মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী তুন ড. মাহাথির মোহাম্মদ শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়ে কুয়ালালামপুরের ন্যাশনাল হার্ট ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) তার কার্যালয় থেকে জানানো হয়, অসুস্থতার কারণে তিনি আদালতের শুনানিতে উপস্থিত হতে পারেননি। উপ-প্রধানমন্ত্রী দাতুক সেরি জাহিদ হামিদির বিরুদ্ধে দায়ের করা মানহানির মামলায় ওই দিন তার সাক্ষ্য দেয়ার কথা ছিল।
৯৯ বছর বয়সী মাহাথির ১৪ অক্টোবর সাক্ষ্য দেন এবং ১৬ ও ১৭ অক্টোবর আদালতে পুনরায় হাজির হওয়ার কথা ছিল। তবে ১৬ অক্টোবর বিচার কার্যক্রম শুরু হলে তার আইনজীবী কুয়ালালামপুর হাইকোর্টকে জানান, চিকিৎসকদের পরামর্শে মাহাথিরকে ১৪ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ১২ দিনের চিকিৎসা ছুটি দেয়া হয়েছে।
আদালতে জমা দেয়া এক চিঠিতে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ড. হিশাম মোহাম্মদ শাহরম উল্লেখ করেন, লক্ষণীয় উপশমের জন্য মাহাথিরের হাসপাতালে ভর্তি চিকিৎসা ও বুকের ফিজিওথেরাপি প্রয়োজন।
নিউ স্ট্রেইটস টাইমসের খবরে বলা হয়, মামলার বিবাদী দাতুক সেরি জাহিদের আইনজীবী বিচার স্থগিতের বিষয়ে কোনো আপত্তি জানাননি এবং মাহাথিরের অসুস্থতা স্বীকার করেছেন।
২০২২ সালের ২০ জুলাই দায়ের করা দাবির বিবৃতিতে মাহাথির অভিযোগ করেন, ২০১৭ সালের ৩০ জুলাই কেলানা জায়ায় উমনোর এক বিভাগীয় সভায় উমনোর সভাপতি জাহিদ হামিদি তার বিরুদ্ধে মানহানিকর মন্তব্য করেন।
মাহাথিরের দাবি, জাহিদ তাকে ‘ইস্কান্দার কুট্টির পুত্র মাহাথির’ বলে উল্লেখ করেন, যা ইঙ্গিত দেয় তিনি মালয় বা মুসলিম হিসেবে জন্মগ্রহণ করেননি এবং রাজনৈতিক সুবিধার জন্য নিজেকে মালয় পরিচয়ে উপস্থাপন করেছেন।
মাহাথির বলেন, এই মন্তব্য তার ব্যক্তিগত মর্যাদা ও রাজনৈতিক বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। ১৪ অক্টোবর আদালতে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে তিনি মন্তব্যটিকে ‘ব্যক্তিগত অপমান’ হিসেবে অভিহিত করেন।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে জাহিদ হামিদি মাহাথিরের বিরুদ্ধে একটি পৃথক মামলা দায়ের করেন। সেখানে তিনি অভিযোগ করেন, মাহাথির তার বিরুদ্ধে চলমান ফৌজদারি মামলাগুলো নিষ্পত্তির জন্য সহায়তা চেয়েছিলেন বলে মিথ্যা দাবি করেছেন। মামলাটি এখনো বিচারাধীন।
ড. মাহাথির ১৯৮১ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত টানা ২২ বছর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৮ সালে পাকাতান হারাপান জোটের নেতৃত্বে পুনরায় ক্ষমতায় ফিরে এসে ২২ মাস দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় তিনি বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইতিহাসে স্থান করে নেন। তবে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক টানাপোড়েনের কারণে তার সরকার দুই বছরেরও কম সময়ের মধ্যে ভেঙে পড়ে।



