লেবাননে নিয়োজিত জাতিসঙ্ঘ শান্তিরক্ষা মিশন ইউনিফিলে অংশ নিতে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ৮৫ জন সদস্যের একটি দল বুধবার বিশেষ ফ্লাইটে চট্টগ্রামস্থ শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর ত্যাগ করেছেন।
নৌসদস্যগণ বাংলাদেশ কন্টিনজেন্টের (ব্যানকন-১৬) অধীনে লেবাননে মোতায়েন করা নৌবাহিনী জাহাজ ‘বানৌজা সংগ্রাম’-এ যোগদান করবেন।
চট্টগ্রাম ছাড়ার আগে চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চল কমান্ডারের পক্ষে চিফ স্টাফ অফিসার ক্যাপ্টেন এম আশরাফুল আলম নৌসদস্যদের বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানান। এ সময় নৌবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইতোপূর্বে গত ১৯ নভেম্বর ক্যাপ্টেন ফাহিদ আবদুল্লাহর নেতৃত্বে প্রথম গ্রুপের ২৫ জন নৌসদস্যের আরেকটি দল বাণিজ্যিক বিমানযোগে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।
আইএসপিআর জানায়, আগামী ২৭ নভেম্বর ব্যানকন-১৫ (ইউনিফিল) এর ১১০ জন নৌসদস্য বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করবেন। ইতোপূর্বে সহকারী নৌবাহিনী প্রধান (অপারেশন্স) রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ মুসা লেবাননগামী নৌসদস্যদের উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি সততা, নিষ্ঠা এবং পেশাগত দক্ষতার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশ নৌবাহিনী তথা দেশের ভাবমূর্তি সমুন্নত রাখে ও বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে জাতিসঙ্ঘ মিশনে লেবাননগামী সকল নৌসদস্যের নির্দেশ প্রদান করেন।
বাংলাদেশ নৌবাহিনী জাহাজ ২০১০ সাল থেকে লেবাননে জাতিসঙ্ঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত রয়েছে। ভূ-মধ্যসাগরে মাল্টিন্যাশনাল মেরিটাইম টাস্কফোর্সের সদস্য হিসেবে উপমহাদেশের মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধ জাহাজ বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় নিয়োজিত রয়েছে।
বর্তমানে নিয়োজিত নৌবাহিনী জাহাজ ‘বানৌজা সংগ্রাম’ লেবাননের ভূ-খণ্ডে অবৈধ অস্ত্র এবং গোলাবারুদের অনুপ্রবেশ প্রতিহত করতে দক্ষতার সাথে কাজ করে চলেছে। পাশাপাশি ওই জাহাজ লেবানিজ পানিসীমায় মেরিটাইম ইন্টারডিকশন অপারেশন পরিচালনা, সন্দেহজনক জাহাজ ও এয়ারক্রাফটের ওপর নজরদারি, দুর্ঘটনা কবলিত জাহাজে উদ্ধার তৎপরতা এবং লেবাননের সামরিক সদস্যদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদানসহ লেবাননে বসবাসরত বাংলাদেশীদের নিয়মিত চিকিৎসা সেবা প্রদান করে যাচ্ছে।
লেবাননে মোতায়েনের পর থেকে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় গত ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদস্যরা অত্যন্ত আন্তরিকতা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার সাথে অর্পিত দায়িত্ব পালন করে চলেছে। বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের এই গর্বিত অংশগ্রহণ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দেশের ভাবমূর্তি ব্যাপকভাবে উজ্জ্বল করেছে বলে আইএসপিআর থেকে জানানো হয়।



