গত বছরের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গুলিতে নিহত পরিচয় শনাক্ত না হওয়া ছয় ব্যক্তির লাশ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের কাছে এই ছয়টি লাশ হস্তান্তর করা হয়। নিহতদের মধ্যে একজন অজ্ঞাতপরিচয় নারী (৩২), অন্যান্যরা হলেন অজ্ঞাতপরিচয় পুরুষ (৩০), (২৫), (২০), (২২) ও (২৫)।
গত এক বছর ধরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পড়ে ছিল লাশগুলো। এ দীর্ঘ সময়েও তাদের খোঁজে আসেননি কেউ। এতে করে অজ্ঞাত হিসেবেই তাদের দাফন করা হবে রাজধানীর জুরাইন কবরস্থানে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা: কাজী গোলাম মোখলেসুর রহমান জানান, জুলাই আন্দোলনের সময় ৭ জুলাই থেকে ১৪ জুলাইের মধ্যে লাশগুলো ঢাকা মেডিক্যালে আসে। একজন নারী ও পাঁচজন পুরুষ।
তাদের ডিএনএ আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, ‘আজকে পুলিশের মাধ্যমে লাশগুলো আঞ্জুমান মুফিদুলের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রতিটা লাশে আঘাতের চিহ্ন ছিল। একটি লাশে শটগানের গুলির আঘাত। আর বাকিগুলোতে ভোতা অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন। আদালতের আদেশে লাশগুলো হস্তান্তর করা হলো।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম-কমিশনার ফারুক আহমেদ বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানে নিহতের এখানে ছয়টি লাশ রাখা হয়েছিল এবং ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছিল। আমাদের পুলিশের যতগুলো কার্যক্রম ছিল প্রত্যেকটি আমরা সম্পন্ন করেছি। আমরা বিষয়টি আদালতকে অবহিত করি এবং আদালতের নির্দেশেই এই লাশগুলো আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের কাছে দাফনের জন্য হস্তান্তর করি। কবরস্থানে প্রত্যেকটিতে সিরিয়াল অনুযায়ী নম্বর থাকবে ভবিষ্যতে যদি কারো সাথে ডিএনএ স্যাম্পল ম্যাচ করে তাহলে তাদের লাশ দিয়ে দেয়া হবে।’
লাশগুলো কেন শনাক্ত করা যায়নি— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা ফিঙ্গারপ্রিন্ট দেয়ার চেষ্টা করেছি কিন্তু তাদের হাতের অবস্থা খারাপ থাকায় সিঙ্গার প্রিন্ট দেয়া সম্ভব হয়নি, যার কারণে তাদের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। আমরা পরিচয় শনাক্তের জন্য যথেষ্ট চেষ্টা করেছি।’
আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের দাফন সেবা অফিসার কামরুল ইসলাম বলেন, ‘দাফনের উদ্দেশ্যে জুরাইন কবরস্থানে জুলাই অভ্যুত্থানে নিহত ছয়টি লাশ নিয়ে যাওয়া হবে। এদের মধ্যে একজন নারী বাকিরা সবাই পুরুষ।’
এই অজ্ঞাত ছয়টি লাশের মধ্যে তিনটি যাত্রাবাড়ী থানার, একটি পল্টন থানার ও দু’টি শাহবাগ থানার। দীর্ঘদিন তাদের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করলেও তাদের লাশ এখন পর্যন্ত কেউ নিতে আসেনি। লাশগুলোর ডিএনএ সংরক্ষণ করা রয়েছে, যেন ভবিষ্যতে তাদের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়।