গোবিপ্রবি প্রতিনিধি
গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (গোবিপ্রবি) প্রক্টরের বিরুদ্ধে সার্টিফিকেট সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র আটকে রাখার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছে ফার্মেসি বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আতিক ফয়সাল।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘সনদপত্র উত্তোলনের জন্য প্রয়োজনীয় সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ২৭-০৮-২৫ তারিখে আমি প্রক্টর অফিসে ফরম জমা দেই। একই সাথে আমার দুই সহপাঠীর ফরমও জমা ছিল। পরে দেখি তাদের ফরমে স্বাক্ষর হলেও আমার ফরমে স্বাক্ষর হয়নি। অফিস থেকে জানানো হয়, প্রক্টর স্যার নিজে আমার সাথে কথা বলবেন। আমি বারবার প্রক্টর স্যারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেছি, অফিসে গিয়েছি, অপেক্ষা করেছি, এমনকি হোয়াটঅ্যাপে এ বার্তাও পাঠিয়েছি। কিন্তু তিনি কখনো সরাসরি কারণ জানাননি কিংবা উত্তরও দেননি। মিটিংয়ে আছেন, মিটিং শেষে কথা বলবেন বলেও তিনি আর কথা বলেননি। মেসেজ সিন করেও কোনো উত্তর দেননি। ফলে আমার ফরম দিনের পর দিন প্রক্টরের কাছে আটকে আছে এবং পরীক্ষার সার্টিফিকেট তুলতে পারিনি। আমার একটি চাকরির জন্য সিভি ও সনদের কপি পাঠানোর কথা থাকলেও আমি তা পাঠাতে পারিনি। রেজাল্ট আটকে রাখার মতো নির্মম, নিষ্ঠুর ও মানবতাবিরোধী বৈষম্যমূলক আচরণ করেছেন তিনি।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টার মাধ্যমে ভাইস চ্যান্সেলর বরাবর আবেদন করলেও এখনো পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ বা ব্যাখ্যা পাইনি। আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর থেকে আমি কখনো কোনো শৃঙ্খলাভঙ্গ বা অবাস্থিত কর্মকাণ্ডে যুক্ত হইনি যার জন্য আমাকে ইতোমধ্যে শাস্তির সম্মুখীন হতে হয়েছে।’
এমনকি শৃঙ্খলা কমিটির একাধিক সদস্য আমাকে জানিয়েছেন, সর্বশেষ অনুষ্ঠিত শৃঙ্খলা বোর্ডেও আমার বিষয়ে কোনো শাস্তি গ্রহণের সিদ্ধান্তও হয়নি। এমতাবস্থায়, কোনো অবস্থাতেই আমার সনদ আটকে রাখা বা প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে স্বাক্ষর না করার ন্যূনতম কোনো কারণ নেই।
এখানে আরো বলে রাখা ভালো, যদি সর্বশেষ শৃঙ্খলা বোর্ডে কিংবা যেকোনো সময়ে আমার বিষয়ে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েও থাকে, তা পূর্ববর্তী কিছুর সাথে অ্যাপ্লাই করার ন্যূনতম কোনো সুযোগ নেই। অর্থাৎ, আমাকে যদি আজকেও বহিষ্কার করা হয়, তা পরবর্তী সেমিস্টার থেকে কার্যকর হবে। কিন্তু পূর্ববর্তী পরীক্ষার সনদে সেটি অ্যাপ্লাই করার সুযোগ নেই। এমনকি ছাত্রত্ব বাতিলের মতো বিষয়ও যদি আসে, সে ক্ষেত্রে সেই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবার এক সেকেন্ড আগ মুহূর্ত পর্যন্ত আইনগতভাবে আমার সনদ আটকে রাখার সুযোগ নেই।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা তার সার্টিফিকেট আটকে রাখার জন্য কাউকে দায়ী করেন কিনা জানতে চাইলে, তিনি বলেন, ‘প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক থাকা অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে সোচ্চার ছিলাম এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা বিরোধিতা করেছিল তাদের বিরুদ্ধে যাওয়ায় এমন আশঙ্কা করছি।’
এ বিষয়ে প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. আরিফুজ্জামান রাজীব বলেন, ‘তার বিষয়ে শৃঙ্খলা বোর্ডে সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাকে শোকজ করে শাস্তির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে অনেক আগেই। এ বিষয়ে রেজিস্ট্রারকে চিঠি দেয়া হয়েছে স্বাক্ষর করার জন্য। চিঠি ইস্যু হলে বিষয়টি জানতে পারবা।’
শোকজ দেয়ার আগে কারোর সার্টিফিকেট তোলার কাগজ আটকে রাখা যায় কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এই বিষয়ে শৃঙ্খলা বোর্ডে অনেক আগেই সিদ্ধান্ত হয়েছে। রেজিস্ট্রার তাকে চিঠি দিতে দেরি করেছে। যখন তার কাগজ আমার কাছে রয়েছে তখন তার উচিত ছিল আমার সাথে যোগাযোগ করা। কিন্তু সে আমার সাথে যোগাযোগ না করেই সংবাদ সম্মেলন করেছে। যেহেতু আগেই সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং শোকজ দিয়েই তার শাস্তির বিষয়ে জানানোর কথা। তাকে না জানানো এটা রেজিস্ট্রারের ব্যর্থতা।’