মালদ্বীপে বিদেশী শ্রমশক্তির সর্বোচ্চ অংশীদার বাংলাদেশ : জাতিসঙ্ঘের কো-অর্ডিনেটর

এ সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রবাসী বাংলাদেশীদের কল্যাণ ও তাদের অধিকার নিশ্চিত করা জাতিসঙ্ঘের অন্যতম অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচিত।

ওমর ফারুক, মালদ্বীপ
জাতিসঙ্ঘের রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর হাও ঝাংয়ের সাথে মালদ্বীপে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনারের সৌজন্য সাক্ষাৎ
জাতিসঙ্ঘের রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর হাও ঝাংয়ের সাথে মালদ্বীপে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনারের সৌজন্য সাক্ষাৎ |নয়া দিগন্ত

মালদ্বীপে নিযুক্ত জাতিসঙ্ঘের রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর (ইউএনআরসি) হাও ঝাং বলেছেন, ‘মালদ্বীপে বর্তমানে লাখের অধিক প্রবাসী বাংলাদেশী কাজ করছেন, যা দেশটির বৃহত্তম বিদেশী শ্রমশক্তির সর্বোচ্চ অংশীদার। এ সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রবাসী বাংলাদেশীদের কল্যাণ ও তাদের অধিকার নিশ্চিত করা জাতিসঙ্ঘের অন্যতম অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচিত।’

রোববার (২৩ নভেম্বর) মালদ্বীপে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনার ড. মোহাম্মদ নাজমুল ইসলামের সাথে এক সৌজন্য সাক্ষাতে তিনি এ কথা বলেন।

বৈঠকটি বাংলাদেশ মিশনের চ্যান্সারি ভবনে অত্যন্ত আন্তরিক ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানায় হাইকমিশনারের পারসোনাল অফিসার মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান।

বৈঠকে জাতিসঙ্ঘ-বাংলাদেশ-মালদ্বীপের মধ্যে বিদ্যমান সহযোগিতা আরো শক্তিশালী করার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়। বিশেষ করে মালদ্বীপে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশী কর্মীদের অধিকার, নিরাপত্তা ও কল্যাণ সুরক্ষার বিষয়ে উভয় পক্ষই গুরুত্বারোপ করেন।

এ সময় রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর হাও ঝাং মালদ্বীপে জাতিসঙ্ঘের চলমান কর্মকাণ্ড, অগ্রাধিকারমূলক ক্ষেত্র ও বিদ্যমান সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করার প্রচেষ্টার বিষয়েও বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে অবহিত করেন।

বৈঠকে হাইকমিশনার ড. মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম জাতিসঙ্ঘের অভিবাসী কর্মীদের অধিকার, স্বাস্থ্যসেবা ও অন্য মৌলিক বিষয়গুলোতে সহযোগিতামূলক অবস্থানের জন্য ইউএনআরসিকে ধন্যবাদ জানান।

এ সময় তিনি বলেন, ‘প্রবাসী বাংলাদেশীরা সহজেই মালদ্বীপের সংস্কৃতি ও ভাষার সাথে মানিয়ে নিতে সক্ষম এবং দেশটির অর্থনীতি ও উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন।

একইসাথে হাইকমিশনার মালদ্বীপের মেডিসিন গ্র্যাজুয়েটদের বাংলাদেশে ইন্টার্নশিপ করার সুযোগ-সুবিধা প্রদানের বিষয়েও আলোকপাত করেন।

এছাড়া তিনি জানান, জনস্বাস্থ্য, শ্রম অধিকার ও মানবসম্পদ উন্নয়নে বাংলাদেশ মালদ্বীপের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।

তিনি জাতিসঙ্ঘ সংস্থাগুলো, মালদ্বীপ সরকার ও বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে ত্রিপাক্ষিকভাবে শ্রম অধিকার ও জনস্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে যৌথ সেমিনার ও কর্মসূচি আয়োজনের প্রস্তাব দেন। ইউএনআরসি প্রস্তাবটিকে স্বাগত জানান এবং জানান যে তিনি আইওএমকে মালদ্বীপে অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার সুরক্ষায় আরো উন্নত প্রস্তাব উপস্থাপনের জন্য অনুরোধ করবেন।

এ সময় হাইকমিশনার আরো বলেন, নিরাপদ অভিবাসন ও কার্যকর মনিটরিং নিশ্চিত করতে (আইওএম) বাংলাদেশ ও (আইওএম) মালদ্বীপের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে, যা ভবিষ্যতে ত্রিপাক্ষিক কাঠামোকে আরো শক্তিশালী করবে।

বৈঠকে উভয়ই আন্তরিকভাবে আশা প্রকাশ করেন, জাতিসঙ্ঘ-বাংলাদেশ-মালদ্বীপের সমন্বিত উদ্যোগ ভবিষ্যতে এ অঞ্চলের শান্তি, মানবিক সুরক্ষা, অভিবাসী কল্যাণ ও টেকসই উন্নয়নকে আরো এগিয়ে নেবে।