বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) চেয়ারম্যান আনোয়ার আলদীন বলেছেন, ‘ফুটবল আমাদের ঐতিহ্য। ফুটবলের সাথে মিশে আছে আমাদের আবেগ-নস্টালজিক ভালোবাসা, নিবিড় আবিষ্টতা। কালের পরিক্রমায় এই জনপ্রিয় খেলাকে অপাংক্তেয় করে দেয়া হয়েছে। মাতামাতি হচ্ছে ক্রিকেট নিয়ে।
বাংলাদেশে তরুণ প্রজন্মের নজর ক্রিকেটের দিকে। ফুটবল ক্রমশ নানা কারণে কৌলিন্য হারাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১০ হাজার কিলোমিটার দূরে এসে বাংলাদেশের জনপ্রিয় খেলাটি উপভোগ করলাম। এক সময়ের জনপ্রিয় মোহামেডানকে পেলাম। অন্য দলগুলোর নৈপুণ্য দেখলাম মুগ্ধ হয়ে। আমরা চাইবো আগামীতে এই ফুটবল তার হারানো গৌরব ফিরে পাবে এবং ব্রিটেনের মতো বাংলাদেশেও ফুটবল সবার কাছে জনপ্রিয় হবে ।’
ব্রিটেনের বাংলা গণমাধ্যম কর্মীদের বৃহত্তম সংগঠন লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে গত রোববার প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বাসসের চেয়ারম্যান আনোয়ার আলদীন। পূর্ব লন্ডনের স্টেপনি গ্রিণ মাঠে ৫ অক্টোবর দিনব্যাপী খেলায় ছিল উচ্ছ্বস আর আনন্দ। এবারের টুর্নামেন্টে অংশ নেয় ছয়টি জনপ্রিয় দল। তবে এই টিমগুলোর অধীনে বিভিন্ন মিডিয়া হাউসের শতাধিক ক্লাব মেম্বার এতে যুক্ত ছিলেন।
টিম গুলো হলো
বাংলা কাগজ, ওয়ান বাংলা, চ্যানেল এস, মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব, দেশ-পত্রিকা ইউনাইটেড এবং ইউকে বাংলা লাইভ ইউনাইটেড। রোমাঞ্চকর ফাইনালে মুখোমুখি হয় ওয়ান বাংলা ফ্রেন্ডস ইউনাইটেড এবং চ্যানেল এস। নির্ধারিত সময়ে গোল না হলে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে, আর সেখানে ওয়ান বাংলা ৪-৩ গোলে জয় পেয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ছিনিয়ে নেয় চ্যাম্পিয়ন ট্রফি।
ক্লাব সভাপতি মুহাম্মদ জুবায়েরের সভাপতিত্বে ও জেনারেল সেক্রেটারি তাইসির মাহমুদের পরিচালনায় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন লন্ডন সফররত বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) চেয়ারম্যান ও দৈনিক ইত্তেফাকের যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ার আলদীন।
স্বাগত বক্তৃতা করেন আয়োজন কমিটির কো-অর্ডিনেটর ক্লাবের ইভেন্টস সেক্রেটারি রুপি আমিন। উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সাংবাদিক উদয় শংকর দাশ ও শেখ মোজাম্মেল হোসেন কামাল আহমদ, খেলার স্পন্সর ওয়ার্ক পারমিট ক্লাউডের সিইও ব্যারিস্টার লুৎফর রহমান। অপর স্পন্সর অল সিজন ফুড।
লন্ডন স্পোটিফের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত এই টুর্নামেন্টে যৌথভাবে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন বাহার উদ্দিন এবং সাহিদুর রহমান সুহেল। জাকির হোসেন কয়েস পেয়েছেন সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার। আর ফাইনালের সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন মোহাম্মদ সোবহান। খেলা শেষে বিজয়ী ও অংশগ্রহণকারী দলের হাতে পুরস্কার তুলে দেন লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের নেতৃবৃন্দ ও অতিথিরা।
এসময় লন্ডন স্পোটিফের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের সেক্রেটারি মহিবুর রহমান, ট্রেজারার আতিকুর রহমান, ডিরেক্টর ও ক্লাব ম্যানেজার মাহি মিকদাদ ও ডিরেক্টর ফরহাদ উদ্দিন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, এই টুর্নামেন্ট শুধু খেলাধুলা নয়, এটি ব্রিটেনের বাংলা গণমাধ্যম কর্মীদের বন্ধুত্ব, ঐক্য ও সহযোগিতার প্রতীক।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে আরো অংশ নেন প্রেসক্লাবের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ব্যারিস্টার তারেক চৌধুরী, ট্রেজারার সালেহ আহমেদ, অ্যাসিসটেন্ট সেক্রেটারি রেজাউল করিম মৃধা, অ্যাসিসটেন্ট ট্রেজারার ইব্রাহিম খলিল, অর্গানাইজিং অ্যান্ড ট্রেনিং সেক্রেটারি মুহাম্মদ আকরামুল হোসাইন ও মিডিয়া অ্যান্ড আইটি সেক্রেটারি মুহাম্মদ আব্দুল হান্নান।
প্রতি বছর যুক্তরাজ্যে কর্মরত বাংলা মিডিয়ার সাংবাদিকদের এই সংগঠন আয়োজন করে আনন্দঘন এই ফুটবল টুর্নামেন্ট, যা এখন প্রবাসী কমিউনিটির অন্যতম সেরা ক্রীড়া উৎসবে পরিণত হয়েছে। খেলাধুলার মধ্য দিয়ে এই ঐক্য, আনন্দ ও বন্ধুত্ব থাকুক, প্রবাসে বাংলার মুখ উজ্জ্বল করুক এসব উদ্যোগ- এমনটাই প্রত্যাশা সবার।