রাকসুর নির্বাচনে ৬৯.৮৩ শতাংশ ভোট কাস্টিং

বৃহস্পতিবার বিকেলে এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. নিজাম উদ্দিন।

রাবি প্রতিনিধি

Location :

Rajshahi
উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেন শিক্ষার্থীরা
উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেন শিক্ষার্থীরা |নয়া দিগন্ত

নানা জল্পনা-কল্পনার মধ্য দিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। পরে সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুরু হয়েছে ভোট গণনা। এদিকে মোট ৬৯.৮৩ শতাংশ ভোট কাস্টিং হয়েছে বলে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) বিকেলে এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. নিজাম উদ্দিন।

এদিকে সকাল থেকে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ চললেও দুপুরের পর পরিস্থিতি কিছুটা উত্তপ্ত হয়ে উঠে। দুপুরের পর ভোটকেন্দ্রে পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলে ব্রিফিং করেছেন ছাত্রশিবিরের ভিপি প্রার্থী। একইসাথে অভিযোগ তুলেছেন ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থীও। একে অপরের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন তারা।

ছাত্রশিবিরের ভিপি প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, ‘ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ক্যাম্পাসে বসে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছেন। তিনি বলছেন, জামায়াত অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিচ্ছে বা বাইরে থেকে লোক ঢুকাচ্ছে। অথচ তিনি নিজেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নন এবং ভোটারও নন। তিনি গুজব ছড়িয়ে রাকসুর পরিবেশ অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন।’

চিরকুট নিয়ে প্রবেশে বাধা দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল চিরকুট নিয়ে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করা যাবে। কিন্তু বাস্তবে একাধিক স্থানে আমাদের সমর্থকদের প্রবেশে বাধা দেয়া হয়েছে। এছাড়া ১০০ গজের ভেতরে কারো যাওয়ার অনুমতি ছিল না অথচ ছাত্রদল সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম প্যানেলের অনেকে সেখানে ঘুরে বেড়িয়েছে এবং চিরকুট বিতরণ করেছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘ছাত্রদল নিয়ম তোয়াক্কা না করে খালেদা জিয়া হল ও হবিবুর রহমান হলের পাশে বুথ স্থাপন করেছে। অথচ বুথ স্থাপনের কোনো অনুমতি ছিল না। বহিরাগত ছাত্রদল, যুবদল ও বিএনপির অনেকেই ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেছে। তাদের মধ্যে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকসহ অনেকে রয়েছেন। এরা কেউ ভোটার বা প্রার্থী নন তবুও তারা ভোটকেন্দ্রে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।‘

শিবিরের ভিপি প্রার্থী বলেন, ‘গতকাল বুধবার নিয়ম ভেঙে দেয়ালে লেখনী করা হয়েছে, কিন্তু প্রশাসন এ বিষয়ে নীরব ভূমিকা পালন করছে। যারা নির্বাচনের নিয়মনীতি ভঙ্গ করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। চার বার নির্বাচন পিছিয়ে অবশেষে আজ ভোট হচ্ছে। আমি সবাইকে আহ্বান জানাই—আপনারা যেন যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচন করেন।’

অন্যদিকে ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী শেখ নূর উদ্দীন আবির বলেন, ‘বিএনসিসি ও রোভার স্কাউটের কিছু সদস্য নির্বাচনী কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাজশ করে শিবির-সমর্থিত প্রার্থী ও ভোটারদের প্রবেশের সুযোগ দিচ্ছেন। অথচ আমি নিজে ভিপি প্রার্থী হয়েও ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারিনি। এটি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। একটি বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনে যদি এমন পক্ষপাতমূলক আচরণ হয় তবে শিক্ষার্থীদের গণতন্ত্রে আস্থা নষ্ট হবে।’

তবে নির্বাচন ঘিরে যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় ভোটকেন্দ্রগুলোতে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন ছিল। পুলিশের পাশাপাশি আনসার সদস্যদেরও মাঠে দেখা গেছে।

সার্বিক বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘অত্যন্ত চমৎকার পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভোট কাস্ট হয়েছে ৬৯.৮৩ শতাংশ। শিক্ষার্থীরা উচ্ছ্বসিত হয়ে ভোট প্রয়োগ করেছে। ভোট গণনার কাজ শুরু হয়েছে। আশা করছি আমরা খুব দ্রুত ফলাফল দিতে পারব।’

ছাত্রদলের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ছাত্রদল যে অভিযোগ করেছে সেটা অবান্তর ও ভিত্তিহীন। আমি নিজে সেখানে উপস্থিত ছিলাম। কোনোরকম ভোট বন্ধ ছিল না এবং কারচুপির কোনো সুযোগ নেই।‘