স্বাক্ষর ভোগান্তিতে পাবিপ্রবি ছাত্রীরা

স্বাক্ষরের জন্য নির্দিষ্ট সময় না পাওয়া, প্রভোস্টের অনুপস্থিতি ও অফিস সহকারীদের অসহযোগিতাপূর্ণ আচরণে যেন শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের মাত্রা পৌঁছেছে চরমে।

বি এম মিকাইল হোসাইন, পাবিপ্রবি

Location :

Pabna
সংগৃহীত

সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার ফর্মে হল প্রভোস্টের স্বাক্ষর নিতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীরা। স্বাক্ষরের জন্য নির্দিষ্ট সময় না পাওয়া, প্রভোস্টের অনুপস্থিতি ও অফিস সহকারীদের অসহযোগিতাপূর্ণ আচরণে যেন শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের মাত্রা পৌঁছেছে চরমে।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীদের জন্য আবাসিক হল রয়েছে মাত্র একটি। আসন স্বল্পতার কারণে অধিকাংশ ছাত্রীকে থাকতে হয় হলের বাইরের মেস কিংবা ভাড়া করা বাড়িতে। ফলে হল প্রভোস্টের এক স্বাক্ষরের জন্য ৭-৮ কিলোমিটার দূরত্ব পাড়ি দিয়ে দু’বার আসতে হয় ক্যাম্পাসে। এতে পরীক্ষার আগ মুহূর্তে সময়ের সাথে সাথে অর্থনৈতিক, শারীরিক ও মানসিক প্রেশারে পড়তে হয় বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

ছাত্রীদের অভিযোগ, ফর্মে স্বাক্ষর পেতে হলে তা আগের দিন হল অফিসে জমা দিতে হয় ফর্ম। পরদিন আবারো হলে গিয়ে স্বাক্ষর করা ফর্ম সংগ্রহ করতে হয়। এতে একটি ফর্মের জন্য দু’বার ক্যাম্পাসে যেতে হয়। ফলে ক্লাস, অ্যাসাইনমেন্ট কিংবা পরীক্ষার প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত ঘটে প্রতিনিয়ত।

সাবিকুন নাহার নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘হল প্রভোস্টের স্বাক্ষর নিতে গেলে ফর্ম আগের দিন জমা দিতে বলা হয়, যা খুব ঝামেলাপূর্ণ। আর অফিসে থাকা স্টাফদের ব্যবহার খুবই অসহযোগিতাপূর্ণ। আমাদের যেন বাইরের কেউ মনে করেন তারা। খুবই অপমানজনক মনে হয়।’

আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘সকালে গেলে বলা হয় দুপুরে আসতে, দুপুরে গেলে বলা হয় কাল আসতে। মাঝখান থেকে আমাদের সময়, টাকা-পয়সা আর মানসিক স্বস্তি সবই নষ্ট হচ্ছে।’

শুধু সময়ের জটিলতা নয় হল অফিসে কর্মরত স্টাফদের ব্যবহার নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ছাত্রীরা।

তারা জানান, ‘কোনো তথ্য জানতে চাইলে অসন্তোষজনক সুরে উত্তর দেয়া হয়। এমনকি স্ট্যাপলার ও কলমের মতো প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ব্যবহার করতে চাইলেও হল থেকে বাধা দেয়া হয়। এর থেকে লজ্জার আর কি হতে পারে।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, এ সমস্যার সমাধান করতে হলের একটি নির্দিষ্ট টাইম স্লট এবং কার্যকর নোটিশ বোর্ড বা অনলাইন সিস্টেম চালু করা উচিত। যেখানে ফর্ম জমা ও সংগ্রহের সময় ও পদ্ধতি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে।

এদিকে হলের এসব সমস্যার বিষয়ে কথা বললে নানা সময় হল প্রভোস্ট ডেকে নিয়ে কারণ জানতে চান বলেও অভিযোগ করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী।

এ বিষয়ে ছাত্রী হলের প্রভোস্ট ড. জিন্নাত রেহানা বলেন, ‘আগে নিয়ম ছিল সকাল বা দুপুরে ফর্ম জমা দিলে পরদিন ফর্ম দেয়া হতো। তবে আমি চেষ্টা করছি যেদিন ফর্ম জমা পড়ছে সেদিনই স্বাক্ষর করে দেয়ার। তবে আমরা যারা দায়িত্বে আছি তারা নিজেরাও ক্লাস নিতে হয়। তাই কখনো কখনো সময়মতো স্বাক্ষর দেয়া কঠিন হয়ে পড়ে।’

তিনি আরো বলেন, ‘সহকারী প্রভোস্টরাও স্বাক্ষর করে থাকেন। তবে কিছু ফর্ম বাদ পড়ে গেলে সেটা ইচ্ছাকৃত নয়। এমন অনিয়ম স্বাভাবিকভাবেই ঘটে যেতে পারে।’