শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি জাতীয়করণ চায় জমিয়াতুল মোদার্রেছীন

‘বর্তমান সরকার চাইলেও এখন কোন বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করতে পারবে না। তবে আগামীতে যারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসবেন তারা ইতোমধ্যে অঙ্গীকার করেছেন চাকরি জাতীয়করণ করার।’

নিজস্ব প্রতিবেদক
মাদরাসা শিক্ষার মান উন্নয়নে শিক্ষিকাদের করণীয় শীর্ষক সেমিনার
মাদরাসা শিক্ষার মান উন্নয়নে শিক্ষিকাদের করণীয় শীর্ষক সেমিনার |নয়া দিগন্ত

বেতন-ভাতার শতাংশ হিসেবে নয়, বরং কর্মরত সকল মাদরাসা শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি জাতীয়করণ চায় মাদরাসা শিক্ষক-কর্মচারীদের সংগঠন জমিয়াতুল মোদার্রেছীন।

সংগঠনটির সভাপতি ও দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন বলেন, ‘২০১৭ সালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শিক্ষক সমাবেশ করে জমিয়াতুল মোদার্রেছীন শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি জাতীয়করণের দাবি জানিয়েছিল। এই দাবি আদায়ে তখন থেকেই কর্মসূচিও পালন করছে, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কাজ করবে মাদরাসা শিক্ষকরা।’

তিনি বলেন, ‘শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবি নিয়ে এখন যারা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারা শুধু স্ট্যানবাজি করছে, আমরা কোন শতাংশের হিসেবে বেতন-ভাতা চাই না, আমরা চাই জাতীয়করণ করে শতভাগ সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। তবে সেটি রাস্তায় দাঙ্গাবাজি করে নয়, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে।’

শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাজধানীর মহাখালীস্থ গাউসূল আজম কমপ্লেক্সে বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের উদ্যোগে আয়োজিত মাদরাসা শিক্ষার মান উন্নয়নে শিক্ষিকাদের করণীয় শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জমিয়াত সভাপতি বলেন, ‘বর্তমান সরকার চাইলেও এখন কোন বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করতে পারবে না। তবে আগামীতে যারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসবেন তারা ইতোমধ্যে অঙ্গীকার করেছেন চাকরি জাতীয়করণ করার। আমরা বিশ্বাস করি তখন শিক্ষকদের বেতন-ভাতার জন্য দাবিও করতে হবে না, শিক্ষক-কর্মচারীরা যা চায় তার চেয়েও বেশি তারা পাবেন।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব রুহী রহমান, মাদরাসা শিক্ষা অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক দিলরুবা খান।

এ এম এম বাহাউদ্দীন বলেন, ‘সর্বশেষ প্রকাশিত এইচএসসির ফলাফলে দেখা গেছে বিপর্যয় ঘটেছে। কলেজে ফলাফল খারাপ হওয়া আর মাদরাসায় ফলাফল খারাপ হওয়া এক বিষয় নয়। কিছু দিন পরে আবার এসএসসি-দাখিল ও এইচএসসি-আলিম পরীক্ষা আছে। কিন্তু এর মধ্যে দাবি-দাওয়ার নাম করে ক্লাস বন্ধ রেখে আন্দোলন করা হচ্ছে। অথচ এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য পিক টাইম। সামনে নির্বাচন আছে সে সময় এমনই প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। সেগুলো বিবেচনায় না নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে সবকিছু বন্ধ রাখার অপচেষ্টা চলছে।’

শিক্ষকদের দাবিকে যৌক্তিক এবং এর প্রতি সমর্থন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকারও নিশ্চয়ই এই দাবির সাথে একমত, সরকারও চাচ্ছে, কিন্তু ড. ইউনূস সাহেব যে পরিস্থিতির ওপর, যে অর্থনৈতিক অবস্থায় দায়িত্ব নিয়েছেন সেখান থেকে তিনি চাইলেই কি দিতে পারবেন, কোনভাবেই সম্ভব নয়। এটা আমাদের বুঝতে হবে। যারা এটা বুঝেও শিক্ষকদের রাস্তায় রেখে পরিবেশ নষ্ট করছেন তারা শুধু স্ট্যান্ডবাজি ছাড়া আর কিছুই করছেন না।’

জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব অধ্যক্ষ শাব্বীর আহমদ মোমতাজী বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন থেকেই শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি জাতীয়করণের দাবি জানিয়ে আসছি, এবং দাবি আদায়ে আন্দোলন করছি। আমরা চাই শিক্ষকরা সরকারি চাকরিজীবীদের মতো শতভাগ সুযোগ-সুবিধা পাক। তবে আমরা সব সময় সরকারের সাথে আলোচনার মাধ্যমে দাবি আদায়ের পক্ষে।’