প্রকৌশলীদের তিন দফা দাবি আদায়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন বিভিন্ন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। প্রকৌশল খাতের সমস্যা সমাধানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কমিটি গঠন করলেও দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ার পরও কার্যকর কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় পুনরায় রাজপথে নেমেছে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (৮ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রুয়েটের সেন্ট্রাল লাইব্রেরির সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে ক্যাম্পাস জুড়ে প্রদক্ষিণ করে তালাইমারি মোড়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।
এ সময় আন্দোলনকারীরা জানান, প্রকৌশলীদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে আসছে কিন্তু সরকার একাধিকবার আশ্বাস দিয়েও বাস্তব কোনো সমাধান দেয়নি। গত ২৭ আগস্ট রাজধানীতে প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের লংমার্চ চলাকালে পুলিশের হামলার মুখেও দাবি আদায়ে আন্দোলনকারীরা পিছু হটেনি। চাপের মুখে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রথমে উপদেষ্টা ফাওজুল কবিরকে প্রধান করে একটি ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করে। কমিটি এক মাসের মধ্যে সুপারিশ বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেয়। পরে ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নতুন ছয় সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়।
সমাবেশে আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করে, নতুন কমিটির কোনো দৃশ্যমান কার্যক্রম বা অগ্রগতি নেই। সরকার নির্বাচনকে সামনে রেখে ইচ্ছাকৃতভাবে সময়ক্ষেপণ করছে এবং প্রকৌশলীদের দাবি উপেক্ষা করে পরিস্থিতি লঘু করার কৌশল নিচ্ছে। এ অবস্থায় আগের ওয়ার্কিং কমিটির সুপারিশ প্রকাশের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে এবং প্রয়োজনে কঠোর থেকে কঠোরতর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেন আন্দোলনকারীরা।
সমাবেশে পুরকৌশল (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং) বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শিহাব হোসেন বলেন, ‘প্রকৌশলীদের দীর্ঘদিনের দাবি নিয়ে সরকার টালবাহানা করছে। অযৌক্তিক বৈষম্য দূর করতে এবং পেশাগত মর্যাদা রক্ষায় দাবিগুলো দ্রুত কার্যকর করতে হবে।’
প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের ৩ দফা দাবি— ইঞ্জিনিয়ারিং নবম গ্রেডে সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদে প্রবেশের জন্য সবাইকে পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে এবং বিএসসি ডিগ্রিধারী হতে হবে। কোটার মাধ্যমে কোনো পদোন্নতি নয়, এমনকি অন্য নামে সমমান পদ তৈরি করেও পদোন্নতি দেয়া যাবে না, টেকনিক্যাল দশম গ্রেডে উপ-সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদ সবার জন্য উন্মুক্ত করতে হবে। অর্থাৎ ডিপ্লোমা ও বিএসসি উভয় ডিগ্রিধারীকে পরীক্ষার সুযোগ দিতে হবে, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি ডিগ্রি ছাড়া কেউ ইঞ্জিনিয়ার পদবি ব্যবহার করতে পারবে না এই মর্মে আইন পাস করে গেজেট প্রকাশ করতে হবে।



