দখলমুক্ত হলো নিকুঞ্জের জামতলা রোড, স্বস্তিতে এলাকাবাসী

জনগণ ঐক্যবদ্ধ হলে অসম্ভব কিছুই থাকে না। প্রশাসন, মিডিয়া এবং সচেতন নাগরিকদের সহযোগিতা পেলে আমরা জামতলাকে আবারো একটি শৃঙ্খলাপূর্ণ, দখলমুক্ত ও পরিচ্ছন্ন এলাকা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করব।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
দখলমুক্ত হলো নিকুঞ্জের জামতলা রোড
দখলমুক্ত হলো নিকুঞ্জের জামতলা রোড |সংগৃহীত

রাজধানীর নিকুঞ্জ-২ টানপাড়া এলাকার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সড়ক জামতলা রোড অবশেষে দখলমুক্ত হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এলাকাবাসী ও খিলক্ষেত টানপাড়া কল্যাণ সোসাইটির যৌথ উদ্যোগে এ সড়কে কোনো ভাসমান হকার বা অবৈধ দোকানপাট বসতে দেয়া হয়নি।

দীর্ঘদিনের দখলদারিতে নাকাল জনসাধারণ এখন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন।

স্থানীয়রা জানায়, বহু বছর ধরে জামতলা রোডের দুই পাশে ভাসমান হকার ও অস্থায়ী দোকানদাররা রাস্তার বড় অংশ দখল করে ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন। ফলে সাধারণ মানুষ, স্কুলগামী শিক্ষার্থী, এমনকি রিকশা ও মোটরসাইকেল আরোহীরাও নিয়মিত ভোগান্তির শিকার হচ্ছিলেন। বর্ষাকালে পানি জমে যান চলাচল প্রায় অচল হয়ে পড়ত। দখলকারীদের অনুরোধ করেও কোনো ফল না পাওয়ায় পরিস্থিতি ক্রমে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

এলাকাবাসী জানায়, প্রশাসনিক তৎপরতা না থাকায় বিষয়টি দীর্ঘদিন স্থবির ছিল। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে বুধবার স্থানীয় জনগণ ও খিলক্ষেত টানপাড়া কল্যাণ সোসাইটির পক্ষ থেকে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির নেতৃত্ব দেন কল্যাণ সোসাইটির আহ্বায়ক জাহিদ ইকবাল।

তিনি জানান, `রাস্তা জনগণের জন্য, কোনো ব্যক্তির ব্যবসার জায়গা নয়‘-এই নীতিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে জামতলা রোড সম্পূর্ণ দখলমুক্ত থাকবে। আল্টিমেটাম কার্যকরের পর বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই এলাকাবাসী সক্রিয়ভাবে মাঠে নামেন। জামতলা রোডের শেষ মাথা থেকে বটতলা পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকায় হকারদের বসতে দেয়া হয়নি। অবৈধভাবে স্থাপিত স্টল, কাঠের টেবিল ও প্লাস্টিকের ঘর সরিয়ে দেয়া হয়। দখলমুক্তির পর পুরো এলাকাজুড়ে স্বস্তি ও উচ্ছ্বাসের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। দীর্ঘদিন পর জামতলা রোডটি আবারো প্রশস্ত ও চলাচলযোগ্য হয়ে ওঠে। পথচারীরা বাধাহীনভাবে চলাচল করতে পারছেন।‘

স্থানীয় বাসিন্দা মিসেস লুবনা হক বলেন, `আমরা প্রতিদিন রাস্তায় হেঁটে বের হতে পারতাম না। আজকে মনে হচ্ছে এই রাস্তাটা সত্যিই জনগণের হয়ে গেছে।‘

জাহিদ ইকবাল বলেন, `জনগণ ঐক্যবদ্ধ হলে অসম্ভব কিছুই থাকে না। প্রশাসন, মিডিয়া এবং সচেতন নাগরিকদের সহযোগিতা পেলে আমরা জামতলাকে আবারো একটি শৃঙ্খলাপূর্ণ, দখলমুক্ত ও পরিচ্ছন্ন এলাকা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করব।‘

এদিকে জামতলা রোড দখলমুক্ত হওয়ায় শুধু রাস্তায় নয়, মানুষের মনেও শান্তি নেমে এসেছে। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি বাস্তবে রূপ নিয়েছে। এই ঘটনাটি প্রমাণ করেছে- সচেতন জনগণ ও স্থানীয় সংগঠনের সমন্বিত উদ্যোগেই নাগরিক সমস্যা সমাধান সম্ভব।