ইবিতে নবীনদের সাথে সাক্ষাতে গিয়ে বিএনপিপন্থী শিক্ষকের সাথে শিবিরের বাগ্বিতণ্ডা

ওই শিক্ষক ক্লাসে আসার পর শিবির নেতাদের দেখে রেগে গিয়ে ক্লাস থেকে বের হয়ে যেতে বললে একপর্যায়ে বাগ্বিতণ্ডা হয়।

তাজমুল জায়িম, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

Location :

Kushtia
নয়া দিগন্ত

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) লোকপ্রশাসন বিভাগে নবীন শিক্ষার্থীদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাতে গিয়ে বিএনপিপন্থী শিক্ষকের সাথে শিবির নেতাদের বাগ্বিতণ্ডার ঘটনা ঘটেছে।

বুধবার (১৩ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে মীর মশাররফ হোসেন অ্যাকাডেমিক ভবনে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের নবীনদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও উপহারসামগ্রী প্রদানের ধারাবাহিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বুধবার দুপুর ১২টার দিকে লোকপ্রশাসন বিভাগে যান শিবিরের নেতাকর্মীরা। এ সময় শিবিরের ইবি শাখা সেক্রেটারি ইউসুব আলীর নেতৃত্বে প্রায় ১০ জন নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। পরে তারা বিভাগের সভাপতির অনুমতি নিয়ে নবীনদের সাথে কথা বলতে গেলে ওই সময়ের শিডিউল ক্লাস নিতে আসেন বিভাগের অধ্যাপক ড. এ কে এম মতিনুর রহমান। ড. মতিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের আহ্বায়ক এবং ইউট্যাবের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি।

আরো জানা যায়, তিনি ক্লাসে আসার পর শিবির নেতাদের দেখে রেগে গিয়ে ক্লাস থেকে বের হয়ে যেতে বললে একপর্যায়ে বাগ্বিতণ্ডা হয়। পরে শাখা শিবির সভাপতি মাহমুদুল হাসান এলে বিভাগের সভাপতি ও প্রক্টরের উপস্থিতিতে ড. মতিনের সাথে আলোচনা করে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, শিবিরের কিছু নেতাকর্মী আমাদের ক্লাস রুমে এসে তাদের সংগঠন সম্পর্কে কথাবার্তা বলছিলেন। এ সময় বিভাগের স্যার ক্লাসে প্রবেশ করে উনারা কারা এবং কেন এখানে এসেছে সেটা জিজ্ঞাসা করেন। তখন শিবিরের নেতাকর্মীরা তাদের পরিচয় দিয়ে বিভাগের সভাপতির অনুমতি নিয়ে কথা বলতে আসার বিষয়ে জানান। তখন ওই শিক্ষক তাদের বলেন, এখন আমার শিডিউল ক্লাস; আমার ক্লাসের সময়ে অন্য কেউ অনুমতি দিতে পারে না। আমি তোমাদের এখানে থাকার অনুমতি দিব না, তোমরা চলে যাও। এ সময় সংগঠনটির সেক্রেটারি শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা পর্ব শেষ করে বিদায় নেয়ার কথা জানান। তবে ওই শিক্ষক তা করতে না দিয়ে রেগে যান। এবং একপর্যায়ে নেতাকর্মীদের এক্ষুনি রুম থেকে বের হয়ে যাওয়ার কথা বলেন। বিষয়টি নিয়ে পড়ে শিক্ষকের সাথে তাদের বাগ্বিতণ্ডা হয়।

ছাত্রশিবিরের ইবি শাখার দফতর সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম রাফি বলেন, ‘আমরা জানতাম না ক্লাস ছিল। বিভাগের সভাপতির অনুমতিক্রমে আমরা গিয়েছিলাম। কিছুক্ষণ পর ড. মতিনুর রহমান ক্লাসে এসে রেগে কথা বলেন এবং আমাদের কোনো কথাই শুনতে রাজি হননি।’

এদিকে শিবিরের আরেক নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘গতকাল ছাত্রদলের নেতারা ক্লাসে এসে ৪০ মিনিট কথা বলে গেছে। তাদের কিছু বলা হয়নি কিন্তু আমরা পাঁচ মিনিট কথা বলারই সময় দেয়া হয়নি। রাজনৈতিক মতাদর্শের পার্থক্য থাকলেও একজন সিনিয়র শিক্ষকের কাছ থেকে এমন ব্যবহার আশা করিনি।‘

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি ইউসুব আলী বলেন, ‘স্যারের সাথে একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। পরে আলোচনার মাধ্যমে তা সমাধান হয়েছে।‘

বিভাগের অধ্যাপক ও সাদা দলের আহ্বায়ক ড. মতিনুর রহমান বলেন, ‘শিডিউল অনুযায়ী বেলা ১২টার দিকে আমার ক্লাস ছিল। আমি শ্রেণিকক্ষে যাওয়ার পর তাদের দেখে না চিনতে পেরে পরিচয় জানতে চেয়েছি। তবে তারা সভাপতির অনুমতি নিয়ে এসেছেন শুনে বলেছি, আমার ক্লাসের সময়ে সভাপতি অনুমতি দিতে পারে না।’

বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. ফকরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি জানতাম না ওই সময়টাতে কারোর ক্লাস আছে। বিষয়টা একটু মিস কমিউনিকেশন হয়েছে। পরে সবাইকে নিয়ে বসেছিলাম। শান্তিপূর্ণভাবে বিষয়টি মীমাংসা করে দেয়া হয়েছে।’