মতবিনিময় সভায় বক্তারা

স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে দরকার দক্ষ ফার্মাসিস্ট তৈরি

দেশে প্রায় দুই লাখ ওষুধের দোকান আছে। যেগুলোকে মডেল ফার্মেসিতে রূপান্তরিত করতে হলে চার লাখ ফার্মাসিস্ট প্রয়োজন। এজন্য সঠিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে দক্ষ ফার্মাসিস্ট তৈরির বিকল্প নেই।

বিশেষ সংবাদদাতা
ফার্মেসি কাউন্সিলের মতবিনিময় সভায় বক্তারা
ফার্মেসি কাউন্সিলের মতবিনিময় সভায় বক্তারা |নয়া দিগন্ত

বিদেশে ওষুধশিল্পে কাজ করে পাঁচ শতাংশ ফার্মাসিস্ট এবং হাসপাতাল ও কমিউনিটি ফার্মেসিতে কাজ করে ৯৫ শতাংশ। কিন্তু বাংলাদেশে সরাসরি স্বাস্থ্যখাতে ফার্মাসিস্টদের অবদান রাখার সুযোগ কম বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞ বক্তারা।

তারা বলেন, দেশে প্রায় দুই লাখ ওষুধের দোকান আছে। যেগুলোকে মডেল ফার্মেসিতে রূপান্তরিত করতে হলে চার লাখ ফার্মাসিস্ট প্রয়োজন। এজন্য সঠিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে দক্ষ ফার্মাসিস্ট তৈরির বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিলের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বি. ফার্ম কোর্সের অভিস্বীকৃতি (অ্যাক্রেডিটেশন) ও শিক্ষার্থী ভর্তি নীতিমালা যথাযথ প্রতিপালনের বিষয়ে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

কাউন্সিলের সভাপতি ও স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় কাউন্সিল অভিস্বীকৃত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও প্রতিনিধি (সদস্য), ভিসি এবং ফার্মেসি বিভাগের প্রধানরা অংশ নেন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে কাউন্সিলের সচিব মুহাম্মদ মাহবুবুল হক বলেন, ‘ফার্মেসি কাউন্সিল ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের বিভাগীয় প্রধানদের নিয়ে দু’টি মতবিনিময় সভা আয়োজন করেছে। এসব সভা থেকে প্রাপ্ত পরামর্শগুলো পরবর্তী সময়ে অ্যাক্রেডিটেশন ও এডুকেশন কমিটিতে উপস্থাপন করে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো কাউন্সিলের সাধারণ সভায় অনুমোদন করা হয়েছে। সুতরাং ফার্মেসি শিক্ষা ও পেশার মানোন্নয়নে ফার্মেসি কাউন্সিল সবসময় সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে অংশীজনদের পরামর্শ গ্রহণ করে থাকে।’

মুখ্য আলোচক কাউন্সিলের অ্যাক্রেডিটেশন ও এডুকেশন কমিটির সভাপতি মো: নাসের শাহরিয়ার জাহেদী বলেন, ‘বিদেশে ওষুধশিল্পে কাজ করে পাঁচ শতাংশ ফার্মাসিস্ট এবং হাসপাতাল ও কমিউনিটি ফার্মেসিতে কাজ করে ৯৫ শতাংশ ফার্মাসিস্ট। কিন্তু বাংলাদেশে সরাসরি স্বাস্থ্যখাতে ফার্মাসিস্টদের অবদান রাখার সুযোগ কম। দেশে প্রায় দুই লাখ ওষুধের দোকান আছে। যেগুলোকে মডেল ফার্মেসিতে রূপান্তরিত করতে হলে চার লাখ ফার্মাসিস্ট প্রয়োজন।’ এজন্য দক্ষ ফার্মাসিস্ট তৈরির লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পর্যাপ্ত ল্যাব স্থাপন এবং শিক্ষক নিয়োগের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মাদ ফরাসউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ফার্মেসি শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধির জন্য ফার্মেসি কাউন্সিল সিলেবাস প্রণয়ন, ল্যাবরেটরির স্ট্যান্ডার্ড নির্ধারণ, আসন সংখ্যা নির্ধারণ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পরিদর্শন কার্যক্রম চলমান রাখার মাধ্যমে চমকপ্রদ কাজ করে চলছে।’ এ জন্য তিনি কাউন্সিলকে ধন্যবাদ জানান।

কাউন্সিলের সহ-সভাপতি চৌধুরী মাহমুদ হাসান বলেন, ‘ফার্মেসি শিক্ষার একটি সুনির্দিষ্ট স্ট্যান্ডার্ড বজায় রাখা দরকার। এজন্য সর্বজনীন ফার্মেসি সিলেবাস প্রণয়ন করার জন্য অধ্যাপক ড. মো: আবদুর রশীদের নেতৃত্বে সিলেবাস প্রণয়ন কমিটি গঠন করা হয়েছে। সিলেবাসের খসড়া তৈরির পর প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে তা প্রেরণ করে মতামত নেয়া হবে।’

মো: সাইদুর রহমান বলেন, ‘বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের মতো বিসিএস ফার্মেসি ক্যাডারও চালু করা যেতে পারে।’

তিনি আরো বলেন, ‘সরকার ফার্মাসিস্টদের কর্মসংস্থানের জন্য বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে পদ সৃজন করেছে এবং ভবিষ্যতে আরো বৃদ্ধি করা হবে।’

মুক্ত আলোচনার বিষয়বস্তুর পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য সচিব বলেন, ‘ফার্মেসি শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য ফার্মেসি কাউন্সিল একটি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট চালু করতে পারে। অ্যাক্রেডিটেশন বিষয়ক সমস্যা নিয়ে বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিল, ইউজিসি ও ব্যাক একত্রে বসে সমস্যা সমাধান করতে পারে।’