ঈদের ছুটির পর ফের নগর ভবনে অবস্থান নিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) কর্মচারীরা। রোববার (১৫ জুন) সকাল থেকে তারা বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব দেয়ার দাবিতে একত্রিত হয়ে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন।
আন্দোলনে কর্মচারীদের সাথে যোগ দিয়েছেন ইশরাক হোসেনের অনুসারীরাও। বেলা ১১টার দিকে নগর ভবনে উপস্থিত হন ইশরাক। সেখানে গিয়ে তিনি আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি আপনারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তি করুন। তাহলে অচলাবস্থা কেটে যাবে। এ সমস্যার সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরো বলেন, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। আন্দোলন চলমান থাকবে, এখান থেকে ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই। এ লড়াই থেকে ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই। প্রধান উপদেষ্টাকে আহ্বান জানাব, তিনি যেন এ বিষয়টি সরাসরি নিজে তত্ত্বাবধান করেন। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা নিয়মতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিচালনায় বিশ্বাস করি। এখন আমাদের আন্দোলন যেভাবে চলছে, কোনো অবস্থাতেই আমরা এখান থেকে ফিরে যেতে পারি না। আদালতের রায় জনগণের রায়কে আপনারা মেনে নিন।
বিএনপির এ নেতা বলেন, আমরা যদি এখান থেকে পেছনের দিকে চলে যাই, তাহলে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হবে না। সরকারকে আহ্বান জানাব আপনারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটা নিষ্পত্তি করুন। না হলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের এ সঙ্কট চলবেই। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের দৈনন্দিন কার্যক্রম চলবে, জনগণের যাতে ভোগান্তি না হয়। এগুলো আমাদের তত্ত্বাবধানে চলমান থাকবে।
এদিকে আন্দোলনকারীরা ‘শপথ শপথ শপথ চাই, ইশরাক ভাইয়ের শপথ চাই’, ‘মেয়র নিয়ে টালবাহানা, সহ্য করা হবে না’, ‘চলছে লড়াই চলবে, ইশরাক ভাই লড়বে’ ইত্যাদি স্লোগান দিয়ে যাচ্ছেন। তাদের স্লোগানে উত্তাল পুরো নগর ভবন।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। অনিয়মের অভিযোগ তুলে বিএনপি প্রার্থী ইশরাক হোসেন ফল বাতিল চেয়ে মামলা করেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ২০২৫ সালের ২৭ মার্চ ট্রাইব্যুনাল সেই ফল বাতিল করে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে। নির্বাচন কমিশন ২৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করলেও হাইকোর্টে রিটের কারণে শপথে বাধা সৃষ্টি হয়।
এই পরিস্থিতিতে ১৫ মে থেকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝে নেয়ার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে ইশরাক সমর্থকরা, যার ফলে নগর ভবনের কার্যক্রম প্রায় অচল হয়ে পড়ে।