দুর্নীতিবিষয়ক আলোচনায় বক্তারা

আওয়ামী আমলে স্বাস্থ্যের ঠিকাদার মিঠু দুর্নীতিকে শিল্পে পরিণত করেছে

‘সর্বস্তরে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে চাই দুর্নীতিমুক্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

নিজস্ব প্রতিবেদক
আলোচনা সভায় অংশগ্রহণকারী ও বক্তারা
আলোচনা সভায় অংশগ্রহণকারী ও বক্তারা |নয়া দিগন্ত

‘স্বাস্থ্যখাতের আলোচিত ঠিকাদার মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠু বিগত আওয়ামী আমলে দুনীতিকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। তাকে দুর্নীতির শিল্পীও বলা যায়। দুর্নীতি ও স্বাস্থ্য এই দুটো শব্দ এলেই তার নাম চলে আসে। আওয়ামী সরকার তাকে কিছু বলেনি, শুধুই প্রশ্রয় দিয়েছে। এই আমলে মিঠু গ্রেফতার হলেও আবার জামিন নিয়ে বের হয়ে গেছেন। মনে হচ্ছে, এই আমলেও তার কিছু হবে না। আগামীতেও হয়তো স্বাস্থ্যখাত মিঠুর দুনীতির কবলে পড়বে।’

‘সর্বস্তরে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে চাই দুর্নীতিমুক্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর তোপখানা রোডের বিএমএ ভবন মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠান হয়। দুর্নীতিমুক্ত স্বাস্থ্য আন্দোলন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

এতে মুখ্য আলোচক ছিলেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা: লেলিন চৌধুরী। আলোচক ছিলেন লায়ন্স ক্লাব ইন্ট্যারন্যাশনালের সাবেক ডিস্ট্রিক্ট গভর্নর আশফাকুর রহমান, হ্যালক্রো গ্রুপ লিমিটেড সাবেক কনসালটেন্ট মশিউর রহমান, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ লেলিন চৌধুরী বলেন, ‘বাস্তবে স্বাস্থ্যখাতে যে বরাদ্দ দেয়া হয় তার মাত্র অল্প অংশ মানুষের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়, বাকিটা হারিয়ে যায় অস্বচ্ছ প্রক্রিয়া ও দালাল-ঠিকাদার চক্রের লুটপাটে। স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতি শুধু আর্থিক নয়, এটি সরাসরি মানুষের জীবনের ক্ষতি ডেকে আনে।’

তিনি বলেন, ‘আসল চাহিদা যাচাই না করে মনগড়া তালিকা করে হাসপাতালগুলোতে যন্ত্রপাতি পাঠানো হয়, যার অনেকগুলো ব্যবহারই সম্ভব হয় না।’

হাসপাতালভিত্তিক যন্ত্রপাতির অস্বাভাবিক দামের প্রসঙ্গেও তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। কয়েক লাখ টাকার ডেন্টাল চেয়ার ৫৬ লাখ টাকায় কেনা, একই মেশিন এক হাসপাতালে ১৮ লাখে আরেক হাসপাতালে ৫৬ লাখে কেনার মতো ঘটনা কিভাবে ঘটে সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি।

বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ রাব্বি বলেন, ‘মিঠু শৈল্পিক দুর্নীতির কারণে আমার যদি সুযোগ থাকতো আমি তাকে অ্যাওয়ার্ড দিতাম। বিভিন্ন সময় নিউজ করতে গিয়ে দেখেছি কান্ট্রি অব অরজিন লেখা হচ্ছে জার্মানি লেখা হলেও মেশিন দিয়েছেন সেটি চাইনিজ ও পুরাতন। পুরাতন একটি মেশিন তিনি চায়না থেকে পোল্যান্ডে পাঠিয়েছেন, পোল্যান্ড থেকে শিপমেন্ট করে বাংলাদেশে পাঠিয়েছেন। যাতে বোঝা না যায় মেশিনটা কোন দেশ থেকে আসলো।’

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল বলেন, ‘আমরা সবাই তার বিরুদ্ধে লিখেছি, কিন্তু কিছুই হয়নি। এই সরকার তাকে জেলে নিতে পেরেছে কিন্তু পরে বেরিয়েও গেছেন। তাকে জেলে নেয়ার ক্ষমতা আওয়ামী সরকারের ছিল না।’