উট কোরবানি করে প্রথম ইতিহাস গড়ল মিশরস্থ বাংলাদেশী ছাত্রসমাজ

‘এই কাজটি শুধু কোরবানি নয়, এটি হলো ঐক্য, ত্যাগ এবং দ্বীনদারির প্রতীক। বাংলাদেশী ছাত্রদের এই উদ্যোগ আমাদের মুগ্ধ করেছে।’

এলামী মো: কাউসার, কায়রো (মিশর)
মিশরস্থ বাংলাদেশী ছাত্রসমাজের উট কোরবানি
মিশরস্থ বাংলাদেশী ছাত্রসমাজের উট কোরবানি |নয়া দিগন্ত

উট কোরবানি করে প্রথম ইতিহাস গড়েছে মিশরস্থ বাংলাদেশী ছাত্রসমাজ। দীর্ঘ দিনের প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতার পর এবার ঈদুল আজহায় মিশরের রাজধানী কায়রোতে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ স্টুডেন্ট অরগানাইজেশনের নেতৃত্বে বাঙালী ছাত্ররা যৌথভাবে একটি উট কোরবানি করেছে। ধর্মীয় আবেগ, ঐক্য ও তাকওয়ার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে এটি প্রশংসিত হয়েছে প্রবাসী সমাজে।

শুক্রবার (৬ জুন) ঈদের দিন সকালে কায়রোর নাসর সিটি এলাকায় এই কোরবানির আয়োজন করা হয়।

এতে আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত বাংলাদেশী ছাত্ররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। সংগঠিত এ উদ্যোগে প্রবাসী ব্যবসায়ী ও ছাত্রদের সহযোগিতায় অসংখ্য ছাত্র মিলে একটি সুস্থ-সবল উট কোরবানি করেন, যা ইসলামী শরিয়তের নিয়ম মেনেই সম্পন্ন হয়।

বাংলাদেশ স্টুডেন্ট অরগানাইজেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘আমরা চেয়েছি বিদেশের মাটিতে আমাদের ঈদের আনন্দ, ত্যাগ ও তাকওয়ার বার্তা ছড়িয়ে দিতে। উট কোরবানির মাধ্যমে নবীজি সা:-এর সুন্নাতকে বাস্তবে অনুসরণ করাই ছিল আমাদের মূল উদ্দেশ্য।’

কোরবানির গোশত স্থানীয় গরীব মুসলমান, ছাত্র, শ্রমজীবী ও প্রবাসীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। এছাড়া কিছু অংশ নিজ নিজ মেসেও ভাগ করে নেয়া হয়েছে, যা ঈদের আনন্দে ভ্রাতৃত্বের পরিপূর্ণতা এনে দেয়।

আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সিনিয়র প্রফেসর বলেন, ‘এই কাজটি শুধু কোরবানি নয়, এটি হলো ঐক্য, ত্যাগ এবং দ্বীনদারির প্রতীক। বাংলাদেশী ছাত্রদের এই উদ্যোগ আমাদের মুগ্ধ করেছে।’

উল্লেখ্য, এর আগে বাংলাদেশী ছাত্রদের মধ্যে গরু ও ছাগল কোরবানির নজির থাকলেও, উট কোরবানি এই প্রথম। এটি মিশরে অবস্থানরত বাংলাদেশী ছাত্রদের ঐতিহাসিক উদ্যোগ হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে।

এই মহৎ কাজ প্রমাণ করে দিয়েছে—ঐক্যবদ্ধভাবে চেষ্টা করলে বিদেশের মাটিতেও আমরা ইসলামের সৌন্দর্য ও কোরবানির মূল শিক্ষা বাস্তবায়ন করতে পারি।