দেশব্যাপী ধারাবাহিক ধর্ষণকাণ্ড নিয়ে নিজের উদ্বেগের কথা প্রকাশ করেছেন দেশের জনপ্রিয় আলেম ও সমাজসেবক শায়খ আহমাদুল্লাহ। এক্ষেত্রে একের পর এক হিন্দু যুবকদের দ্বারা মুসলিম মেয়েদের হেনস্থার বিষয়টিকে তিনি সাম্প্রদায়িক ধর্ষণ আখ্যা দিয়েছেন।
বুধবার (২২ অক্টোবর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেয়া এক পোস্টে এই উদ্বেগের কথা জানান শায়খ আহমাদুল্লাহ। ওই পোস্টে তিনি লেখেন, ‘এক শ্রেণীর হিন্দু যুবক তথাকথিত প্রেমের ফাঁদে ফেলে মুসলিম মেয়েদের ধর্ষণ করছে—এরকম একটি তথ্য অনেক দিন ধরেই শোনা যাচ্ছে। অথচ এ বিষয়ে প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়েনি।’
তিনি লেখেন, ‘এর মাঝে বুয়েটের এক হিন্দু শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মুসলিম মেয়েকে অজ্ঞান করে ধর্ষণ করার বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, মুসলিম নারীদের, বিশেষ করে পর্দানশীন মেয়েদের নিয়েও সোশ্যাল মিডিয়ায় তার কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের স্ক্রিনশট রয়েছে। তার এইসব ঘৃণ্য মন্তব্য থেকে বোঝা যায়—এগুলো তার ব্যক্তিগত অপরাধ নয়; বরং এগুলো সাম্প্রদায়িক অপরাধ এবং এর পেছনে আছে উগ্র হিন্দুত্ববাদী জিঘাংসা অথবা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট ও দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা।’
ইসলামিক এই স্কলার আরো লেখেন, ‘এদিকে গাজীপুরে ১৩ বছরের এক মুসলিম কিশোরীকে ধর্ষণ করেছে একদল হিন্দু যুবক। প্রশাসন এই ধর্ষণকে প্রেমের সম্পর্ক বলে হালকা করার চেষ্টা করছে, যা দুর্ভাগ্যজনক। প্রচলিত আইনে ১৬ বছরের কম বয়সী মেয়েদের সম্মতি থাকুক অথবা না থাকুক, সেটা ধর্ষণ হিসেবেই বিবেচিত হয়। তারপরও প্রশাসন কর্তৃক বিষয়টিকে হালকা করার অপচেষ্টা কেন? ধর্ষক হিন্দু বলে? ১৩ বছর বয়সের বিয়েকে বাল্যবিবাহ বলে তেড়ে আসতে দেখা যায়, এক্ষেত্রে দেখা গেল উল্টো ঘটনা।’
শায়খ আহমাদুল্লাহ লেখেন, ‘বুয়েটের ঘটনায় ইতোমধ্যে বুয়েটের শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত ধর্ষকের ছাত্রত্ব বাতিলসহ সর্বোচ্চ সাজার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে। ধর্ষকের সাথে ক্লাস না করার ঘোষণাও দিয়েছে তার সহপাঠীরা। আমরা শিক্ষার্থীদের এই ন্যায্য আন্দোলনের পক্ষে আছি। আমরা বুয়েট এবং গাজীপুরের ধর্ষকদের তদন্তপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি। সেই সাথে তথাকথিত প্রেমের ফাঁদে ফেলা সাম্প্রদায়িক ধর্ষণ চক্রের বিরুদ্ধেও কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
কমেন্টবক্সে পোস্টের সংযুক্তি দিয়ে তিনি আরো লেখেন, ‘গাজীপুর এবং বুয়েট শিক্ষার্থীর ঘটনা প্রমাণ করে, এক শ্রেণীর হিন্দু যুবক তথাকথিত প্রেমের ফাঁদে ফেলে মুসলিম মেয়েদের ধর্ষণ করছে মর্মে যে আলোচনা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে, তা গুরুত্বের সাথে দেখার সময় এসেছে। এই ষড়যন্ত্র যদি সত্য হয়, তবে এটা দেশের স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য অশনি সংকেত। এর বিরুদ্ধে প্রশাসনের এখনই পদক্ষেপ নেয়া উচিৎ।’