জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসে ড্রোন প্রদর্শনীতে মুগ্ধ জনতা

মানিক মিয়া এভিনিউতে ১১০০ ড্রোনের সমন্বয়ে ১২ মিনিট ধরে চলে এই প্রদর্শনী।

নয়া দিগন্ত অনলাইন

Location :

Dhaka
ড্রোন শো
ড্রোন শো |সংগৃহীত

বিরুপ আবহাওয়া কারণে দীর্ঘ বিলম্বের পর জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে বহুল প্রতীক্ষিত ড্রোন শো ‘ডু ইউ মিস মি?’।

মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এই এই প্রদর্শনী হওয়ার কথা থাকলেও বৃষ্টির কারণে একাধিকবার পিছিয়ে অবশেষে রাত ১১টায় শুরু হয়। মানিক মিয়া এভিনিউতে ১১০০ ড্রোনের সমন্বয়ে ১২ মিনিট ধরে চলে এই প্রদর্শনী।

দিনব্যাপী চলা সংগীত উৎসবের পর বৃষ্টিভেজা পরিবেশ ও সময়সূচির বারবার পরিবর্তন সত্ত্বেও হাজারো দর্শক সেই রাতে অপেক্ষায় ছিলেন এই অনুষ্ঠান দেখার জন্য।

মূলত সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় অনুষ্ঠান শুরুর কথা থাকলেও, বিরূপ আবহাওয়ার কারণে তা একাধিকবার পেছাতে হয়। রাত গভীর হওয়ায় অনেক দর্শকই তখন ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে ভিজে অবস্থায় অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন। তবে যারা থেকে গিয়েছিলেন, তারা এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্যের সাক্ষী হন যেখানে প্রযুক্তি ও রাজনৈতিক বার্তা মিশে যায় এক অভিনব কল্পনায়।

প্রদর্শনীর শুরুতেই দেখানো হয় একটি হাতের প্ল্যাকার্ড, যাতে লেখা ‘ডু ইউ মিস মি?’। এরপর রক্তমাখা দাঁতসহ শেখ হাসিনার ব্যঙ্গচিত্র। এই দৃশ্য দেখা মাত্রই অনেক দর্শক প্রতিবাদী স্লোগানে ফেটে পড়েন। এরপর দেখানো হয় ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়া হেলিকপ্টার। তার নিচে লেখা হয়, ‘খুনিকে ছাড়া ভালো আছে বাংলাদেশ।’

পরবর্তী দৃশ্যে তুলে ধরা হয় আওয়ামী সরকারের দমনপীড়নের প্রতীকী আয়নাঘরের একরামুল হত্যাকাণ্ড, আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ড, ব্যাংক লুটের ঘটনায় শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সালমান এফ রহমানের চিত্র।

এছাড়াও দেখানো হয় নিহত কাউন্সিলর একরাম ও তার কন্যার আবেগঘন আহ্বান, ‘আব্বু, তুমি কান্না করতেছ যে’ বলে কাঁদছে না আর কোনো একরামের কন্যা।

আয়নাঘরের দৃশ্যের নিচে ফুটিয়ে তোলা হয় এই লেখা- আয়নাঘরের অন্ধকারে বসে লিখতে হচ্ছে না ‘I Love My Family’।

প্রদর্শনীতে আর্থিক কেলেঙ্কারি ও রাজনৈতিক সেন্সরশিপের কথাও উঠে আসে, যেখানে শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা ও সালমান এফ রহমানের চিত্র প্রদর্শিত হয়।

আত্ম-সমালোচনার ঢংয়ে ও রম্যভঙ্গিতে একটি বার্তায় বলা হয়, ‘আগে খুনি সরকারের ভয়ে মানুষ পোস্ট ডিলিট করত, এখন জনগণের ভয়ে সরকার পোস্ট ডিলিট করে।’

চূড়ান্ত দৃশ্যে আশাবাদের সুরে ভেসে ওঠে, ‘আমরা জানি ফ্যাসিবাদমুক্ত দেশ পূনর্গঠনে পাড়ি দিতে হবে অনেক পথ!’ এরপর বাংলাদেশের পতাকা ফুটিয়ে তুলে লেখা হয়, ‘সবাই মিলেই আমরা গড়বো বাংলাদেশ ২.০।’

এর আগে জুলাই গণঅভ্যুত্থান উৎসব উপলক্ষে বিভিন্ন ব্যান্ডসহ জনপ্রিয় একক ও দলীয় শিল্পীদের পরিবেশনা হয়। হাজারো মানুষ এই আয়োজন উপভোগ করেন। সূত্র : ইউএনবি