বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প টেকসই উন্নয়নের পথে এগোচ্ছে : সুইস রাষ্ট্রদূত

‘কর্ম পরিবেশ উন্নয়ন, শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও কমপ্লায়েন্স মান উন্নয়নে অনেক দূর এগিয়েছে খাতটি।

নিজস্ব প্রতিবেদক
ফোর এ ইয়ার্ন ডাইয়িং কারখানা পরিদর্শনে সুইস রাষ্ট্রদূত রেটো রেঙ্গলি
ফোর এ ইয়ার্ন ডাইয়িং কারখানা পরিদর্শনে সুইস রাষ্ট্রদূত রেটো রেঙ্গলি |নয়া দিগন্ত

বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প ক্রমেই টেকসই উন্নয়নের পথে এগোচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেটো রেঙ্গলি।

তিনি বলেন, ‘কর্ম পরিবেশ উন্নয়ন, শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও কমপ্লায়েন্স মান উন্নয়নে অনেক দূর এগিয়েছে খাতটি। এ ধারাবাহিকতা রক্ষা করা পরামর্শ দেন তিনি।’

বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) টিম গ্রুপের পোশাককারখানা ফোর এ ইয়ার্ন ডাইয়িং পরিদর্শন শেষে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

ব্রিফিংয়ের আগে তিনি সাভারের বাইপাইলে অবস্থিত কারখানার বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখেন তিনি। শ্রমিক কর্মচারীদের সাথেও তাদের সুযোগ–সুবিধা এবং কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে ব্যবস্থাপনা নিয়ে তিনি আলোচনা করেন।

সুইস রাষ্ট্রদূত বলেন, কারখানাটির কর্ম পরিবেশ দেখে তিনি ‘ইমপ্রেসড’ অভিভূত। এর আগে কোনো দেশে এত চমৎকার কাঠামোর কারখানা দেখেন তিনি। বাংলাদেশের পোশাকখাতের টেসই উন্নয়নের এটা একটা বড় উদাহরণ। স্বাস্থ্যকর সবুজ পরিবেশে শ্রমিকরা কাজ করছেন। তাদের চিকিৎসা এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে কর্তৃপক্ষ যথেষ্ট দায়িত্বশীল। যেহেতু এ কারখানা থেকে উৎপাদিত পোশাক তার দেশ সুইজারল্যান্ডে আমদানি হয়–এ কারণে এখানকার কর্মপরিবেশ দেখতে কারখানাটি পরিদর্শনে এসেছেন তিনি। তবে নিজের এই বক্তব্যের বাইরে সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্নের জবাব দেননি রাষ্ট্রদূত।

Ratto Rengoli 2

বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখার আগে ফোর এ ইয়ার্ন ডাইয়িংয়ের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সাথে বৈঠক করেন রাষ্ট্রদূত। সুইস দূতাবাসের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও মিডিয়া বিষয়ক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা খালেদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। ফোর ইয়ার্ন ডাইয়িংয়ের পক্ষে উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল্লাহ হিল নকিব, মার্কেটিং ও মার্সেনডাইজিং বিভাগের প্রধান মেহেদী হাসান আসিফ ও অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সুইস রাষ্ট্রদূত কেন এলেন, কি পরারমর্শ দিয়েছেন–জানতে চাইলে আবদুল্লাহ হিল নকিব সাংবাদিকদের জানান, মূলত, বর্হিবিশ্বে বাংলাদেশের পোশাকখাত নিয়ে যে অপপ্রচার আছে, যে ইমেজ সঙ্কট আছে–সেটা যে সত্য নয় তা সরেজমিনে দেখাতেই রাষ্ট্রদূতকে নিয়ে এসেছেন তারা। কর্ম পরিবেশ, শ্রমিকদের সুযোগ–সুবিধা ও পণ্যের গুনগত মান দেখে তিনি অত্যন্ত খুশি হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে তাদের অনুমতি চেয়েছেন রাষ্ট্রদূত। দেশের ব্র্যান্ড ইমেজ উন্নত করতে এ প্রচার ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন তারা। এছাড়া তার দেশেও বাংলাদেশের পোশাকশিল্প সম্পর্কে প্রকৃত ধারণা দেয়ার চেষ্টা করবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।

ফোর এ ইয়ার্ন ডাইয়িং যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিলের (ইউএসজিবি) সবুজ কারখানার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লিডারশিপ ইন এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ডিজাইন লিডের সর্বোচ্চ ক্যাটাগরি প্লাটিনাম সনদ পাওয়া কারখানা। উচ্চ মূল্যের বিভিন্ন ধরনের জ্যাকেট উৎপাদন হয় এখানে। ফ্রেইন অন বোর্ড–এফওবি পর্যায়ে ১০০ ডলারের কাছাকাছি এক একটি জ্যাকেটের মূল্য। ইউরোপ আমেরিকায় ভোক্তা পর্যায়ে ৭০০ থেকে ৮০০ ডলারেও বিক্রি হয় একটি পণ্য। বিশ্বের শীর্ষ পর্যায়ের অন্তত ২০ ব্র্যান্ডের রফতানি আদেশের পোশাক উৎপাদন ও সরবরাহ করা হয় ফোর ইয়ার্ন ডাইয়িং কারখানা থাকে।