জুলাই গণঅভ্যুত্থানের উত্তাল সময়ে শিক্ষার্থীদের সংগঠিত করে আন্দোলন এগিয়ে নেয়ার জন্য যারা সম্মুখ সারিতে নেতৃত্ব দিতেন তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিডিয়া সেলের সদস্য লেখক, অ্যাক্টিভিস্ট রায়হান আহমেদ তামীম।
যে জুলাই নেমেছিল জীবনে তা বাস্তবায়ন করতে চেষ্টার কোনো ঘাটতি ছিল না। এমনকি অফিস থেকে ছুটি নিয়েও আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন তিনি। একপর্যায়ে অফিসের নোটিশ উপেক্ষা করেও তিনি আন্দোলনে সরব থেকেছেন। শেষ পর্যন্ত সিটি কলেজ এলাকা থেকে গ্রেফতারও হয়েছিলেন এই জুলাইয়ের অগ্র সেনানী।
সম্প্রতি তিনি নয়া দিগন্ত অনলাইনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের না জানা গল্প, ভয়াল দিনের অভিজ্ঞতা ও নানান স্মৃতি বর্ণনা করেছেন।
নয়া দিগন্ত : এখন কীভাবে সময় পার করছেন?
তামীম : জুলাইয়ের পর জীবনের গতিপথ বদলে গেছে। জীবন ও জীবিকার তাগিদে দশটা থেকে ছয়টা একটা কর্পোরেট জব করি। এছাড়া বাকি সময় লেখালেখি, জুলাই এক্টিভিজম নিয়ে ব্যস্ত থাকি। আসলে জুলাইকে জিইয়ে রাখতে কিছু কাজ করার চেষ্টা করছি। এই জুলাই আমাদের বেঁচে থাকার প্রেরণা।
নয়া দিগন্ত : জুলাইয়ের কত তারিখে শুরু, আন্দোলনে কীভাবে যোগ দিলেন, স্বপ্ন কী ছিল?
তামীম : কোটা সংস্কারের দাবিতে একমত ছিলাম সেই আঠারো সালের কোটা আন্দোলন থেকেই। তখনো পুরো আন্দোলন জুড়েই সক্রিয় ছিলাম। তো, চব্বিশের জুলাইয়ে আবার যখন কোটা পুনর্বহালের একটা চেষ্টা করা হয়, তখন আবারো সরব হই। সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখতে শুরু করি।

সঠিক তারিখটা আসলে মনে পড়ছে না, খুব সম্ভবত ৬ থেকে ৭ জুলাই প্রথম সশরীরে আন্দোলনে অংশ নিই। অফিস শেষ করে বিকেলে আন্দোলনে যোগ দিতাম, কয়েকদিন ছুটি নিয়ে দুপুরেই চলে গেছি শাহবাগে। আন্দোলনে এতটাই জড়িয়ে গিয়েছিলাম যে অফিসে বসে থাকলেও মন পড়ে থাকতো আন্দোলনে, এক ট্যাবে কাজ করতাম অন্য ট্যাবে লাইভ চলতে থাকতো আন্দোলনের। অফিস থেকে বারবার নোটিশ করছিল কাজে মনোযোগ দেয়ার জন্য। শত চেষ্টা করেও মনোযোগ ফেরাতে পারিনি।
স্বপ্নের কথা বলতে গেলে, কোটা প্রথা চিরবিলুপ্ত করা হোক মন থেকে এমনটাই চাওয়া ছিল। তবে, জুলাইয়ের মাঝামাঝি গিয়ে আন্দোলন যখন তীব্রতর হচ্ছিল, মনেপ্রাণে চাচ্ছিলাম এই ইস্যু সরকারের পতনের দিকে ধাবিত হোক। সেই আশাতেই চাকরি ছেড়ে পুরো সময় আন্দোলনকারী হিসেবে মাঠে নামি। শেষ পর্যন্ত মাঠেই ছিলাম।
নয়া দিগন্ত : কেউ উৎসাহ দিয়েছিল নাকি নিজ তাগিদেই আন্দোলন করেছিলেন?
তামীম : নিজের তাগিদেই আন্দোলনে যোগ দিই। দিন যতই গড়াচ্ছিল আন্দোলনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়ছিলাম। প্রথম দিকে পরিচিতদের অনেকেই সরাসরি যুক্ত হতে পারছিলেন না, তারা সোশ্যাল মিডিয়ায়, সাক্ষাতে বা ফোন কলে উৎসাহ দিচ্ছিলেন। প্রথমদিকে মা-বাবা, ভাই বোনরা বাধা দিচ্ছিল তবুও তাদের বাধার মুখেই বের হয়ে যেতাম। শেষদিকে এসে তাদের পূর্ণ সমর্থন পাই, এটা প্রবলভাবে উৎসাহিত করেছিল। যখন একের পর এক লাশ পড়ছিল তখনই বুঝে গিয়েছিলাম, ফেরার পথ বন্ধ হয়ে গেছে, হয় বিজয়, না হয় শহীদী মরণ।
নয়া দিগন্ত : যখন ইন্টারনেট ছিল না ওই সময়টাতে কীভাবে আন্দোলন এগিয়ে নিলেন?
তামীম : ১৯ জুলাই দুপুরে হেলিকপ্টার থেকে মুহুমুর্হু গুলি, সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়া হচ্ছিল, তখন আমি মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডের কাছে আল্লাহ করিম মসজিদের পেছনের গলিতে অবস্থান করছিলাম, যা ছিল আন্দোলনের অন্যতম হটস্পট। বাসস্ট্যান্ড থেকে শুরু করে পেছনের রাস্তা জুড়ে কয়েকহাজার মানুষ নেমে এসেছিল সেদিন। শিক্ষার্থীদের চেয়ে সাধারণ মানুষের সংখ্যাই বেশি ছিল। বিপরীতে ছিল পুলিশ আর ছাত্রলীগের ভাড়াটে বাহিনী। ধাওয়া পালটা-ধাওয়ার একপর্যায়ে বেশ কিছু টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পুলিশ।
সংখ্যায় বেশি হয়েও একের পর এক টিয়ারশেল আমাদের ছত্রভঙ্গ করছিল। দাঁড়াতে পারছিলাম না কোনোভাবেই। শেষে আশপাশ থেকে কিছু কাপড়, চটের বস্তা জোগাড় করে আগুন ধরাই, সেখানেই অবস্থান করি। তার কয়েক মিনিটের মাথায় পুলিশ-ছাত্রলীগ সম্মিলিত আক্রমণ চালায়, আমার ঠিক সামনেই নয় থেকে ১০ বছর বয়সী এক ছেলে গুলি খেয়ে লুটিয়ে পড়ে। ফিনকি দিয়ে রক্ত পড়ছিল, দ্রুততম সময়ে আমরা তাকে সরিয়ে নিই।
সেদিন রাত পর্যন্ত আমার আশপাশেই ছররা গুলিতে আরো বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়। রাতেই বাসার গেটে পুলিশ আসে, আমাদের গলিটা খুব সরু হওয়ায় সুবিধা করতে পারছিল না পুলিশ। জনতার ধাওয়া খেয়ে টিয়ারশেল মেরে পিছু হটে পুলিশ, টিয়ারশেলের ধোয়ায় পুরো বাসা এক নরকপুরী হয়ে যায়। চোখ প্রচণ্ড জ্বালাপোড়া করতে থাকে। প্রায় একঘণ্টা পর স্বাভাবিক হই। সেদিন রাতে আর ঘুমাতে পারিনি।

ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় আপডেট নিউজ পেতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছিল। ফোন কলে যোগাযোগ করছিলাম পরিচিতদের সাথে। ইন্টারনেট না থাকার দিনগুলোতে বেশিরভাগ সময়ই মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড এরিয়াতেই ছিলাম, নিরাপত্তা ঝুঁকিতে কিছু সময় বন্ধুর বাসা বছিলাতেও কাটাই। এর ফাঁকেফাঁকে কারফিউ কিছুটা শিথিল হলে শাহবাগ, ফার্মগেট, ধানমন্ডি, শংকর, সায়েন্সল্যাবে ঘুরে বেড়িয়েছি। এই সময়টা খুব বেশি আতঙ্কে কাটতো, এই বুঝি ধরা পড়ে গেলাম- এমন একটা ধারণা কাজ করত। ৫ আগস্ট সকালে এই আশঙ্কা সত্য হয়।
নয়া দিগন্ত : আপনি গ্রেফতার হলেন কীভাবে?
তামীম : ৪ আগস্ট সারাদিন শাহবাগ আর সায়েন্সল্যাবে অবস্থান করি। খাবার-পানির সঙ্কট দেখে ভাবছিলাম, ক্রাউডফান্ডিং করব। রাতে বাসায় ফিরে একটা স্ট্যাটাস দেই। সারা রাতে প্রায় এক লাখ ২০ হাজার টাকা জমা পড়ে। রাতভর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা আন্দোলনকারীদের টাকা পাঠাই। সারারাত এভাবেই কেটে যায়।
৫ আগস্ট সকাল, চারদিকে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছিল। খাবারসহ বের হতে না পেরে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য বের হই আমি ও বন্ধু শেখ ফরিদ। ফরিদ একজন গণমাধ্যমকর্মী, ওর সহকারী পরিচয়ে শাহবাগ যাওয়ার প্ল্যান করি। সিটি কলেজের সামনে গেলে পুলিশ ছাত্রদের ধাওয়া দেয়, ফরিদ ভিডিও তোলে। এরপর বার্তা২৪-এর এক সাংবাদিকের সিএনজিতে উঠি। গাড়ি স্টার্ট দিতেই পুলিশ চেক করে। সাংবাদিকদের প্রেস কার্ড থাকায় তারা ছাড়া পান, কিন্তু আমার কাছে কিছু না থাকায় ‘জামাত-শিবির’ ট্যাগ দিয়ে আটক করা হয়। ফোন কেড়ে নিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়।
পরে আরো কিছু ছাত্র ও হাসপাতালগামী মানুষকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় ধানমন্ডি থানায়। নাম-ঠিকানা টুকে নিয়ে হাজতে রাখে প্রায় ৩০ জনকে। এর ঘণ্টাখানেক পর আমাদের সবাইকে প্রিজনভ্যানে তোলা হয়। ভ্যানে গাদাগাদি অবস্থায় আমরা চিৎকার করি— ‘দয়া করে গাড়ি ছাড়েন, একটু বাতাস লাগুক!’ কিছুক্ষণ পর হঠাৎ একে একে সবাইকে নামিয়ে দিয়ে ফোনসহ জিনিসপত্র ফেরত দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। হাজত থেকে বের হয়েই শুনি, হাসিনা পালিয়ে গেছে! পরে জানতে পারি, কাকে কোন মামলায় ফাঁসাবে মোটামুটি কনফার্ম করা হয়েছিল। আমি যেহেতু ক্রাউন্ড ফান্ডিং করছিলাম, আবার বিভিন্নজনকে টাকা পাঠাচ্ছিলাম, তো আমাকে জঙ্গি কর্মকাণ্ডে অর্থদাতা মামলায় ফাঁসানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
নয়া দিগন্ত : যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আন্দোলন করলেন তার প্রতিফলন কতটুকু হচ্ছে, আপনার কী মনে হয়?
তামীম : প্রথমে তো আকাঙ্ক্ষা ছিল কোটা প্রথার বিলোপ করা, পরে আন্দোলনে সহিংস হামলা হলে সেই আকাঙ্ক্ষা সরকারকে উৎখাত করাতে রূপান্তরিত হয়। কোটা প্রথা তো অনেকটাই বিলুপ্ত হয়েছে। সরকার পতনের আকাঙ্ক্ষার কারণ ছিল ফ্যাসিবাদী সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থার এই কাঠামো ভেঙে দিয়ে দেশটাকে সকল শ্রেণি-পেশার, ধর্ম-বর্ণের মানুষের জন্য উপযোগী করে তোলা। যেমনটা আশা ছিল, তার বেশিরভাগই প্রতিফলিত হয়নি।
নয়া দিগন্ত : ৫ আগস্ট (৩৬ জুলাই) কোন এলাকায় ছিলেন?
তামীম: ধানমন্ডি জেলহাজত থেকে বের হয়ে শুনতে পাই হাসিনা পালিয়েছে। গ্রেফতার হওয়ার সংবাদ ফেসবুকে বেশ চাউর হয়েছিল। তো, একের পর এক ফোন আসতে থাকে। ইন্টারনেট তখনো স্বাভাবিক হয়নি, মোবাইল ডাটা কাজ করছিল না, দ্রুত কলাবাগান এক বন্ধুর বাসায় চলে যাই। ওয়াইফাই কানেকশনের আওতায় গিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জেল মুক্তির সংবাদ দিই। এরপর প্রথমে রিকশায়, পরে হেঁটে বিজয় মিছিলে যোগ দিয়ে গণভবনে যাই।
নয়া দিগন্ত : গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশ, প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি নিয়ে যদি কিছু বলেন।
তামীম : গণঅভ্যুত্থানের পর আমাদের স্বপ্ন ছিল, বাংলাদেশ এমন এক জায়গায় দাঁড়াবে, যেখানে মানুষ তার প্রাপ্য অধিকার ফিরে পাবে। রাষ্ট্র নির্মিত হবে এমন একটি কাঠামোতে, যা কেবল শহর কেন্দ্রিক সুবিধাভোগীদের জন্য নয়, গ্রামের কৃষক, দিনমজুর কিংবা একজন রিকশাচালকের জন্যও সমানভাবে কাজ করবে। আমরা এমন একটি দেশ কল্পনা করেছিলাম, যেখানে মানুষ অন্যায়-অবিচার আর বৈষম্যের শিকার হবে না। ন্যায়বিচার শুধু কাগজে কলমে লেখা থাকবে না, বরং বাস্তবেও তার প্রতিফলন ঘটবে। ধনী-গরিবের ভেদাভেদ দূর হবে।
প্রত্যাশা ছিল, প্রশাসন হবে জবাবদিহিমূলক, রাজনীতি হবে জনভিত্তিক, আর আইন থাকবে সবার জন্য সমান। মানুষ নিরাপদে কথা বলবে, প্রতিবাদ করবে, ভোট দেবে, বিচার পাবে। গণতন্ত্র কেবল নির্বাচনী ব্যবস্থা নয়, বরং জীবনের প্রতিটি স্তরে গণতন্ত্র তার প্রতিফলন ঘটবে। আর প্রাপ্তির কথা যদি বলি, শূন্য।
গত ষোল বছরে ঘটে যাওয়া কোনো অপকর্মের বিচার হয়নি, শাপলা হত্যাকাণ্ড, বিডিআর হত্যাকাণ্ড, খুন, গুমসহ সর্বশেষ জুলাই গণহত্যার বিচারও এখনো নিশ্চিত হয়নি। বিচার, সংস্কার, নির্বাচন শুধু মুখে মুখেই, কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
নয়া দিগন্ত : জুলাইয়ের এক বছর পার হলো, আপনার অনুভূতি কী?
তামীম : দেখতে দেখতে একবছর পার হলো, এখনো স্বৈরাচারের সেই অপশক্তি মাথা উঁচু করে বেঁচে আছে, বহাল তবিয়তেই আছে। এক বছর পর এসে আক্ষেপ হচ্ছে, কেন তাদেরকে আমরা বিচারের মুখোমুখি করতে পারলাম না, এই ভেবে। শহীদের রক্তের মর্যাদা নিশ্চিত করতে সকল অপরাধের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। তা করতে অক্ষম হলে রাষ্ট্র যেমন ব্যর্থ, একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে এই ব্যর্থতার দায় আমি, আপনি কেউই এড়াতে পারবো না।
নয়া দিগন্ত : জুলাই পরবর্তী দেশ গড়ায় কীভাবে ভূমিকা রাখছেন?
তামীম : জুলাইয়ে যে পথে নেমেছিলাম, এখনো ঘরে ফেরা হয়নি। নিয়মিতই শহিদ পরিবারের কাছে, আহতদের খোঁজ-খবর নিতে ছুটে গিয়েছি। হাসিনা পালিয়ে যাবার পর থেকে নানারকম ষড়যন্ত্রের ছক কষা হয়, যা প্রতিরোধে মিটিং মিছিলে, সভা-সেমিনারে অংশ নিয়েছি। জুলাইকে জিইয়ে রাখতে না পারলে বিপ্লব ব্যর্থ হবে। তাই অফলাইনে এবং অনলাইনে বিভিন্নভাবে জুলাইকে জিইয়ে রাখার কাজ জারি রেখেছি।
নয়া দিগন্ত : সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক জায়গা থেকে আপনার পরিকল্পনা কী?
তামীম : দেখেন, জুলাই একটা বিগ ইভেন্ট। এর সাথে অনেককিছুই জড়িয়ে আছে। ’৭১ আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছিল ঠিকই, কিন্তু বাস্তবিক অর্থে বহু অধিকারই নিশ্চিত হয়নি। আমরা রয়ে গিয়েছিলাম এক প্রকার ঔপনিবেশিক বলয়ের ভেতর, যেখানে দিল্লির আধিপত্য থেকে মুক্তি মেলেনি।
আর এই ২৪-এর গণঅভ্যুত্থান সেই বলয় ভাঙার সাহস ও সম্ভাবনা দেখিয়েছে। এখন প্রয়োজন সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক মুক্তি। আমাদের ভাষা, সাহিত্য, সংগীত, নাটক কিংবা ইতিহাসচর্চা, সবকিছুতেই দীর্ঘদিন ধরে বিদেশী প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণ লেগে ছিল। এই প্রভাবকে ভাঙতে হবে।
আমার পরিকল্পনা হলো- এই সাংস্কৃতিক বলয় ভাঙার লড়াইকে আরো তাত্ত্বিক, গবেষণাভিত্তিক এবং বিকল্প চর্চার মাধ্যমে এগিয়ে নেয়া। নতুন প্রজন্মকে নিয়ে একটি শক্তিশালী সাংস্কৃতিক ও চিন্তাশীল আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে, যা নিজস্বতা, আত্মমর্যাদা ও স্বাধীন চিন্তার ভিত্তিতে দাঁড়াবে। সাংস্কৃতিক মুক্তি ছাড়া রাজনৈতিক মুক্তি কখনো পূর্ণতা পায় না, এই কাজগুলো আমি আমরা সবাই মিলে করতে চাই।
নয়া দিগন্ত : আবারো যদি দেশ ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে বিপ্লবের ডাক আসে আপনি অংশ নেবেন?
তামীম : লড়াই কেবল শুরু হয়েছে, বিপ্লবের এই যাত্রায় যখনই ডাক আসে তখনই ঝাপিয়ে পড়তে প্রস্তুত। একবার পথে নামলে ফেরার সুযোগ থাকে না। আমাদের জুলাই জারি থাকবে।