবাসীরা আগামী ২৯ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর, সৌদি আরবের প্রবাসীরা ৪ থেকে ৮ ডিসেম্বর, দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশিরা ৯ ডিসেম্বর থেকে ১৩ ডিসেম্বর, মধ্য প্রাচ্যের সৌদি আরব বাদে অন্য দেশগুলোর প্রবাসীরা ১৪ ডিসেম্বর থেকে ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে নিবন্ধন করতে পারবেন। এছাড়া বাংলাদেশে বসবাসরতরা (ভোটের দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তি, সরকারি চাকরিজীবী, কয়েদি ও অন্যান্য দেশে বসবাসরত ভোটাররা ১৯ ডিসেম্বর থেকে ২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে নিবন্ধন করতে পারবে।

ইসি উপস্থাপনায় জানায়, অ্যাপে নিবন্ধন করার পর সংশ্লিষ্টদের নিয়ে পৃথক ভোটার তালিকা করবেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এক্ষেত্রে নিবন্ধনের সময় দেয়া ঠিকানায় ফিরতি খামসহ ব্যালট পেপার পাঠিয়ে দেয়া হবে। এক্ষেত্রে প্রার্থিতা চুড়ান্ত হওয়ার পর ফের অ্যাপে প্রবেশ করে প্রার্থী তালিকা দেখে সংশ্লিষ্ট ভোটার ভোট দেবেন। এরপর তা ফিরতি খামে ভরে নিকটস্থ পোস্ট অফিস বা পোস্টবক্সে জমা দিলেই তা চলে আসবে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে। এসব ভোট জমা থাকবে সরকারি কোষাগারে। ভোটের দিন তা গণনা করা হবে।

ইসির তথ্য বলছে, ১৪৩টি দেশের ৫০ লাখ ভোটারকে নিবন্ধনের লক্ষ্যমাত্রা ধরে প্রাথমিকভাবে ২০ লাখ ব্যালট পেপার ছাপাবে ইসি। পরবর্তী সময়ে প্রয়োজন সাপেক্ষে আরো ছাপানো হবে। পোস্টাল ব্যালটে কেবল প্রার্থীর প্রতীক থাকবে। নাম ও ছবি থাকবে না। অঞ্চলভিত্তিক নিবন্ধিত ভোটারদের কাছে প্রবাসে ব্যালট পেপার পাঠানো শুরু হলে ১৬ থেকে ২৮ দিনের মধ্যে রিটার্নিং অফিসারের কাছে তা পৌঁছানোর পরিকল্পনা রয়েছে ইসির।