খাগড়াছড়িতে সেনাবাহিনীর উপর বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী ইউপিডিএফ-এর সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। একইসাথে দলটি দেশের ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষায় পার্বত্য চট্টগ্রামে সামরিক নিরাপত্তা পদক্ষেপ বাড়াতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছে।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানান দলটির আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব আল্লামা সাজেদুর রহমান।
বিবৃতিতে হেফাজত নেতৃদ্বয় বলেন, ‘আমরা খাগড়াছড়ির গুইমারায় সেনাবাহিনীর ওপর ইউপিডিএফ-এর সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষায় পার্বত্য চট্টগ্রামে সামরিক নিরাপত্তা পদক্ষেপ আরো বাড়াতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।’
মুসলিম-অধ্যুষিত বাংলাদেশ থেকে পার্বত্য অঞ্চলকে বিচ্ছিন্ন করে ‘খ্রিস্টান রাষ্ট্র’ বানানোর আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের কথা স্মরণ করিয়ে তারা আরো বলেন, এই ষড়যন্ত্র রুখে দিতে বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক ধর্মপ্রাণ ছাত্র-জনতা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নিয়োজিত সেনাবাহিনী ও বিজিবির পাশে আছে।
হেফাজত নেতৃদ্বয় বলেন, ধর্ষকদের অবশ্যই দৃষ্টান্তমূলক বিচার হতে হবে। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে বিচারের দাবির আড়ালে পাহাড়ি বাঙালিদের স্থাপনা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক ভাঙচুর করা হচ্ছে। একের পর এক আক্রমণ করা হচ্ছে কর্তব্যরত সেনা-সদস্যদের ওপর। আমরা দেখেছি, তথাপি সেনাবাহিনী যথেষ্ট ধৈর্য ও সংযমের সাথে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করছে।
এ সময় আধিপত্যবাদী ইন্ডিয়ার ভাড়াটে সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফ পার্বত্য চট্টগ্রামকে অশান্ত করে তুলেছে বলেও স্মরণ করিয়ে দেন তারা। একইসাথে দেশের একদল ইন্ডিয়াপন্থী বামও পাহাড়ে সহিংসতার উস্কানি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন নেতৃদ্বয়। এরপর তাদের এই উস্কানির নিন্দা জানান তারা।
হেফাজত নেতারা অভিযোগ করেন, ইউপিডিএফসহ অন্যান্য পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী সংগঠন দেশের সার্বভৌমত্ববিরোধী তৎপরতা ছাড়াও নিয়মিত অপহরণ, চাঁদাবাজি, গুম-খুন ও মুক্তিপণ আদায়সহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। তাদের কারণে পাহাড়ে স্থানীয় বাঙালি ও নৃতাত্ত্বিক নাগরিকরা সবাই অতিষ্ঠ। ভূমিপুত্র বাঙালি ও ভৌগোলিক নিরাপত্তা রক্ষায় নিয়োজিত সেনাবাহিনীকে ‘শত্রু’ বানিয়ে ফায়দা নিতে চায় ইন্ডিয়ার মদদপুষ্ট বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। সুতরাং পাহাড়ে কোনো বিভেদ-বিদ্বেষ প্রশ্রয় দেয়া যাবে না। স্থানীয় বাঙালি ও নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর সবাই পাহাড়ি ও বাংলাদেশী নাগরিক।
এ সময় ইউপিডিএফসহ চিহ্নিত বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলোকে ‘দেশদ্রোহী’ আখ্যা দিয়ে নিরাপত্তা ঝুঁকিতে থাকা পার্বত্য চট্টগ্রাম ঘিরে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা কৌশলপত্র প্রণয়ন করাও সময়ের দাবি বলে জানান তারা।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি