আঞ্চলিক শান্তি ও উন্নয়নে প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ-চীন

বৃহস্পতিবার মালদ্বীপে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনার ড. মোহাম্মদ নাজমুলের সাথে দেশটিতে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত কং জিয়ানহুয়ার মধ্যে সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

ওমর ফারুক, মালদ্বীপ
দুই দেশের প্রতিনিধিদের সৌজন্য সাক্ষাৎ
দুই দেশের প্রতিনিধিদের সৌজন্য সাক্ষাৎ |নয়া দিগন্ত

আঞ্চলিক শান্তি, টেকসই উন্নয়ন ও ত্রিপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদারে বাংলাদেশ ও চীন তাদের অভিন্ন প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। বৈঠকে দুই কূটনীতিক পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে গঠনমূলক আলোচনা করেন।

বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) মালদ্বীপে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনার ড. মোহাম্মদ নাজমুলের সাথে দেশটিতে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত কং জিয়ানহুয়ার মধ্যে সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকটি অত্যন্ত আন্তরিক ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় বলে জানায় হাইকমিশনারের পারসোনাল অফিসার মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান।

জানা যায়, বৈঠকে তারা আঞ্চলিক শান্তি, অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও টেকসই উন্নয়ন জোরদারের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। একইসাথে বাংলাদেশ, চীন ও মালদ্বীপের মধ্যকার ত্রিপাক্ষিক সহযোগিতার কাঠামো আরো শক্তিশালী করার বিষয়েও উভয়ে একমত হন।

আলোচনায় মালদ্বীপে চলমান চীনা বিনিয়োগ প্রকল্পে কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের অবদান বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়। যেমন চায়না-মালদ্বীপ ফ্রেন্ডশিপ ব্রিজ, ভেলানা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর উন্নয়ন, আঞ্চলিক বিমানবন্দর নির্মাণ ও বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) সম্প্রসারণ প্রকল্পে বাংলাদেশী কর্মীদের পরিশ্রম, দক্ষতা ও নিষ্ঠার প্রশংসা করেন উভয় রাষ্ট্রদূত।

চীনের রাষ্ট্রদূত কং জিয়ানহুয়া বলেন, ‘মালদ্বীপে চীনের উন্নয়ন সহযোগিতা সবসময় ‘উইন-উইন পার্টনারশিপের নীতিতে পরিচালিত হচ্ছে, যার লক্ষ্য সবার অন্তর্ভুক্তিমূলক সমৃদ্ধি নিশ্চিত করা ‘

তিনি মালদ্বীপে অবস্থানরত বাংলাদেশী কর্মীদের অবদান ও শৃঙ্খলার প্রশংসা করে বলেন, ‘চীনা দূতাবাস তাদের কল্যাণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে সবসময় সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত।’

বৈঠকে বাংলাদেশের হাইকমিশনার ড. নাজমুল ইসলাম মালদ্বীপের উন্নয়ন সহযোগিতায় চীনের গঠনমূলক ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি ও সক্ষম দেশ হিসেবে আঞ্চলিক সহযোগিতার একটি স্বাভাবিক অংশীদার। অবকাঠামো, শিক্ষা, নীল অর্থনীতি ও মানবসম্পদ উন্নয়নে যৌথভাবে কাজের সম্ভাবনা অনেক ‘

উভয় কূটনীতিক মালদ্বীপের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার ও টেকসই উন্নয়নের সুযোগ নিয়েও মতবিনিময় করেন।এ সময় উভয়ে বিশ্বাস প্রকাশ করেন যে, তিন দেশের সমন্বিত প্রচেষ্টা বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও সামাজিক-অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।

চীনের রাষ্ট্রদূত কং জিয়ানহুয়া বলেন, ‘মালদ্বীপে অবস্থিত চীনা দূতাবাস সবসময় বাংলাদেশের জন্য সহযোগিতার দ্বার উন্মুক্ত রাখবে।’

এ সময় হাইকমিশনার ড. নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশও প্রস্তুত রয়েছে এমন যেকোনো সহযোগিতায় অংশ নিতে, যেখানে তিন দেশের জনগণ সম্মিলিতভাবে উপকৃত হতে পারে।’

বৈঠকে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক বন্ধন পুনরুজ্জীবনের ওপরও গুরুত্বারোপ করা হয়। এদিকে পারস্পরিক আস্থা ও ঐতিহাসিক সংযোগের এ ধারা বজায় থাকলে আঞ্চলিক শান্তি, সংলাপ ও টেকসই উন্নয়ন আরো শক্তিশালী হবে বলে মত প্রকাশ করেন দুই কূটনীতিক।