বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) ওয়েবসাইটে শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা-সংক্রান্ত কোনো তথ্য নেই। ‘মেডিক্যাল অফিস’ বা ‘মেডিক্যাল সেন্টার’ নামে আলাদা কোনো সেকশন না থাকায় দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক, সেবার ধরন কিংবা জরুরি যোগাযোগের তথ্য অনলাইনে পাওয়া যায় না। বিশেষত নতুন শিক্ষার্থী ও জরুরি পরিস্থিতিতে এটি বড় ধরনের সমস্যা তৈরি করছে।
দেশের বেশিভাগ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ‘মেডিক্যাল সেন্টার’ নামে পৃথক সেকশন থাকে, যেখানে চিকিৎসক, সহকারী কর্মী, সেবা সময়সূচি ও প্রাথমিক চিকিৎসা সুবিধার বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, রুয়েট, কুয়েট ও চুয়েটসহ অনেক প্রতিষ্ঠানে এ তথ্য সহজলভ্য হলেও বুটেক্সে তা অনুপস্থিত। শুধু ওয়েবসাইটে তথ্যের অভাবই নয়, সেবার মান নিয়েও শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম ও ওষুধের অভাবে অনেক সময় পাশের প্রাইভেট মেডিক্যালে গিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হয়, যা ব্যয়বহুল।
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মারুফ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে ফুটবল খেলতে গিয়ে গুরুতরভাবে আহত হই। পায়ে কাচ ঢুকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। মেডিক্যাল সেন্টারে গিয়ে শুধু ড্রেসিং করানো ছাড়া কোনো চিকিৎসা পাইনি। একজন শিক্ষার্থীর জন্য এটি হতাশাজনক।’
ফেব্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল কাইয়ুম বলেন, ‘জরুরি সেবার প্রয়োজন হলে ওয়েবসাইটে মেডিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্টের নম্বর খুঁজে পাইনি। অথচ নিয়ম অনুযায়ী ২৪ ঘণ্টা দায়িত্বে থাকা একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট থাকার কথা।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল অফিসার ডা. পারভীন সুলতানা বলেন, ‘বর্তমানে একজন অফিসার, একজন সহকারী অফিসার ও একজন স্টাফ রয়েছেন, যা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। কোনো সাইকিয়াট্রিস্ট, প্যাথলজিস্ট, ডেন্টিস্ট বা নার্স নেই। পরীক্ষা-নিরীক্ষার সরঞ্জাম, বিশুদ্ধ পানি, কম্পিউটার ও প্রিন্টারসহ প্রয়োজনীয় সুবিধারও অভাব রয়েছে।’
তিনি আরো জানান, ‘সীমাবদ্ধতার কারণে শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। প্রশাসনকে জানানো হলেও স্থায়ী সমাধান এখনো আসেনি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন পরিচালক ড. শেখ মো: মামুন কবীর বলেন, ‘ওয়েবসাইট হালনাগাদের কাজ চলছে। আইসিটি সেকশনের সঙ্গে সমন্বয় করে মেডিক্যাল অফিসের জন্য আলাদা লে-আউট যুক্ত করা হবে।’
তিনি আরো জানান, ‘মেডিক্যাল সেন্টারের জন্য বরাদ্দকৃত কম্পিউটার ও প্রিন্টার দ্রুত হস্তান্তর করা হবে। ইউজিসি কর্তৃক বরাদ্দকৃত সীমিত বাজেট উন্নয়ন কার্যক্রমে প্রভাব ফেলছে। প্রয়োজনীয় আবেদন পাঠানো হয়েছে, অনুমোদন পেলে আগামী অর্থবছরে সমস্যা সমাধানে কাজ শুরু হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে চিকিৎসা সংক্রান্ত তথ্যের অভাব ও সেবার সীমাবদ্ধতা শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসেবায় বড় দুর্বলতা হিসেবে দেখা দিয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, ওয়েবসাইটে মেডিক্যাল অফিস সংযুক্ত করা এবং লোকবল ও সরঞ্জাম বৃদ্ধির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা অন্তত প্রাথমিক চিকিৎসা ও তথ্যসেবা সহজে পাবে।