সংসদীয় আসনের সীমানা নিয়ে ১,৮৯৩ দাবি-আপত্তির শুনানি সম্পন্ন

সেপ্টেম্বর মাসেই ৩০০ আসনের সীমানা চূড়ান্ত করে গেজেট আকারে প্রকাশ করার পরিকল্পনা রয়েছে।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
সংগৃহীত

সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নিধারণকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গত চার দিনে ৩৩ জেলার ৮৪টি আসন সম্পর্কিত মোট ১ হাজার ৮৯৩টি দাবি-আপত্তির শুনানি সম্পন্ন করেছে।

এ সব শুনানির ভিত্তিতে দ্রুত চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন ইসি’র সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।

তিনি আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ কথা বলেন।

ইসি সচিব বলেন, ‘শুনানিতে আমরা আবেদনকারীদের বক্তব্য শুনেছি। কেউ আপত্তির পক্ষে, কেউ প্রস্তাবনা দিয়েছে আবার কেউ আমাদের প্রকাশিত গেজেটের পক্ষে মত দিয়েছে। একই বিষয়ে বারবার না বলার যে অনুরোধ ছিল তা সবাই রেখেছেন। এজন্য আমরা কৃতজ্ঞ।’

তিনি আরো জানান, যেখানে আপত্তি নেই সেখানে কমিশন পরিবর্তন আনবে না। শুধু ৮৪টি আসন নিয়েই শুনানি হয়েছে।

গত চার দিনে ১ হাজার ১৮৫টি আপত্তি এবং ৭০৮টি প্রস্তাব বা সুপারিশ জমা পড়ে। যা মিলিয়ে মোট ১ হাজার ৮৯৩টি দাবি-আপত্তি গৃহীত হয়। ২৪ আগস্ট ৬ জেলার ১৮টি আসন, ২৫ আগস্ট ৯ জেলার ২০টি আসন, ২৬ আগস্ট ৬ জেলার ২৮টি আসন এবং ২৭ আগস্ট ১২ জেলার ১৮টি আসন নিয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

আজকের শুনানিতে সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত পঞ্চগড়-১, ২, রংপুর-১, কুড়িগ্রাম-৪, সিরাজগঞ্জ-২, ৫, ৬ এবং পাবনা-১ আসন নিয়ে আলোচনা হয়। দুপুর আড়াইটা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত টাঙ্গাইল-৬, জামালপুর-২, কিশোরগঞ্জ-১, সিলেট-১, ফরিদপুর-১ ও ৪, মাদারীপুর-২ ও ৩, শরীয়তপুর-২ ও ৩ আসন নিয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

শুনানিতে বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিনিধি ও আইনজীবীরা অংশ নেন। পাবনার প্রতিনিধি ব্যারিস্টার নাজিবুর রহমান মোমেন বলেন, ‘আমরা চাই, সাথিয়া উপজেলা নিয়ে পাবনা-১ আসন এবং বেড়া ও সুজানগর উপজেলা নিয়ে পাবনা-২ আসন করা হোক। এটি ২০১৮ সালের প্রস্তাবনাতেও ছিল কিন্তু বাস্তবায়িত হয়নি।’

সিরাজগঞ্জের আবদুল মান্নান জানান, জেলায় ২০০১ সাল পর্যন্ত সাতটি আসন ছিল, কিন্তু ২০০৮ সালে কমিয়ে ছয়টি করা হয়। আমরা চাই, চৌহালী উপজেলা ও শাহাজাদপুরের পূর্বাঞ্চলের চারটি ইউনিয়ন যুক্ত করে আগের আসন পুনঃস্থাপন করা হোক।

ফরিদপুর-৪ আসনের প্রতিনিধি শহিদুল ইসলাম বাবুল বলেন, আগে ফরিদপুর-৪ আসন ছিল চরভদ্রাসন ও সদরপুর উপজেলা নিয়ে। কিন্তু ২০০৮ সালে ভাঙ্গা উপজেলা যুক্ত করা হয়। আমরা চাই, ফরিদপুর-৪ আসনকে ২০০১ সালের মতো ফিরিয়ে দেয়া হোক এবং ভাঙ্গা উপজেলা নিয়ে ফরিদপুর-৫ পুনরায় গঠন করা হোক।

টাঙ্গাইল-৬ আসনের প্রতিনিধি জানান, বর্তমানে আসনটি দেলদুয়ার ও নাগরপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত। কিন্তু নাগরপুর একটি নদীবেষ্টিত ও ভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যের উপজেলা। তাই দেলদুয়ার উপজেলাকে একক আসন হিসেবে টাঙ্গাইল-৬ করার দাবি জানানো হয়।

সিলেট-১ আসনের প্রতিনিধি অভিযোগ করেন, সিটি করপোরেশনের ২৫, ২৬, ২৭ নম্বর ওয়ার্ডকে সিলেট-৩ এ যুক্ত করা হয়েছে। আমরা চাই, এগুলো পুনরায় সিলেট-১ এ অন্তর্ভুক্ত করা হোক।

ইসি সচিব আরো জানান, গত ১০ আগস্ট পর্যন্ত মোট ৮৩টি আসনের সীমানা নিয়ে ১ হাজার ৭৬০টি দাবি-আপত্তি জমা পড়েছে। এগুলো পর্যালোচনা করে নিষ্পত্তির পরই আসনের চূড়ান্ত সীমানা প্রকাশ করা হবে।

তিনি বলেন, সেপ্টেম্বর মাসেই ৩০০ আসনের সীমানা চূড়ান্ত করে গেজেট আকারে প্রকাশ করার পরিকল্পনা রয়েছে।