গণহত্যার পক্ষ নিয়ে বরখাস্ত ইবির দুই শিক্ষককে বাঁচাতে মানববন্ধন

জুলাই আন্দোলনের সময় ৪ আগস্ট শেখ হাসিনার প্রতি সমর্থন জানিয়ে এবং আন্দোলনকে নৈরাজ্য দাবি করে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় শাপলা ফোরাম। এ কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকতে দেখা যায় বহিষ্কৃত ওই দুই শিক্ষককে।

তাজমুল জায়িম, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

Location :

Kushtia
৪ আগস্ট শেখ হাসিনার প্রতি সমর্থন জানিয়ে এবং আন্দোলনকে নৈরাজ্য দাবি করে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ মিছিলে দেখা যায় ওই শিক্ষকদের।
৪ আগস্ট শেখ হাসিনার প্রতি সমর্থন জানিয়ে এবং আন্দোলনকে নৈরাজ্য দাবি করে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ মিছিলে দেখা যায় ওই শিক্ষকদের। |নয়া দিগন্ত

গণহত্যার পক্ষ নেয়ায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ১৯ শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭১তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। একইসাথে ১১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ৩৩ জন শিক্ষার্থীকেও বহিষ্কার করা হয়। এদিকে এ ইস্যুতে বরখাস্ত হওয়া আইন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. শাহাজাহান মন্ডল ও অধ্যাপক ড. রেবা মন্ডলের শাস্তি বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন চত্বরে এ মানববন্ধন করেন আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

জানা যায়, জুলাই আন্দোলনের সময় ৪ আগস্ট শেখ হাসিনার প্রতি সমর্থন জানিয়ে এবং আন্দোলনকে নৈরাজ্য দাবি করে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় শাপলা ফোরাম। এ কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকতে দেখা যায় বহিষ্কৃত ওই দুই শিক্ষককে।

শিক্ষার্থীরা বলেন, শুধু গত বছরের ৪ আগস্ট একটা ভিডিও ক্লিপ দিয়ে জাস্টিফাই করলে হবে না। আমরা রাজনৈতিকভাবে চিন্তা করছি না, অ্যাকাডেমিক এক্সিল্যান্সি নিয়ে কথা বলছি।

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী হৃদয় বলেন, ‘তদন্ত কমিটি কতটুকু নিরপেক্ষভাবে কাজ করছে সেই বিষয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কেনো না ক্যাম্পাসে এখনো আওয়ামী মতাদর্শের অনেক শিক্ষক টিকে আছেন। শিক্ষক রাজনীতির জন্য যদি এ শিক্ষক ও কর্মকর্তারা বহিষ্কার হতে পারেন তাহলে বাকিরা পড়ে রইল কেন?’

মির্জা শাহরিয়ার নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘শাহজাহান মন্ডল ও রেবা মন্ডল সবসময়ই শিক্ষার্থীবান্ধব শিক্ষক হিসেবে পরিচিত। আমাদের বিভাগে অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে। জুলাই আন্দোলনের সময় আমি ১২ দিন জেলে ছিলাম। তখন আমাদের বিভাগের তৎকালীন চেয়ারম্যান রেবা মন্ডল ও শিক্ষক শাহজাহান মন্ডল আমাকে সহযোগিতা করেছেন। আমরা চাই আমাদের শিক্ষকদের শাস্তি পুনর্বিবেচনা করা হোক।’

এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. শাহজাহান মন্ডল বলেন, ‘আমাদের শোকজে বলা হলো মিছিল থেকে অশ্লীল গালিগালাজ ও মারধরের হুমকি দিয়েছি। অথচ আমরা ওই মিছিল বা র‌্যালিতে ছিলাম না। আমরা শোকজের জবাবেও বলেছি আমরা সেই মিছিলে ছিলাম না। শোকজের জবাব দেয়ার পরেও এ বহিষ্কারাদেশ! তাহলে কী প্রশাসন তাদের স্ট্যান্ডে থাকতে পেরেছে?’

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বিরোধী ও বিতর্কিত ভূমিকার জন্য শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে আমরা আরো একটি কমিটি গঠন করব। সেই কমিটি বিবেচনা করবে কাকে কতটুকু শাস্তি দেয়া যায়। তবে ফ্যাসিস্টের প্রশ্নে কোনো ছাড় হবে না।’