পেশাজীবী লীগ নামে গোপনে তৎপরতা চালানোর অভিযোগ উঠেছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘পেশাজীবী লীগ নোবিপ্রবি’ নামে একটি মেসেঞ্জার গ্রুপের কথোপকথন ফাঁস হলে বিষয়টি সামনে আসে।
এদিকে ক্যাম্পাসে সকল ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ার পরেও তাদের এমন গোপনীয় কর্মকাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সচেতন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ফেসবুক পেজ থেকে ৫৮ সেকেন্ডের একটি কথোপকথনের ভিডিও ফাঁস হয়।
ফাঁস হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজেদের মধ্যে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। একইসাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রো-ভিসি ও ট্রেজারারসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের কার্যক্রম সম্পর্কেও তথ্য আদান-প্রদান করছেন তারা।
জানা গেছে, ওই গ্রুপের অ্যাডমিন মেজবাহ উদ্দিন পলাশ। তিনি আওয়ামী শাসনামলে নোবিপ্রবি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছিলেন। এছাড়া নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের জেলা পর্যায়ের পদধারী নেতা ছিলেন তিনি। পলাশ ছাড়াও ওই গ্রুপে তৎকালীন আওয়ামীপন্থী বেশিভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারীর ফেসবুক আইডি দেখা গেছে সেখানে।
এদিকে ভিডিওতে গ্রুপের তথ্য ফাঁস হওয়ায় অ্যাডমিন মেজবাহ উদ্দিন পলাশ সর্বশেষ মেসেজে লেখেন, ‘এ গ্রুপের এডমিন আমি ও আমাদের তথ্য যারা ছাত্রদের কাছে দিয়ে আমাদের হয়রানি করাচ্ছেন, তাদের ওপর আল্লাহর গজব পড়বে।’
এ বিষয়ে পলাশের কাছে গ্রুপের অস্তিত্বের কথা জানতে চাইলে তিনি স্বীকার করে বলেন, ‘গ্রুপটি অনেক আগের। কিন্তু সম্প্রতি গ্রুপের কার্যক্রম দৃষ্টিগোচর হওয়ায় আপনার কাছে মনে হচ্ছে, গ্রুপটি বর্তমানে পরিচালিত হচ্ছে।’
এ বিষয়ে নোবিপ্রবি ভিসি ড. মুহাম্মদ ইসমাইল বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি অবগত না। অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
উল্লেখ্য, গত বছরের ৯ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ডের এক জরুরি সভায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ক্যাম্পাসে সকল ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করে প্রশাসন। পরে এ নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
এদিকে সম্প্রতি আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে সরকার। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন মামলাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে এবং সন্ত্রাসবিরোধী আইনে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।