বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান গত রোববার (৩১ আগস্ট) বিকেলে ও সন্ধ্যায় দু‘টি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
প্রথমে তারা যুক্তরাজ্য বিএনপির দফতর সম্পাদক (যুগ্ম সম্পাদক মর্যাদার) ড. মুজিবুর রহমানের ছেলের বিয়েতে অংশ নেন। পরে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও বাংলাদেশ ক্যাটারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএ) সাবেক প্রেসিডেন্ট পাশা খন্দকারের ছেলের বিয়েতে যোগ দিয়ে নব দম্পতিদের সাথে কুশল বিনিময় করেন এবং তাদের সুখী দাম্পত্য জীবনের জন্য শুভেচ্ছা জানান।
১৭ বছর ধরে ব্রিটেনের রাজধানী লন্ডনে বাস করছেন তারেক রহমান। বিভিন্ন সময় তিনি নানা সামাজিক ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন। কোনো কোনো সময় সাথে ছিলেন স্ত্রী জোবাইদা রহমান। কিন্তু এবারই প্রথম একই দিনে দু‘টি বিয়ের অনুষ্ঠানে একসাথে তারেক-জোবাইদা দম্পতি দু‘টি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন।
তারেক-জোবাইদা দম্পতি প্রথমে যোগ দেন যুক্তরাজ্য বিএনপির দফতর সম্পাদক (যুগ্ম সম্পাদক মর্যাদার) ড. মুজিবুর রহমান ও সাবিনা ইয়াসমিন বখতের ছেলে সাইমুর রহমানের বিয়েতে। ড. মুজিবুর রহমানের ছেলে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে ফিজিক্সে বিষয়ে গ্রেজুয়েশন করেছে আর কনে মোহাম্মদ মেহদি রমজান ও নাসরিন রমজান দম্পতির মেয়ে আছিয়া ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটির গণিতের শিক্ষার্থী। সন্ধ্যা ৬টার দিকে তারা লন্ডন থেকে অদূরে ব্রেন্টউডের ইডেন গার্ডেন ব্যাংকুইটিং হলে পৌঁছান। এই বিয়ের অনুষ্ঠানে ডিনার পরিবেশনের আগে পরিবেশন করা শুধু স্টার্টার গ্রহণ করেন তারা। কিন্তু মূল খাবার খাননি।
খাবার গ্রহণের পর তারেক-জোবাইদা দম্পতি বর ও কনের অক্সফোর্ড ও কেমব্রিজের বন্ধু-বান্ধবদের সাথে আলাপ করেন। নব দম্পতি সাইম-আছিয়াকে বিশেষ উপহার দিয়ে শুভেচ্ছা জানান তারা। এই বিয়েতে তারা ছাড়াও রাজনৈতিক, সামাজিক ও বাংলাদেশী-ব্রিটিশ কমিউনিটির অনেক মানুষ অংশ নেন।
ড. মুজিবের ছেলের বিয়েতে অংশ নেয়ার পর তারা সরাসরি চলে যান লন্ডনের ওটু এলাকায় অবস্থিত ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে। বাংলাদেশী-ব্রিটিশ বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বিসিএর সাবেক প্রেসিডেন্ট পাশা খন্দকারের ছেলের বিয়ের আয়োজন ছিল সেখানে। পাশা খন্দকার ও দিপিকা খন্দকারের ছেলে অ্যাকাউন্টেন্ট রাইদ খন্দকারের সাথে বিয়ে হয় আজিজুর রব চৌধুরী ও হালিমা চৌধুরীর মেয়ে আনিসা চৌধুরীর। ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের অরোরা বলরুমে তারেক-জোবাইদা দম্পতি সন্ধ্যা পৌনে ৮টার দিকে পৌঁছলে পাশা খন্দকার ও তার স্ত্রী তাদের অভ্যর্থনা জানান।
নব দম্পতির সাথে কুশল বিনিময়ের পর তারা ডিনার গ্রহণ করেন সবার সাথে। ডিনার শেষে তিনি দলের কয়েকজন নেতা-কর্মী নিয়ে গাড়িতে উঠতে গেলে সেখানে দেখা হয় কোনো বন্ধু বা আত্মীয়কে বিদায় জানাতে যাওয়া পাশা খন্দকারের সাথে। পাশা খন্দকার খেয়াল না করলেও তারেক রহমান হঠাৎ পেছন থেকে বলে উঠেন, ‘এই যে এখানে আমি।’ উপস্থিত সবাই তখন হেসে উঠেন। ওই সময় পাশা খন্দকার এগিয়ে এসে তারেক রহমানের সাথে হ্যান্ডশেক করলে তাকে তিনি বলেন, ‘কষ্ট দিয়ে গেলাম আপনাদের।’ তখন পাশা খন্দকার প্রতিউত্তরে বলেন, ‘না ভাই, আমরা অনেক খুশি হয়েছি।’
বাংলাদেশী-ব্রিটিশ কমিউনিটির অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ছাড়াও ওই বিয়ের অনুষ্ঠানে টাওয়ার হ্যামলেটসের নির্বাহী মেয়র লুৎফর রহমান অংশ নেন। এই অনুষ্ঠানে তারেক রহমান ও মেয়র লুৎফর রহমানের কুশল বিনিময় হয়। তারেক রহমান তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানকে মেয়রের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। পরে নব দম্পতি রাইদ-আনিসাকে তারেক-জোবাইদা দম্পতি উপহার দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

ওয়ান-ইলেভেন সরকারের সময় ২০০৭ সালের ৭ মার্চ তারেক রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্তি পেয়ে ১১ সেপ্টেম্বর চিকিৎসার জন্য সপরিবার যুক্তরাজ্যে আসেন তিনি। তখন থেকেই তিনি লন্ডনে রয়েছেন। এখানে থাকাকালে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তার মা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন তারেক রহমান। লন্ডন থেকেই তিনি বর্তমানে দল পরিচালনা করছেন।