যত চ্যালেঞ্জই আসুক জনগণকে দেয়া ওয়াদা রক্ষা করব : সিইসি

‘গণভোটের আইন হলে, আইনের মধ্যেই বলা থাকবে যে এর মধ্যে হ্যাঁ বা না বলতে হবে। আইনটা না হওয়া পর্যন্ত প্রকৃত ভাষাটা আমি বলতে পারবো না।’

নয়া দিগন্ত অনলাইন
বক্তব্য রাখছেন সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন
বক্তব্য রাখছেন সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন |বাসস

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের একমাত্র অ্যাজেন্ডা অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা।

তিনি বলেন, ‘পারফেক্ট নির্বাচন করার জন্য এক নম্বর শর্ত হলো রুল অফ ল’ বা আইনের শাসন। যত চ্যালেঞ্জই আসুক না কেন একটি স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে আমরা জনগণের কাছে যে ওয়াদা করেছি তা রক্ষা করব।’

শনিবার (২২ নভেম্বর) রাজধানীর হোটেল লেকশোর হাইটসে এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশনস’র উদ্যোগে আয়োজিত ‘বিল্ডিং ব্রিজ : রিজিওনাল ইলেক্টোরাল গভর্নেন্স অ্যান্ড সিটিজেন অবজারভেশন এক্সচেঞ্জ’ শীর্ষক কর্মশালার তিনি এসব কথা বলেন।

সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের কমিশন একটি স্বাধীন, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আমাদের একমাত্র অ্যাজেন্ডা হলো একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করা। সেই লক্ষ্য সামনে রেখে আমরা দিন-রাত কাজ করছি। আত্মবিশ্বাসী ভবিষ্যতে যত চ্যালেঞ্জই আসুক না কেন, আমরা জাতি ও বিশ্বকে যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি তা পূরণ করতে পারব। সরকারও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। রাজনৈতিক দলগুলোও বলছে যে তারা একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। এটি আমাদের জন্য অতিরিক্ত সুবিধা।’

সিইসি বলেন, ‘পরিস্থিতি যাই হোক, মাঠপর্যায়ের নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি আমরা গ্রহণের চেষ্টা করছি। আশা করছি নির্বাচনের সময় এলে আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত থাকব, যেটি আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি।’

নির্বাচনে অসংখ্য চোখ থাকবে উল্লেখ করে সিইসি বলেন, আমরা চাই পর্যবেক্ষকদের চোখকে কাজে লাগাতে। পর্যবেক্ষকরা আমাদের পক্ষ থেকে দেখবেন। নির্বাচনে পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকরাই হবেন আমাদের সিসি ক্যামেরা। আমরা সবাই মিলে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করার জন্য কাজ করছি।’

নির্বাচনের সময়ের মধ্যে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে উল্লেখ করে সিইসি বলেন, ‘আমি আশাকরি সবাই দায়িত্বশীল, বিবেকবান ও পরিপক্ব আচরণ করবেন। অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিত করতে একসাথে কাজ করবেন। আমাদের নির্বাচনের প্রস্তুতি পূর্ণ গতিতে চলছে এবং আমরা প্রতিশ্রুত সবকিছু বাস্তবায়নে প্রস্তুত থাকব।’

গণভোট আয়োজনের বিষয়ে সিইসি বলেন, ‘গণভোটের ব্যাপারে আপনারা চারটা প্রশ্ন দেখেছেন। চারটা পয়েন্টে হ্যাঁ বা না বলতে হবে। গণভোটের আইন হলে, আইনের মধ্যেই বলা থাকবে যে এর মধ্যে হ্যাঁ বা না বলতে হবে। আইনটা না হওয়া পর্যন্ত প্রকৃত ভাষাটা আমি বলতে পারবো না। আইনটা হলে আইনের মধ্যে বলা থাকবে ব্যলটে কি লেখা থাকবে। এটার মধ্যে প্রসিডিউরটা বলা থাকবে গণভোট কিভাবে করতে হবে। আমরা রেফারেন্ডম (গণভোট) আইনের জন্য অপেক্ষা করছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘রেফারেন্ডামের বিষয়ে আমি আইন উপদেষ্টার সাথে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন, আগামী সপ্তাহে রেফারেন্ডাম আইন হবে। এই রেফারেন্ডাম আমাদের জন্য আরেকটা চ্যালেঞ্জ। তবে আমরা এটা করব।’

প্রবাসী বাংলাদেশী ভোটের জন্য আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ভোটিং বিষয়ে সিইসি বলেন, ‘প্রবাসীদের ভোটদান প্রক্রিয়া সহজ করতে আমরা আমাদের চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখছি না। আমরা এই প্রক্রিয়াটা যতটা সম্ভব স্মুথ ও কমফরটেবল করার চেষ্টা করছি।’

এআইয়ের চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করে সিইসি বলেন, প্রযুক্তির অগ্রগতি যেমন আশীর্বাদ। তেমনই কখনো অভিশাপ। প্রযুক্তি যত এগোচ্ছে, দুর্বৃত্তরা আরো শক্তিশালী হচ্ছে। তারা আমাদের চাইতে অনেক দক্ষ, দ্রুত ও সংখ্যায় বেশি। তারা এআইসহ উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে। এটি আমাদের জন্য বড় মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

একই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে গত বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে একটা চিঠি এসেছে। যেখানে বলা হয়েছে গণভোটের আয়োজন করবে নির্বাচন কমিশন। দ্বিতীয় কথাটা বলা হয়েছে, গণভোট এবং জাতীয় সংসদের নির্বাচন একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে। সিইসি স্যার যেটা বলেছেন যে, এখনো আইনটা পাওয়া যায়নি। আইনটা করার পরে আমরা বাকি কাজগুলো করতে পারব।’

সূত্র : বাসস