হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) ওয়ার্ল্ড ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি ডে-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষ্যে ইন্সটিটিউশনাল কোয়ালিটি এস্যুরেন্স সেল (আইকিউএসি) এর আয়োজনে শিক্ষকদের জন্য “ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি রাইটস ইন বাংলাদেশ এডুকেশন সেক্টর” (বাংলাদেশের শিক্ষা ক্ষেত্রে বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের অধিকার) শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালা ও সচেতনতামূলক র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এর অংশ হিসেবে বুধবার (২৫ জুন) সকালে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য প্রফেসর ড. মাছুমা হাবিব ও হাবিপ্রবির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. এনামউল্যা'র নেতৃত্বে সকল শিক্ষকদের অংশগ্রহণে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে।
দ্বিতীয় পর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়াম-২ এ আয়োজিত ওই কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউজিসি’র সদস্য প্রফেসর ড. মাছুমা হাবিব। এতে সভাপতিত্ব করেন হাবিপ্রবির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. এনামউল্যা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রো ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. শফিকুল ইসলাম সিকদার, ট্রেজারার প্রফেসর ড. এম. জাহাঙ্গীর কবির এবং ইউজিসির এসপিকিউএ বিভাগের পরিচালক ড. দুর্গা রানী সরকার। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন আইকিউএসি’র পরিচালক কৃষিবিদ প্রফেসর ড. সাইফুল হুদা, সঞ্চালনা করেন ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের সহকারী পরিচালক প্রফেসর ড. মো. নিজাম উদ্দিন। টেকনিক্যাল সেশনে রিসোর্স পার্সন হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউজিসি’র এসপিকিউএ বিভাগের উপ-পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ মনির উল্লাহ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউজিসি’র সদস্য প্রফেসর ড. মাছুমা হাবিব বলেন, আমি সম্মানিত বোধ করছি আমাকে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য। দিনাজপুরের সন্তান, এখানকার মাটি ও মানুষের সাথে আমার নাড়ীর সম্পর্ক, তাই এখানে আসতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত।
তিনি বলেন, সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় দেখভাল করাই ইউজিসির দায়িত্ব, তারপরও আমি বলবো, অবহেলিত জনপদের এই বিশ্ববিদ্যালয়টিকে এগিয়ে নেয়ার জন্য আমার ব্যক্তিগত প্রচেষ্ঠা ও কমিশনের পক্ষ থেকে যতোটুকু সম্ভব সহায়তা করা হবে। বর্তমান সময়ে আমরা ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি রাইটস এর কথা বলছি, এর কারণ হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মেধাসত্ত্ব ও সৃজনশীলতাকে সুরক্ষিত করা। কুষ্টিয়ার তিলের খাজা, জামদানী কিংবা ফজলি আম, যেটার কথাই বলেন, আরও অনেক জিনিস রয়েছে যেগুলোকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা হচ্ছে। সেরকম আপনার রিসার্চ বা ইনোভেটিভ আইডিয়াগুলো যে আপনার ছিল, কয়দিন পরে সেটা আপনি হারিয়ে ফেলবেন। দেশে বা বিদেশে অন্য কেউ হয়তো এটার দাবি করে বসবে, এজন্য এটিকে আমাদের সুরক্ষা প্রদান করতে হবে। এই প্রক্রিয়াকে সহজ করার জন্য ইউজিসি প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৫০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষকদের অংশগ্রহণে আমাদের কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। হাবিপ্রবি’র শিক্ষকদের গবেষণা ও প্যাটেন্ট এ অনেক এগিয়ে যাওয়ায় তিনি উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে হাবিপ্রবির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. এনামউল্যা বলেন, আজকের অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি এই এলাকারই গর্বিত সন্তান, তাঁকে পেয়ে আজ আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। হাবিপ্রবি তাঁর নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের মতোই, তাই আশা করি তিঁনি এর সার্বিক উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখবেন।
তিনি বলেন, হাবিপ্রবি দীর্ঘদিন থেকে অবহেলিত, বঞ্চিত ও বৈষম্যের স্বীকার। ব্যক্তিগতভাবে অনেক মানুষ বৈষম্যের স্বীকার হতে পারে কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো এই ভার্সিটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বৈষম্যের স্বীকার। আশ্চর্যের বিষয় হলো দীর্ঘদিন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান কোন উন্নয়ন প্রজেক্ট নেই, অথচ একই সময়ে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশাল উন্নয়ন বাজেট দেয়া হয়েছে।
এ সময় ভিসি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংকট, জায়গা সংকট, শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলের সংকটসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন। এ সময় ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি রাইটস এর উপর অনুষ্ঠিত কুইজ এ বিজয়ী শিক্ষার্থীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ও সভাপতি।