ভারতসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ওসমান হাদির মৃত্যু সংবাদ

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
জুলাইয়ের প্রাণ শরীফ ওসমান হাদি
জুলাইয়ের প্রাণ শরীফ ওসমান হাদি |সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তার মৃত্যুর সংবাদ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বিশেষ গুরুত্বের সাথে প্রচারিত হয়েছে।

হাদির মৃত্যু নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি শিরোনাম করেছে- ‘বৃহত্তর বাংলাদেশ’ মানচিত্রের নেপথ্যের ভারতবিরোধী নেতার মৃত্যু। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুলাই ছাত্র আন্দোলনের বিশিষ্ট নেতা শরীফ ওসমান হাদী ছয় দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র এবং সংসদ সদস্য প্রার্থী হাদীকে গত সপ্তাহে ঢাকায় নির্বাচনী প্রচারণার সময় মুখোশধারী আততায়ীরা মাথায় গুলি করে গুরুতর আহত করে।

ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের জুলাই আন্দোলনের বিশিষ্ট নেতা শরিফ ওসমান হাদী বৃহস্পতিবার সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। গত সপ্তাহে তিনি ঢাকায় মুখোশধারী আততায়ীদের হামলায় গুলিবিদ্ধ হন।

ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘ঢাকার রাজপথে গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরে চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠিয়েছিল মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কাছে হার মানলেন বাংলাদেশের জুলাই আন্দোলনের অন্যতম মুখ তথা ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি। বৃহস্পতিবার রাতে তার মৃত্যুর খবর প্রচারিত হওয়ার পরেই ঢাকায় নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। শাহবাগে জমায়েত হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।’

সংবাদ প্রতিদিনে বলা হয়েছে, ‘প্রয়াত বাংলাদেশের ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি। গত শুক্রবার জনবহুল এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এক সপ্তাহ ধরে লড়াই করছিলেন মৃত্যুর সাথে। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টা নাগাদ থেমে গেল সব লড়াই। ‘পরিবর্তনের’ বাংলাদেশে অকালে ঝরে গেল একটি প্রাণ। আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন সেদেশে। তার আগে এই মৃত্যু নিঃসন্দেহে এক আশঙ্কার বাতাবরণ তৈরি করল। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’র প্রধান কার্যালয় পুড়িয়ে দিল বিক্ষুব্ধ জনতা।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুতকারী যুব আন্দোলনের বিশিষ্ট নেতা শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর পর বাংলাদেশে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।

ওসমান হাদির মৃত্যুর খবরে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, গত বছর বাংলাদেশের ছাত্র-নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের নেতা শরিফ ওসমান হাদি; গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর যাকে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তিনি মারা গেছেন।

এছাড়া দ্য গার্ডিয়ান, সিএনএ, আল আরাবিয়া, দ্য সান মালয়েশিয়াসহ আন্তর্জাতিক অন্যান্য গণমাধ্যমও ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর দিয়েছে। পাকিস্তানি গণমাধ্যম দ্য ডন, জিও নিউজ ও এক্সপ্রেস ট্রিবিউন এবং ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমেও হাদির মৃত্যুর খবর এসেছে।

উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর দুপুর আনুমানিক ২টা ২০ মিনিটে পল্টন থানাধীন বক্স কালভার্ট রোডে অটোরিকশায় থাকা হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় মোটরসাইকেলে থাকা দুষ্কৃতিকারীরা। ওই ঘটনায় ১৪ ডিসেম্বর পল্টন থানায় ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের পল্টন থানায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।