মিটফোর্ডে যুবদল কর্তৃক ব্যবসায়ীকে পাথর মেরে হত্যার প্রতিবাদে পাবিপ্রবিতে বিক্ষোভ

‘আমরা এর আগে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড দেখেছিলাম ২০১২ সালে বিশ্বজিৎ হত্যার ঘটনায়। দিবালোকে প্রকাশ্যে ছাত্রলীগ কুপিয়ে মেরেছিল বিশ্বজিৎকে। এবার সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি করল যুবদল। প্রকাশ্য দিবালোকে মিটফোর্ডে পাথর মেরে এক ব্যবসায়ীকে হত্যা করা হয়েছে।’

পাবিপ্রবি প্রতিনিধি

Location :

Pabna
মিটফোর্ডে যুবদল কর্তৃক ব্যবসায়ীকে পাথর মেরে হত্যার প্রতিবাদে পাবিপ্রবিতে বিক্ষোভ
মিটফোর্ডে যুবদল কর্তৃক ব্যবসায়ীকে পাথর মেরে হত্যার প্রতিবাদে পাবিপ্রবিতে বিক্ষোভ |নয়া দিগন্ত

পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ(মিটফোর্ড) হাসপাতালের ৩ নম্বর ফটকের সামনে ব্যবসায়ী সোহাগকে পিটিয়ে ও পাথর মেরে নৃশংসভাবে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

শুক্রবার (১১ জুলাই) রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হল ১ এর প্রধান ফটকের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনারে এসে প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা ‘আবু সাইদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘চাঁদাবাজের ঠিকানা এই বাংলায় হবে’, ‘আবার হলে শোষণ, শুরু হবে একশান’, ‘যুবদলের চাঁদাবাজরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘লেগেছে, লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

বিক্ষোভ-পরবর্তী প্রতিবাদ সমাবেশে ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী মো: মিরাজুল ইসলাম বলেন,‘আমরা এর আগে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড দেখেছিলাম ২০১২ সালে বিশ্বজিৎ হত্যার ঘটনায়। দিবালোকে প্রকাশ্যে ছাত্রলীগ কুপিয়ে মেরেছিল বিশ্বজিৎকে। এবার সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি করল যুবদল। প্রকাশ্য দিবালোকে মিটফোর্ডে পাথর মেরে এক ব্যবসায়ীকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা যে নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছি, এই হত্যাকাণ্ড সেই স্বপ্নে শঙ্কার ছায়া ফেলছে। আবার যদি ফ্যাসিবাদ জন্ম নেয়ার চেষ্টা করে, তবে আমরা ছাত্রসমাজ যেভাবে শেখ হাসিনাকে পতন ঘটিয়েছি, ঠিক সেভাবেই নতুন ফ্যাসিবাদকেও প্রতিহত করব।’

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মজনু আলম বিক্ষোভে উপস্থিত সকল শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন,‘আমরা যুবদল কর্তৃক নির্মম হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানাতে এখানে উপস্থিত হয়েছি। আমরা প্রতিনিয়ত লক্ষ্য করছি, বিএনপির অঙ্গসংগঠন ছাত্রদল, যুবদল, এমনকি বিএনপির মূল সংগঠন থেকেও তাদের নেতাকর্মীরা বিভিন্নভাবে অন্তর্দ্বন্দ্বে ও অন্তঃকলহে লিপ্ত আছে। তারা নিজেদের দলের লোকদেরই হত্যা করছে। যারা নিজেরাই নিজেদের দলের নেতাকর্মীদের হাত-পায়ের রগ কেটে দেয়, অথচ তারা মিথ্যা অপবাদ দেয় যে, ভিন্ন একটি সংগঠনের রগ কাটার মূল নায়ক।’

এটা ইতোমধ্যেই প্রমাণিত হয়েছে যে, এই সংগঠনের নিজেদের নেতাকর্মীদের হাতেই তাদের নিজেদের জনশক্তি নিরাপদ নয়। আমরা দেশবাসী আশঙ্কায় আছি, এই সংগঠন যদি কোনোভাবে ক্ষমতাসীন হয়, তাহলে দেশের মানুষ অবশ্যই এক নব্য ফ্যাসিস্ট শাসনের শিকার হবে।

আমরা আজকের এই জমায়েত থেকে ঘোষণা দিচ্ছি—আবারো যদি কোনো স্বৈরাচার ভিন্নরূপে ফিরে আসে, আমরা আবারো বুকের তাজা রক্ত দিয়ে হলেও সেই স্বৈরাচারকে রুখে দেব।’

ইলেকট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিক অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং(ইইসিই)বিভাগের শিক্ষার্থী রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা দেখেছি ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর কীভাবে লগি-বৈঠার মাধ্যমে মানুষকে নৃশংসভাবে হত্যা করে দেশে ফ্যাসিবাদ কায়েম করা হয়েছিল। আমরা আর সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি দেখতে চাই না। বাংলার ছাত্রসমাজ আজ সোচ্চার। সোহাগ ভাইকে যারা হত্যা করেছে, তারা যে দলেরই হোক, তাদের দ্রুত বিচার করে বাংলার মাটিতে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।’