সাংবাদিকদের ওপর পুলিশের অমানবিক নির্যাতন ও রক্তাক্ত জখমের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)। সাংবাদিকদের শীর্ষ দুটি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা জয়নালসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় সাংবাদিক সমাজ রাজপথে নামতে বাধ্য হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
বুধবার (২৭ আগস্ট) এক যুক্ত বিবৃতিতে বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন ও মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী এবং ডিইউজের সভাপতি মো: শহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম বলেন, ফ্যাসিবাদী আমলের পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা আজও তাদের চরিত্র বদলাতে পারেনি। তারা ধ্যানে জ্ঞানে ফ্যাসিবাদ লালন করছে এবং উদ্দেশ্যমূলকভাবে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেন, ইংরেজি পত্রিকা দ্য নিউ নেশনের দুইজন রিপোর্টার আজ বেলা ২টার দিকে নিজস্ব বাইকে সেগুনবাগিচাস্থ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি যাওয়ায় পথে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে রাস্তায় যানজটে আটকা পড়েন। এ সময় উল্টো দিক থেকে আসা মাইক্রো বাসের ড্রাইভারের সাথে তাদের বচসা হয়। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ড্রাইভার তার কাছে থাকা চাকু দিয়ে সাংবাদিক সৈয়দ শাকিল পারভেজের হাতে আঘাত করেন। এ সময় তার সহকর্মী নোমান মোশাররফ এগিয়ে গেলে গাড়িতে থাকা অন্যরা নেমে ছিনতাইকারি বলে দুজনকে মারতে থাকেন। পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ কাউকে নিবৃত্ত না করে উল্টো দুই সাংবাদিককে পেটায়। এ সময় প্রেসক্লাবের সামনে পেশাগত দায়িত্ব পালনকারী অন্য সাংবাদিকরা সহকর্মীদের সহায়তায় এগিয়ে আসেন এবং নিজেদের সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার পরও পুলিশ তাদের বেধড়ক পেটায়।
তারা বলেন, এর একপর্যায়ে পুলিশ কর্মকর্তা জয়নালের নির্দেশে বাংলা ভিশনের রিপোর্টার কেফায়েত শাকিল, নিউ ন্যাশনের নোমান মোশাররফ এবং সৈয়দ শিমুল পারভেজকে পুলিশ বক্সে ঢুকিয়ে নির্মমভাবে নির্যাতন চালানো হয়।
তারা বলেন, পুলিশের আকস্মিক এ নির্মম নির্যাতনে উল্লিখিত তিনজন ছাড়াও সাংবাদিক সপ্তমী মণ্ডল ঋতু এবং খোলা বাজার পত্রিকার রিপোর্টার রোজিনা বেগম আহত হন। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত নোমান মোশাররফ ও শিমুল পারভেজকে ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, পুলিশের এহেন অমানবিক কর্মকাণ্ড সাংবাদিক ইউনিয়ন কোনোভাবে বরদাশত করবে না। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে সাংবাদিক সমাজ রাজপথে নামতে বাধ্য হবে।