বিশ্বসেরা গবেষকের তালিকায় যবিপ্রবির ৯ শিক্ষক

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ শিক্ষক স্ট্যানফোর্ড ও এলসেভিয়ারের তালিকায় বিশ্বের শীর্ষ ২ শতাংশ গবেষকের মধ্যে স্থান পেয়েছেন, যা দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ।

যবিপ্রবি প্রতিনিধি

Location :

Jashore
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি)
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) |নয়া দিগন্ত

বিশ্বসেরা দুই শতাংশ গবেষকের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) নয় শিক্ষক। দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে যা সর্বোচ্চ। এছাড়া দেশের সকল সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে নবম স্থানে রয়েছে যবিপ্রবি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সবচেয়ে বেশি ২৩ জন শিক্ষক এ তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন।

শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান এলসেভিয়ের যৌথভাবে এ তালিকা প্রকাশ করে। স্কোপাস ইনডেক্সড আর্টিকেলকে ভিত্তি হিসেবে ধরে ২২টি বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্র এবং ১৭৬টি উপক্ষেত্রে শ্রেণিবদ্ধ করে দু’টি ক্যাটাগরিতে

বিভিন্ন দেশের শ্রেষ্ঠ গবেষকদের এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

এ তালিকায় পুরো পেশাগত জীবনের ওপর মূল্যায়ন করে (ক্যারিয়ার লং ক্যাটাগরিত) জায়গা পেয়েছেন চারজন শিক্ষক। তারা হলেন, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. ইঞ্জিনিয়ার ইমরান খান, কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো: জাভেদ হোসেন খান, পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং (পিএমই) বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো: আমিনুল ইসলাম এবং জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো: মশিয়ার রহমান।

বিগত এক বছরের গবেষণা কর্মের ওপর মূল্যায়নে তারা ছাড়াও (সিঙ্গেল ইয়ার ক্যাটাগরিত) জায়গা করে নেয়া যবিপ্রবির অন্য শিক্ষকরা হলেন, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন মো: আমজাদ হোসেন, একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো: বিপ্লব হোসেন, গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মো: হাফিজ উদ্দিন, পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. সাইবুর রহমান মোল্লা ও মো: রাইসুল ইসলাম। তবে মো: রাইসুল ইসলামের বিভাগ বা পরিচয় চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি।

পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, শিক্ষকদের আনুপাতিক হারে হিসাব করলে যবিপ্রবির প্রায় ৩৭ জন শিক্ষক থেকে একজন এ তালিকায় জায়গা পেয়েছেন, যেখানে ঢাবি থেকে পেয়েছেন প্রায় ৮৭ জনে একজন এবং দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রায় ৭১ জন শিক্ষকের মধ্যে একজন এ তালিকায় স্থান পেয়েছেন। যবিপ্রবি থেকে নয়জন বিশ্বসেরা দু’শতাংশ গবেষকেরর তালিকায় স্থান করে নেয়াকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এগিয়ে যাওয়ারই দৃষ্টান্ত বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

এ তালিকায় টানা ছয় বছর স্থান পাওয়া যবিপ্রবির ইইই বিভাগের চেয়ারম্যান ড. ইঞ্জিনিয়ার ইমরান খান বলেন, ‘পরপর টানা ছয় বছর বিশ্বের শীর্ষ দু’শতাংশ গবেষকের তালিকায় স্থান করে নিতে পারা নিঃসন্দেহে খুশির বিষয়, আমিও এর ব্যতিক্রম নই। আমার এই সাফল্যের পেছনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যাদের অবদান রয়েছে সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই; বিশেষ করে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ তথা যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে। গত পাঁচ বছর ওই তালিকায় যবিপ্রবি হতে আমিসহ মাত্র তিনজন ছিলাম, এখন সেই সংখ্যা বেড়েছে দেখে ভালো লাগছে। আশা করি, আগামী বছর যবিপ্রবি হতে আরো অনেকেই এ তালিকায় যুক্ত হবেন। গবেষণা ও প্রবন্ধ প্রকাশনাকে আরো কিভাবে তরান্বিত করা যায় এই বিষয়ে যবিপ্রবি প্রশাসন বিভিন্ন যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করে পাইওনিয়ার হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’

যবিপ্রবি ভিসি অধ্যাপক ড. মো: আব্দুল মজিদ বলেন, ‘বিশ্বসেরা দু’শতাংশ বিজ্ঞানীর তালিকায় আমাদের নয়জন শিক্ষক স্থান পাওয়ায় আমি অত্যন্ত গর্বিত ও আনন্দিত। এটি যবিপ্রবির গবেষণা সক্ষমতার একটি বড় স্বীকৃতি। এ অর্জন বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবে। গবেষণাকে আরো উৎসাহিত করতে আমরা ভবিষ্যতেও প্রয়োজনীয় সকল সহায়তা অব্যাহত রাখব। আমি সংশ্লিষ্ট সকল শিক্ষককে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।’

উল্লেখ্য, এলসেভিয়ার প্রতিবছর দুই হাজারের বেশি জার্নাল প্রকাশ করে। প্রকাশিত জার্নালে নিবন্ধের সংখ্যা দু’লাখ পঞ্চাশ হাজারের বেশি এবং এর আর্কাইভে ৭০ লাখের অধিক প্রকাশনা রয়েছে।