বাসস চেয়ারম্যান

ডিজিটাল যুগে সংবাদ উপস্থাপনায় সাংবাদিকদের আরো দায়িত্বশীল হতে হবে

‘ডিজিটাল মাধ্যম, সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব এবং সাম্প্রতিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সংযোজনে মৌলিক সংবাদের ভবিষ্যৎ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা বলা কঠিন। তবে সস্তা সংবাদ তৈরির প্রতিযোগিতায় না জড়িয়ে সঠিক ও মানসম্পন্ন সংবাদ উপস্থাপনে সাংবাদিকদের আরো দায়িত্বশীল ও সতর্ক হতে হবে।’

মাহবুব আলী খানশূর, লন্ডন (যুক্তরাজ্য)
লন্ডনে ‘ফিউচার অব নিউজ’ শীর্ষক বিশেষ আলোচনা সভায় বাসস চেয়ারম্যান আনোয়ার আল দীন
লন্ডনে ‘ফিউচার অব নিউজ’ শীর্ষক বিশেষ আলোচনা সভায় বাসস চেয়ারম্যান আনোয়ার আল দীন |নয়া দিগন্ত

বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) চেয়ারম্যান ও দৈনিক ইত্তেফাকের যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ার আল দীন বলেছেন, ‘এক সময় ছিল পত্রপত্রিকার জয়জয়কার। তারপর এলো টেলিভিশন নিউজ দৃশ্য ও শব্দের এক নতুন দুনিয়া। এই দু’টি মাধ্যম আজও টিকে আছে, তবে সময়ের বিবর্তনে শুরু হয়েছে ডিজিটাল মিডিয়ার বিপ্লব। প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই ডিজিটাল মাধ্যমে সংবাদ উপস্থাপনায় সাংবাদিকদের আরো দায়িত্বশীল ও সতর্ক হতে হবে।

শুক্রবার (১০ অক্টোবর) লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের আয়োজনে ‘ফিউচার অব নিউজ’ শীর্ষক বিশেষ আলোচনা সভায় মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সাংবাদিক আনোয়ার আল দীন বলেন, ‘ডিজিটাল মাধ্যম, সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব এবং সাম্প্রতিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সংযোজনে মৌলিক সংবাদের ভবিষ্যৎ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা বলা কঠিন। তবে সস্তা সংবাদ তৈরির প্রতিযোগিতায় না জড়িয়ে সঠিক ও মানসম্পন্ন সংবাদ উপস্থাপনে সাংবাদিকদের আরো দায়িত্বশীল ও সতর্ক হতে হবে। পাঠক বা দর্শক তথ্যের এই বন্যার মধ্যেও আসল সংবাদটি চিনে নিতে পারেন।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মীরা মিডিয়ার পরিবর্তনশীল বাস্তবতা, নাগরিক সাংবাদিকতার উত্থান এবং সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব নিয়ে প্রাণবন্ত আলোচনা ও প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন।

ক্লাব সভাপতি মুহাম্মদ জুবায়েরের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক তাইসির মাহমুদের সঞ্চালনায় এ সভায় আনোয়ার আল দীন আরো বলেন, ‘প্রযুক্তি যেমন সংবাদকে আরো দ্রুত ও সহজলভ্য করেছে, তেমনি এটি তথ্য যাচাই ও সত্যতা নিশ্চিত করার নতুন চ্যালেঞ্জও তৈরি করেছে। ভবিষ্যতের সংবাদ হবে আরো বেশি ডেটা-নির্ভর ও দ্রুততর। তবে এখন অনুসন্ধান বা গবেষণা অনেক সহজ হয়েছে-অনলাইনে সামান্য অনুসন্ধানেই পাওয়া যায় দুনিয়ার তাবৎ তথ্য।’

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন ক্লাবের ফাউন্ডিং প্রেসিডেন্ট মুহিব চৌধুরী, সাবেক প্রেসিডেন্ট বেলাল আহমেদ ও এমদাদুল হক চৌধুরী, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট রহমত আলী, কবি ও সাংবাদিক সারওয়ার ই আলম, সাংবাদিক আবদুল মুনিম জাহিদ ক্যারল এবং নিউজ প্রেজেন্টার রুপি আমিন।

অনুষ্ঠানে আনোয়ার আল দীনকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয় এবং লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে একটি সম্মাননা ক্রেস্ট উপহার দেয়া হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ক্লাবের ট্রেজারার সালেহ আহমদ, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি রেজাউল করিম মৃধা, অর্গানাইজিং সেক্রেটারি আকরামুল হোসাইন, মিডিয়া সেক্রেটারি আব্দুল হান্নান, ইভেন্ট সেক্রেটারি রুপি আমিন, নির্বাহী সদস্য জাকির হোসাইন কয়েসসহ ক্লাবের অন্য কর্মকর্তারা।

সভাপতি মুহাম্মদ জুবায়ের বলেন, ‘বর্তমানে মিডিয়ায় নতুন এক বিবর্তন চলছে। অনেক সময় দেখা যায়, প্রচলিত সংবাদমাধ্যমকে ছাড়িয়ে প্রভাব বিস্তার করছে কোনো নাগরিকের একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট। ইনফ্লুয়েন্সাররা তৈরি করছেন সংবাদ, আর সেই সোশ্যাল পোস্ট থেকেই জন্ম নিচ্ছে সবচেয়ে আলোচিত খবর। তবে উচ্চমানসম্পন্ন ও অনুসন্ধানভিত্তিক সংবাদ সবসময়ই পাঠকের আস্থা অর্জন করবে।’

তিনি বলেন, ‘অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় অনন্য অবদান রাখা অ্যাওয়ার্ডজয়ী সাংবাদিক আনোয়ার আল দীনকে নিয়ে এই বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করতে পেরে আমরা গর্বিত। তথ্যনির্ভর এই আলোচনায় অংশ নিয়ে আমরা সবাই অনেক কিছু জানতে পেরেছি।’

সাধারণ সম্পাদক তাইসির মাহমুদ বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের শীর্ষ সাংবাদিকদের সম্মান জানাতে চাই, তবে সেটি যেন হয় গতানুগতিকতার বাইরে একটি তাৎপর্যপূর্ণ ও শিক্ষণীয় আয়োজন। সেদিকে আমরা গুরুত্ব দেই।’