আবারো লন্ডনে দেখা গেলো স্ত্রীসহ পাপনকে, চেহারায় হতাশার ছাপ

‘পাপনের পরিবারের অবৈধ অর্থ আওয়ামী লীগের যে নেতাকর্মীদের মাধ্যমে ব্রিটেনে হুন্ডির মাধ্যমে আনার ব্যবস্থা হচ্ছিলো, তারা অনেক অর্থ নিজেদের কাছে রেখে দেয়। হুন্ডির মাধ্যমে আনার কারণে কোনো তথ্য প্রমাণ না থাকায় পাপনের পরিবারের অর্থ খোয়া যায়। এরপরই তাদের পরিবারে নেমে আসে হতাশার ছায়া।’

মাহবুব আলী খানশূর, লন্ডন (যুক্তরাজ্য)
আবারো লন্ডনে দেখা মিললো স্ত্রীসহ পাপনের
আবারো লন্ডনে দেখা মিললো স্ত্রীসহ পাপনের |সংগৃহীত

ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলের বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি ও সেই সময়কার ক্রীড়া মন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপনকে আবারো দেখা গেছে লন্ডনে। এ বছরের মার্চে একবার তাকে সেন্ট্রাল লন্ডনের এক সুপার স্টোরে শপিং করতে দেখা গিয়েছিলো। গত বুধবার আবার তাকে তার স্ত্রীসহ দেখা গেছে মার্বেল আর্চ এলাকার এক লেবানিজ কফি শপে।

প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটের দিকে তারা ওই কফি শপে চিকেনের তৈরি লেবানিজ কিছু খাবার খাচ্ছিলেন। এ সময় তিনি নীল রংয়ের একটি সোয়েটার পরে মোবাইলে কিছু টাইপ করছিলেন এবং তার স্ত্রী কালো রংয়ের একটি জামা পরে তার সামনে উদাস দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন। তাদের পাশের টেবিলে বসে খাবার খাচ্ছিলেন একজন আফ্রিকান নারী।

গত মার্চে পাপনকে যখন লন্ডনে দেখা যায়, তার দুই মাস পর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার পরিবারের ৫ জনের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে মামলা ও নোটিশ জারি করে।

আওয়ামী লীগের এক সূত্রে জানা গেছে, পাপনের পরিবারের অবৈধ অর্থ আওয়ামী লীগের যে নেতাকর্মীদের মাধ্যমে ব্রিটেনে হুন্ডির মাধ্যমে আনার ব্যবস্থা হচ্ছিলো, তারা অনেক অর্থ নিজেদের কাছে রেখে দেয়। হুন্ডির মাধ্যমে আনার কারণে কোনো তথ্য প্রমাণ না থাকায় পাপনের পরিবারের অর্থ খোয়া যায়। এরপরই তাদের পরিবারে নেমে আসে হতাশার ছায়া। ওই সূত্র জানায়, গত মার্চে পাপনকে যেমন ফুরফুরে দেখা গেছে, এবার সেই তুলনায় ছিলেন অনেকটা বিধ্বস্ত। সেই সাথে পাপনের স্ত্রীর চেহারাতেও ছিলো হতাশার ছাপ।

কিশোরগঞ্জ-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নাজমুল হাসান পাপন ২০ কোটি ৭ লাখ ৪১ হাজার ১২ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। এছাড়াও ২০টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৭৪২ কোটি ৭৩ লাখ ৮৪ হাজার ৬৮৬.৭৪ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। তার স্ত্রী রোকসানা হাসানের বিরুদ্ধেও ১২ কোটি ১২ হাজার ২১৩ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং ১১টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৪৯ কোটি ৩২ লাখ ৫৫ হাজার ১১০.০৫ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ এর ২৭(১) ধারা, ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ এর ৪(২) ও (৩) ধারায় একটি মামলা দায়েরের সুপারিশ করা হয়েছে।

এছাড়া নাজমুল হাসান পাপনের মেয়ে রুশমিলা রহমান (অহনা), মেয়ে সুনেহরা রহমান (তন্নি), ছেলে রাফসান রহমান, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের স্ট্র্যাটেজিক ব্র্যান্ড ম্যানেজার ও পাপনের জামাতা রাকিন আল মাহমুদের অর্জিত সম্পদের উৎস যাচাইয়ের লক্ষ্যে দুদক আইনের ২৬(১) ধারায় সম্পদ বিবরণী জমাদানের জন্য নোটিশ ইস্যুর সুপারিশ করা হয়েছে।