রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ও হল ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা নিয়ে লঙ্কা কাণ্ড ঘটছে ক্যাম্পাসে। শীতকালীন ছুটির মধ্যে ঘোষিত ২৯ ডিসেম্বরের তারিখকে হঠকারী ও তামাশার তারিখ দাবি করে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের মুখে শীতকালীন ছুটি এক মাস পিছিয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ। তবুও শিক্ষার্থীরা ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা দাবিতে অনড় রয়েছেন।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জরুরি অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠক শেষে শীতকালীন ছুটি পরিবর্তনের সিদ্ধান্তের কথা জানান ভিসি ড. শওকাত আলী।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে ২৯ ডিসেম্বর শীতকালীন ছুটির মধ্যেই ব্রাকসু নির্বাচনের তারিখ দিয়ে তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এ ঘোষণাকে হঠকারী এবং শিক্ষার্থীদের সাথে তামাশা দাবি করে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।
তাদের অভিযোগ, পূর্ব নির্ধারিত ২১ থেকে ৩১ ডিসেম্বর শীতকালীন ছুটি থাকলেও শিক্ষার্থীদের সাথে তামাশা করতেই বন্ধের মধ্যে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাত থেকেই বুধবার দিনভর নির্বাচনের তারিখ পুনর্নির্ধারণের জন্য মিছিল সমাবেশ ও সংবাদ সম্মেলন করছে শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনের মুখে বুধবার জরুরি অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠক করে কর্তৃপক্ষ। পরে সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে ভিসি শওকাত আলী বলেন, নির্বাচন কমিশনের দেয়া ব্রাকসু নির্বাচনের তারিখ ২৯ ডিসেম্বর। এ সময়ে শীতকালীন ছুটি থাকায় শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন। এ কারণে জরুরি অ্যাকাডেমি কাউন্সিলের বৈঠকে আমরা শীতকালীন ছুটি এক মাস পিছিয়ে দিয়েছে। শীতকালীন ছুটি ২১ ডিসেম্বরের পরিবর্তে পুনর্নির্ধারিত তারিখ ১৮ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে এবং ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে। একইসাথে ১৭ জানুয়ারি প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠানের তারিখ ঘোষণা করেন তিনি। এছাড়া ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনের তারিখও বহাল রাখা হয়।
তবে শিক্ষার্থীরা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই ব্রাকসু নির্বাচন তারিখ ঘোষণার দাবিতে এখনো অনড় রয়েছেন।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক শামসুর রহমান সুমন বলেন, ‘শীতকালীন ছুটি পেছানো হলেও ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন, পরের দিন শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি। এছাড়া প্রথম সপ্তাহে যদি জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। তাহলে নির্বাচনটি অনিশ্চিত হয়ে যাবে। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা না হলে লাগাতার আন্দোলন করবে শিক্ষার্থীরা।’
অপর সমন্বয়ক আহমেদুল আলবির বলেন, ‘বাক্স নির্বাচনকে নিয়ে প্রশাসন ও ইলেকশন কমিশন শিক্ষার্থীদের আবেগের সাথে প্রতারণা করছে। একদিকে শীতকালীন ছুটির মধ্যেই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে হঠকারিতার আশ্রয় নিয়েছে। অন্যদিকে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠকে শীতকালীন ছুটি পেছালেও নির্বাচনের তারিখ আগানোর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দিতে ইলেকশন কমিশনকে সুপারিশ করেনি। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয়, পরিকল্পিতভাবে যাতে নির্বাচন না হয় প্রশাসন সেদিকেই এগোচ্ছে। আমরা অবিলম্বে ডিসেম্বরের ৭ তারিখের আগে বাক্স নির্বাচন চাই। সেটি যদি না করা হয় শহীদ আবু সাঈদের ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের তামাশা আমরা সহ্য করব না।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. মো: শাহজামান জানান, শিক্ষার্থীরা তফসিল প্রত্যাখ্যান করার যে বিষয়টি এসেছে। সেই বিষয়ে আমি এককভাবে সিদ্ধান্ত দিতে পারব না। তাদের চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ইসি বসে পর্যালোচনা করে ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিয়ে তফশিল ঘোষণা করেছি। যে সময়ের মধ্যে আমাদের করা সম্ভব, সেই পর্যন্ত মিনিমাম সময়ের মধ্যেই আমরা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এর বাইরে গেলে তো আমরা সেটা করতে পারব না। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে কী পদক্ষেপ নিব সেটা বসে সিদ্ধান্ত নিব।’



