নির্বাচনে ব্যাঘাত ঘটানোর শক্তি আ’লীগের নেই : প্রেস সচিব

ফেব্রুয়ারির নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। বিএনপির মনোনয়ন ঘোষণা মসৃণভাবে হয়েছে, আওয়ামী লীগের তৃণমূল দুর্বল ও বিভক্ত, এবং পুলিশ ও প্রশাসন বেশি সংগঠিত।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম |সংগৃহীত

ফেব্রুয়ারির নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে। সম্ভবত সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনও হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

তিনি জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের তৃণমূল ভেঙে গেছে বা প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোতে মিলিয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে নির্বাচনে ব্যাঘাত ঘটানোর মতো শক্তি তাদের হাতে অবশিষ্ট নেই।

শনিবার সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেয়া এক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন। তিনটি সাম্প্রতিক ঘটনা তার এই বিশ্বাসকে দৃঢ় করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে তিনি যে তিনটি ঘটনার উল্লেখ করেন তা নিম্নরূপ-

১. বিএনপির মনোনয়ন ঘোষণা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে

বিএনপি সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করলে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে- এমন শঙ্কা ছিল সর্বত্র। অনেকেই ধারণা করেছিলেন, শত শত বিদ্রোহী প্রত্যাশী প্রার্থী সিদ্ধান্ত মানতে অস্বীকৃতি জানাবেন, বিক্ষোভ করবেন, এমনকি দলীয় মনোনীত প্রার্থীদের সমর্থকদের সাথে সংঘর্ষও বাঁধতে পারে। কিন্তু এক-দুটি ক্ষুদ্র ঘটনার বাইরে পুরো ঘোষণা প্রক্রিয়া আশ্চর্যজনকভাবে শান্তিপূর্ণ ছিল।

এতে প্রমাণিত হয় যে বিএনপির নেতৃত্ব যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়েছিল। মনোনয়ন নিয়ে দলের ভেতরে বিস্তৃত গ্রহণযোগ্যতা দেখায় যে, নির্বাচনী প্রচারণা ও ভোটের সময় দলীয় অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষের সম্ভাবনা খুবই কম।

২. আওয়ামী লীগের সক্ষমতার সীমা এখন পরিষ্কার এবং তা খুবই নগন্য

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রায়শই দাবি করে যে তাদের একটি বিশাল তৃণমূল নেটওয়ার্ক রয়েছে যা যেকোনো ভোট ব্যাহত করতে সক্ষম। তবে গত কয়েক দিনের ঘটনাবলী দেখিয়ে দিয়েছে যে দলটি আসলে কী সংগঠিত করতে পারে তার বাস্তব সীমা কত। এটি ক্রমশ ভাড়াটে টোকাই ঝামেলা সৃষ্টিকারীদের ছোট ছোট দলের উপর নির্ভরশীল একটি দল হয়ে উঠেছে, যারা পরিত্যক্ত বাস পুড়িয়ে দিতে পারে, ৩০ সেকেন্ডের সংক্ষিপ্ত ‘ঝটিকা মিছিল’ করতে পারে, অথবা সোশ্যাল-মিডিয়া-চালিত এআই শাটডাউনের চেষ্টা করতে পারে।

বাস্তবে, আওয়ামী লীগ ফেসবুক-ভিত্তিক প্রতিবাদী দলে পরিণত হয়েছে, মাঠে তাদের সাংগঠনিক শক্তি খুব কম। আমার দীর্ঘদিনের পর্যবেক্ষণ এখনো যৌক্তিক, দলটি তৃণমূল হয় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বা প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোতে মিলিয়ে গেছে। এই বাস্তবতা বিবেচনা করে, নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগের কোনো বিঘ্ন ঘটানোর সম্ভাবনা খুব কমই দেখছি।

৩. পুলিশ, নিরাপত্তা বাহিনী এবং স্থানীয় প্রশাসন এখন আরো সংগঠিত

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে আইন-শৃঙ্খলার লক্ষণীয় স্থিতিশীলতা পুলিশ, নিরাপত্তা বাহিনী এবং স্থানীয় প্রশাসনের মধ্যে- যার মধ্যে ডিসি, এসপি, ইউএনও এবং ওসি অন্তর্ভুক্ত নতুন করে আস্থা তৈরি করেছে বলে প্রতিফলিত করে। নির্বাচন প্রক্রিয়া তদারকি করার জন্য সবচেয়ে দক্ষ কিছু কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আমি আত্মবিশ্বাসী যে তারা জাতির প্রত্যাশা অনুযায়ী সুশৃঙ্খল নির্বাচন সম্পন্ন করবে।