দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষার পর অবশেষে প্রবাসী বাংলাদেশীদের ভোটদানের সুযোগ বাস্তবায়নের পথে এগোচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এরই লক্ষে মালদ্বীপে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের জন্য ভোটার নিবন্ধন এবং জাতীয় পরিচয়পত্র বা (স্মার্ট কার্ড) দেয়ার কার্যক্রম শুরু করছেন দেশটিতে সফরত নির্বাচন কমিশনের ছয় সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধিদলের কর্মকর্তারা। ফলে প্রবাসী বাংলাদেশীরা মালদ্বীপে থেকেই ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হয়ে দেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ভোটদানে সুযোগ পাচ্ছেন।
রোববার (৪ নভেম্বর) বাংলাদেশ হাইকমিশনের মিলনায়তনে এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলো দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনার ড. মো: নাজমুল ইসলাম।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ থেকে আগত নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম-সচিব ডি এম আতিকুর রহমান।
মিশনের আয়োজিত এই মতবিনিময় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন মিশনের শ্রম কাউন্সেলর মো: সোহেল পারভেজ এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়েছেন দেশটিতে বসবাসরত বিভিন্ন শ্রেণীপেশার প্রবাসী বাংলাদেশীরা।
এসময় অতিথিরা উপস্থিত অনেক প্রবাসী বাংলাদেশীদের মাঝে জাতীয় পরিচয়পত্র বা স্মার্টকার্ড বিতরণ করাসহ কিছুসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশীদের ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রমও সম্পন্ন করেন তারা।
অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশন হতে আগত টেকনিক্যাল টিমের প্রধান উইং কমান্ডার সাদ ওয়ায়েজ তানভীর জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন প্রক্রিয়ার বিস্তারিত ধাপসমূহ তুলে ধরে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং এ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি উপস্থাপন করেন।
এসময় উপস্থিত প্রবাসীরা তাদের মূল্যবান মতামত ও পরামর্শ প্রদান করেন এবং নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পর্কে নানামুখী প্রশ্ন উত্থাপন করেন। উপস্থিত প্রবাসী বাংলাদেশীদের বিভিন্ন বিষয়ে উত্থাপিত প্রশ্নের সন্তোষজনক উত্তরও প্রদান করেন নির্বাচন কমিশনের টেকনিক্যাল টিমের প্রধান উইং কমান্ডার।
অনুষ্ঠানে অন্য বক্তারা বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র বাংলাদেশের নাগরিকের একটি মৌলিক ও গুরুত্বপূর্ণ দলিল, যা নাগরিক শনাক্তকরণ থেকে শুরু করে ভোটার হওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রে অপরিহার্য। তাই মালদ্বীপে অবস্থানরত যে সকল প্রবাসীদের জাতীয় পরিচয়পত্র নাই তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধনের জন্য আহ্বান জানান তারা।
এ মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রবাসীদের পক্ষ থেকে মালদ্বীপ বিএনপির সভাপতি মো: খলিলুর রহমান বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমরা যে ভোটাধিকার ও নাগরিক পরিচয়ের স্বীকৃতি প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে আসছিলাম, আজ নির্বাচন কমিশনের এই পদক্ষেপ সেই দাবি বাস্তবায়নের এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এজন্য বাংলাদেশ হাইকমিশনসহ অন্তর্বর্তী সরকার ও নির্বাচন কমিশনারকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাইকমিশনার ডক্টর নাজমুল ইসলাম প্রবাসী বাংলাদেশীদেরকে নাগরিক হয়ে গড়ে ওঠার জন্য গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘একজন ব্যক্তির নাগরিক অধিকার ও পরিচয়ের প্রথম ধাপ হচ্ছে জাতীয় পরিচয়পত্র।’
হাইকমিশনার আরো বলেন, ‘দেশের এই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে মালদ্বীপ প্রবাসীদের এত দ্রুত ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম সেবা দেয়ায় নির্বাচন কমিশনারকে ধন্যবাদ জানান। একইসাথে প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ মিশন নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রচার-প্রচারণাসহ প্রবাসীদে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবে বলেও জানান তিনি
নির্বাচন কমিশনের এ উদ্যোগে প্রবাসী বাংলাদেশীদের ভোটাধিকার প্রয়োগে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা হতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।



